আগাছার মতো ফলে আছে
মুরারি সিংহ

খ্রিস্ট-পূর্ব আকাশের অদৃশ্য-বোঁটা থেকে খসে পড়ে 
দৃশ্যমান হল অন্ধবাউলের একতারা 

একতারা তো নয় যেন শূন্য-রিফিলের 
রাত সাড়ে-বারোটা বেয়ে 
নৈরঞ্জনা-ভক্ত এক তালশাঁসের লম্বা-ডুবসাঁতার 

নীল-পেন্সিলে আঁকা চই-চই চোখও যেন 
তালতলার মানচিত্রে বসে 
গালে-টোলপড়া পায়ের হাতছানির জন্য 
আর্দ্র ব্রতকথায় মাখানো খই ভাজতে চাইছে 
                         অনর্গল 

ওই সজনেখালির ঢাকনা-খোলা হুহুন্নাকে 
এক-থালা ধারালো আঁশবটি গিলিয়ে দিতে পারলেই 
ও-ননদীর ঝর্নাতলায় লতিয়ে উঠবে 
               আবহমান বুদ্ধপূর্ণিমার গল্প
কিংবা ধরো, দুষ্ট অ্যান্টেনার কানের লতিতে 
           খানিকটা নিশিডাক ঘষে দিলে,  
তখন জীবনানন্দ ভোরে, হয়ত কার্তিকের কুয়াশায় ভেসে 
আরো একটা পাতিকাক হয়ে বাড়ি ফিরে এল 
                 কোনো ফুড়ুৎ-ফুড়ুৎ পার্টিকর্মী  

তারপর, চিতল-হরিণের দরবারে কিছু ডালা-কুলো হল 
তারপর, ডাকনামের চারপাশে কিছু গৃহপালিত-সাবানের ফেনা হল 
তারপর, ভাতঘুমের চন্দ্রবিন্দু থেকে ঝরে পড়ল
                        কিছু হারমোনিয়াম-রংযের মুগ্ধতা 
এইভাবে চারদেয়ালের সেবাযত্নে বেশ ভালোভাবেই লেখা হতে থাকল 
                               সাদাপাতার রোজনামচা 

তখন একদিন শীতকাল থেকে নিজেকে খুলে নিয়
                    কিছু দৃষ্টি হামাগুড়ি দিল
                                    জানলার ওপাশে 
সেখানে বহুদিন-না-খোলা ডাকবাক্সের পাশে
ফুটোছাতা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে 
যে হৃদপিণ্ড, তাকে দেখে কী মনে হবে, 
              সেও কি পরিপাটি বাগানের উপাচারে 
                        লকলকে আগাছার মতো ফলে আছে

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন