"...Let mortals beware of words, for with words we lie ,
can say peace when we mean war... " (Auden 1971: 40)
এক দাঁড়ে দুটো টিয়েপাখি
জগত আর আমি মুখোমুখি বসে আছি।
সারাদিন এ ওকে ঠুকরেছি,
সারারাত ঘুমে ঢুলতে ঢুলতে এ ওর নাকে
নাক ঘষেছি।
ফ্যারাও আমেনহোটেপের আমল
ধ্রুবতারা যেখানে ছিল
সেই জায়গা থেকে চার ইঞ্চি পশ্চিমে সরে গেছে ।
সত্য এইভাবে সরে গিয়েও সত্য থাকে।
১/২ গোপাল মল্লিক লেনের কর্তাগিন্নি
এই সহজ কথাটি বোঝেন না বলে যাবতীয় দুঃখ ভোগ করেন।
দ্যাখো শুক,সত্যকে যত তুমি নমনীয় রাখবে
পৃথিবী তোমার কাছে লাল লঙ্কাটির মতো তত মিষ্টি লাগবে ।
গতবছর অ্যাফ্রিকান নীড়ে আমি যে ডিম পেড়েছিলাম
তাকে পিতার মতো উষ্ণতা নিয়ে তা দাও—
ডিম ফুটে ছানা বেরুলে দেখবে সে তোমার নিজেরই বাচ্চা ।
সারারাত ধরে দিনের ময়লা অন্ধকার থিতিয়ে নেমেছে তলায়—
আকাশ এখন টলটল করছে।’
দ্রোণাচার্য অবশ্যই এ যুগের নন। সমকালীন হলে তিনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারতেন যে ‘সত্য’ হল একটি ‘পার্টস্ অব স্পিচ’, বয়ান-এর অঙ্গ, যে অংশটি আদতে ক্রমপ্রকাশ্য, অনুচ্চারিত।পোস্ট-পোস্টমর্ডাণ এ সময়ের ‘যুগোপযোগী’ প্রধান পরিচয়, বস্তুত, ‘নব্য-বাস্তববাদ’—যে তত্ত্বটি তার নিজস্ব প্রয়োজনেই ‘মিডিয়া” নামক গ্রে-হাউন্ডের গলার চেনটি খুলে দেয়। অতঃপর, অবাধ প্রচারের গুণে—১০০% ‘মিথ্যা’-কেও, ‘সত্য’ বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। যাচ্ছেও। কিন্তু ‘সত্য’ অকলঙ্ক, তার ওপর কিছুতেই ‘মিথ্যা’-র বদনাম চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। এই পটভূমিকাতেই ভারী জরুরি হয়ে ওঠে ‘টিয়ে পাখির সত্য’-এর নিবিড়পাঠ। ধম্মোপুস্তক পড়িনি একটিও। কিন্তু জানি—যে দাঁড়েই বসুক না কেন সে, এই কবিতা পড়ার কোনো পাঠকই আর ‘তোতাকাহিনী’ গাইবে না।
অতএব, ‘তোতা-জ্যোতিষ’ গোছের শেখানো বুলি আওড়ানো নয় আর, দাঁড়ে বসা অতি আন্তরিক শুক ও সারির কথোপকথন আর সেই সূত্রে ফুটে ওঠা মানুষের তিনকালই, বস্তুত, এই কবিতার চর্চা-বিষয়। ‘সারী’ যে তার স্ত্রী, তার ‘নিজস্ব’ জগত—সেই কথাটি শুরুতেই জানিয়ে রেখেছে শুক। আর তাদেরই নিমগ্ন কথাবার্তার বিষয় হল চারধরণের আপাত–অসম্ভাব্যতা অর্থাৎ নিয়মের ব্যতিক্রম কিংবা ঠোঁট উলটানো ঠেস-কথার বৈপরীত্য। অতএব, চর্চিত হয়েছে ধ্রুবতারার “অভাবনীয়’ গতিময়তা-র কথা; বাঁদর বা শিব গড়ে তোলার মতন যেমন খুশি ব্যবহারের প্রয়োজনে—সত্যকেও—একতাল কাদামাটির মতো ‘নমনীয়’ করে তোলার মতো কথা পাড়া হয়েছে মৃদু র্ভৎসনায়, যাতে ঝাল লঙ্কাকেও মিষ্টি মনে হয়! স্ত্রী-ও পাক্কা ঠোঁটকাটার মতো ঠোনা মেরে স্বামীকে জানিয়ে রেখেছে পুরুষপাখির ডিম ফোটানোর অনুষঙ্গ। আর—যে কথাটি বলা হয়নি, আমাদের অনুসিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছেড়ে রাখা হয়েছে, তা হল অন্ধকার ঊর্দ্ধগামী হয়। এমন ধারা কথা ও বার্তার সূত্রেই রাতকাবার; আলো ফুটে ওঠে, টলটলিয়ে ওঠে সাফসুতরো, সুনির্মল আকাশ।
প্রচারের কুয়াশাজাল ঘিরে থাকে আমাদের মিডিয়াকেন্দ্রিক কাগুজে ‘জনগণতান্ত্রিকতা’। মণীন্দ্র গুপ্ত চিহ্নিত নব্য- বাস্তববাদের এই ‘বিশেষ’ প্রবণতাটির কয়েকটি ‘নিহিত পাতালছায়া’-কে টাঙ্গিয়ে রাখি বরং এই সুযোগে:—
· ঝালে জিভ পুড়ে যাওয়ার মতন লাল লঙ্কার স্বাদ মাঝেমাঝে, থুড়ি, কারো কারো খুব মিষ্টি লাগে। গার্ডিয়ান পত্রিকার দৌলতে উঁকি দেব সেই গপ্পের ঝরোকায়।
· সত্য'-র নমনীয়তা বা ফ্লেক্সিবিলিটি-ও সম্ভব। গত দশবছরের ভারতীয় যাপনচিত্রে তেমন ভূরিভূরি উদাহরণ রয়েছে।
· মিথ্যাকে তা দেওয়া যায়। তার কোনো সময়সীমা নেই।
· অন্ধকার উর্দ্ধমুখী হয়, তদনন্তর অধঃপতিত হয়।
‘দেখা’-র মতোই শোনা-ও একটি ‘স-বিশেষ’ ক্রিয়া। গুজব-বাদীরা তাই কানাকানি-জানাজানি-বলাবলি-র ওপর জোর দেয়। টিয়াপাখিও, নিয়ম মতোই, শুনে শুনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। সেইসূত্রেই ‘তোতাকাহিনীর’ জন্ম হয়। কেউ তাকে গোয়েবলস্ বলে না। অথচ, একুশের মিডিয়ার ঢিঢি কেলেংকারি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অচিরেই, কান ঢাকা পড়বে মাস্ক’-এ। প্রচারণা ঠিকঠাক হলে শোরগোল পার্টির অভীষ্ট পূর্ণ হয়।ক্রমে, চোখের কাজ করে দেয় কান। মনের অন্ধত্ব পীড়া দেয় না আর। একবিংশের সুসভ্য কালচারে একমাত্র ভেরিফায়েবল এনটিটি হল সত্য। তাকে প্রমাণিত হতে হয়।
প্রকৃতপ্রস্তাবে, বোধ এবং শব্দ—হল দুটি পৃথক অস্তিত্ব এবং তারা অনাত্মীয়ই বটে; যদিও, সম্বন্ধযুক্ত হওয়ামাত্র এরা দুই ‘পরমাত্মীয়’ হয়ে ওঠে। আর একমাত্র তখনই— সীমার সঙ্গে অসীমের ইক্যুয়ালটু হয়, বিষাদের আনন্দ-সংস্করণ হয় কিংবা আলু কাটার তরিকায়, নিটোল ডিম্বাকৃতি থেকে, বার করে নেওয়া যায় কয়েকটি নিখুঁত গোলক। জানতাম অবশ্যই যে ব্যক্তিবিশেষ মাত্রেই—দাঁড়, ওর্ফে জীবন—একটাই, যদিও জীবনের মূল সত্য হল এর—‘দ্বিত্ব’ কিংবা জীবন আদতে একটি তুলাদণ্ড বিশেষ—ফলানা ফলানা। এবং সে কারণেই জীবনচর্যা হল এক বিশেষ ধরণের ব্যালান্সিং অ্যাক্ট, ভারসাম্য বজায় রাখার কিস্সা।
এই অবধি এসেই সারমর্ম গোছের একটি ওয়ানলাইনারের দৌলতে “টিয়েপাখির সত্যটি’-কে টাঙিয়ে রাখতে চাই যে—‘সত্য’ হল একটি ‘দর্শন’ আর মিথ্যা একটি অনুমান—বংশকুলুজি অনুযায়ী যার পোশাকি নাম ‘শ্রবণ’। অর্থাৎ, সত্য বাস্তববর্জিত নয়, হতেও পারে না। কেননা, সত্য = শত-প্রতিশত বিজ্ঞানধর্মিতা। জহুরি সে।যুক্তিবাদীরা বলেন ‘ফিল্টার’। স্বভাববশতই, সমস্ত হেঁয়ালির সু-সমাধান, মাইক্রোস্কোপিক অনুসন্ধানই তার কাজ। তার বুকের মধ্যে জমাট বাঁধা এক কষ্টিপাথর আছে; নাম—অনুভব, যার দৌলতে গ্রহণ-বর্জনের কাজটা অবলীলায় সেরে ফেলে ‘সত্য’। আর সে কারণেই, পুব ও পশ্চিমের মধ্যে যতটুক জাগতিক দূরত্ব, সত্য ও মিথ্যার মধ্যে তার চেয়েও বেশি অনতিক্রম্য ব্যবধান।
‘ধ্রুব’কথাটির অভিধানগত অর্থ হল “স্থিরতা’।পোলারিস নিশ্চল, স্থির। তার নড়াচড়া নেই। সত্য-ও তেমনই কিছু, ধ্রুব। অশ্বত্থামার মৃত্যু অবশ্যই একটি নির্ভেজাল সত্য। কিন্তু যে শুনছে, তার কাছে যে কেমন এক ভিন্নতা, অ-স্পষ্টতা তৈরি হয়। ফলত, এই মহাভারতীয় মহাজাগতিক সত্যকেও ইন্টারপ্রিটেশনের মুখোমুখি হতে হয়। ইন্টারপ্রিটেশনের গুঁতোয় সত্যের ধ্রুবতারাটি, ক্ষেত্রবিশেষে, চার ইঞ্চি সরে বসে। ঠিক যেরকম, ‘ডি’-কলোনাইজেশনের ছেড়ে যাওয়া তখত্টি দখল করে নেয় ‘রি’-কলোনাইজেশন: একটি আ-বিশ্ব তরিকা হয়ে ও্ঠে। ওই যেমন মুখে ‘বর্ডারলেস’ কিন্তু চীন পেরোয় ট্যারিফ-সীমান্ত। কিংবা ২০০৮এর মার্কিনী সরকার স্লিপারি স্লোপ টু সোশ্যালিজমের অভিযোগ সত্ত্বেও মার্কিনী ব্যাঙ্কব্যবস্থাকে বাঁচাতে আটশো বিলিয়নের প্যাকেজ এনেছিল। আমরা আর্ষ-প্রয়োগ ভেবে শান্তি পেয়েছি। সত্য-মিথ্যা আদতে এক বোধ। ব্যক্তি-সাপেক্ষ। আপেক্ষিক।সত্যি-ফত্যিরও হেড-টেলের মতন দুটো দিক আছে। ট্রুলি! কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সত্য-মিথ্যার বোধটি হল ঐ শোলের কয়েনের মতন।ঋজু দাঁড়িয়ে থাকে। উদাহরণ? রামজন্মভূমি, চীনের করোনা এক্সপোর্ট, পরিযায়ী আর কুড়ি লক্ষ হাজার কোটির প্রতিশ্রুতি-স্পন্দন। প্রথম বিশ্ব অস্ত্র বানায়। মহা-আড়ম্বরে, তৃতীয় বিশ্ব ‘যুদ্ধ’ কেনে; প্রচারপত্রিকায়, সুকৌশলী গণমাধ্যমে কিন্তু সত্য ইঞ্চিচারেক ‘সরে গিয়ে’-ও ‘সত্য’-ই থাকে।কিন্তু প্রশ্ন জাগে, তৃতীয় বিশ্বের লোকজন কি কেবল ‘রাজনৈতিক’ মুক্তি-ই খুঁজেছিল? আর্থিক স্বাধীনতা নয়? প্রচারপুস্তিকায় যাই-ই থাকুক,ধর্মের কল, শেষমেশ, বাতাসে নড়ে। ২০০৭-এর ‘প্রচারিত’ (সত্য) ওর্ফে (বিশ্বাস), তাই, ২০২০-এ মিথ্যা সাবিদ হয়। কবি, সখেদে জানিয়েছেন—‘১/২ গোপাল মল্লিক লেনের কর্তাগিন্নি এই সহজ কথাটি বোঝেন না বলে যাবতীয় দুঃখ ভোগ করেন।’
কিন্তু গার্ডিয়ান পত্রিকা জানাচ্ছে যে সত্যকেও নমনীয় বা ফ্লেক্সিবল করে তোলা সম্ভব। সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। তার আগে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রকাশিত বই (২০১১) ‘এ ফেয়ারওয়েল টু ট্রুথ’-বইতে প্রখ্যাত তাত্ত্বিক জিয়ান্নি ভাট্টিমো লিখেছেন ইরাকযুদ্ধের মিথ্যাচার বিষয়ে। সরাসরিই লিখেছেন যে ইরাক-যুদ্ধ বড়ো বড়ো দেশনেতাদের বাধ্য করেছে যে তারা যেন স্বীকার করেন যে—‘ they lied to their publics, and whether they did so voluntarily or involuntarily is an unresolved problem on which no light will ever be shed by the supposedly independent inquiries that they themselves have set up’।ভাট্টিমো উচ্চারিত ‘supposedly’ শব্দটি,নিশ্চিতই,যৎপরোনাস্তি ইঙ্গিতবহ।যুগপৎ ঝাল এবং মধুর।
ট্রুথ,ট্রুথ এবং ট্রুথ। আমরা কি সত্যান্বেষী নাকি?আছে নাকি ব্যোমকেশ প্রবৃত্তি? সত্যকে ভালোবাসি কি? ভয় পাই? ঘৃণা করি? গুরুত্বপূর্ণ মনে করি? অতি বিখ্যাত কবির রোমান্টিক উচ্চারণ হল ‘বিউটি ইজ ট্রুথ’, ‘ট্রুথ বিউটি’। আর এযুগের গার্ডিয়ান জানাচ্ছে (র্যাখেল ডনোলি, ১৩/০১/২০০০) মি. ডেভিড আরভিং লণ্ডনের কোর্টে ক্রশ-এগ্জামিনেশনের সময় দাবি করেছেন যে আউশওয়িস্ত-এ নাকি কোনো গ্যাসচেম্বারই ছিল না। কোনো ইহুদিকেই নাকি গ্যাসচেম্বারে পুড়িয়ে মারা হয়নি। ‘দি বিগেস্ট লাই অব দ লট ... ইজ দি লাই দ্যাট দি জার্মান হ্যাড ফ্যাক্টরিজ অব ডেথ উইথ গ্যাসচেম্বারস।।...’ আমাদের ঝাল লাগলেও , David Irving –এর মতো আ-বিশ্ব ছড়িয়ে থাকা ইহুদি-বিদ্বেষীদের কাছে এই তথ্যটি, নিশ্চিতই, অতি সুমধুর। শান্তি থাকাকালীন আমরা যুদ্ধের কথা বলি। যুদ্ধ চলাকালীন শান্তির কথা চালাচালি হয়।ট্রাম্পগোষ্ঠীভুক্ত যে কোনো মার্কিনীদের জিজ্ঞাসা করলেই উত্তর পাওয়া যাবে যে শক্তিমান হওয়ার অর্থই তো ‘শক্তিসন্ধানে’-র উদ্দেশ্য-তাড়িত হওয়া।
একপক্ষ বলছে ১৫৪ জন সাংসদই হচ্ছে ক্রিমিন্যাল। প্রতিপক্ষের জবানবন্দিতে ঐসব কিছুই হল নিছকই বক্তিমে, ফাঁসানোর ফন্দি, মিথ্যা অভিযোগ। তবে কি একপক্ষের নজরে ধ্রুবতারার স্থানবদল হয়েছে। যদি অনেকে মিলে সমস্বরে বলা হয়, তবে সত্যও কেমন ফ্লেক্সিবল/নমনীয় হয়ে যায়। ষাট-ষাটটি দেশ সমস্বরে হুক্কাহুয়া হাঁকল, বায়োলজিক্যাল ওয়েপনের লেশমাত্র পাওয়া গেল কি গেল না—আগ্রাসনী মনোভঙ্গির ষাট-ষাটটি দেশের গণতান্ত্রিকতায় লাল লঙ্কাটি সুমধুর স্বাদে ধরা পড়ল! আর উপসাগরীয় তরলের ঝাঁজে-ঝালে নাজেহাল হয়ে আপনি ব্যারলপিছু কয়েক ডলার বেশি দিতেই নাহয় বাধ্য হলেন; তাতে কিই বা এসে গেল?
‘পোস্ট-ট্রুথ’শীর্ষক এক ধন্দ নাকি ইতিমধ্যেই হাজির।কিন্তু সে প্রসঙ্গ বারান্তরে। আমাদের কবি লিখছেন একটা দাঁড়, কিন্তু দুটো টিয়াপাখি।অতএব, স্টিরিওফোনিক ‘মিথ্যা’-য় অভ্যস্ত হয়ে ওঠো,হে মনুজ। তোমার তো দু-দুটি শ্রবণ-যন্ত্র।কানের দুদিকেই বাজবে। কিন্তু দুটো কান কেন একরকমেরই শুনবে? তারা তো একসাথেও নেই!এক যদি বা ডান, ভিন্নটি তো নির্ঘাত বাম।একযোগে কথা বলা হলেও, যুক্তিঅনুযায়ী, তারা ‘ভিন্নরকমই’ শুনবে। ওদেরও তো কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক হতেই পারে। মাদী-টিয়েটি পুরুষ টিয়াকে ডিমে তা দিতে বলছে।নতুনত্ব কিছু নয়। পাখিসমাজের কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা চালুও আছে। চাতক-তিতির-সাধারণ পায়রা-ঘুঘু বা কাঠঠোকরা–স্টার্লিং গোত্রীয় পাখিদের পুরুষেরাও ডিমে তা দেওয়ার কাজটি করে থাকে।উইকিপিডিয়া জানাচ্ছে যে জ্যাকানা বা ফ্যালারোপ গোত্রের পুরুষ-পাখিরাই কেবল ডিমে তা দেয়।
· কিন্তু পাঠক খেয়াল করেছেন কী যে ‘গতবছরে’ প্রসব করা ডিমে তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী মাত্র ৮৭ দিন পর্যন্ত ‘ডিমে’ তা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু, মিথ্যাকে তা দেওয়ার, প্রাণবন্ত করে তোলার কোনোই সময়সীমা নেই। ১৫২৬ হোক বা ২০২৪।
ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমীর এইসব কথাকাহিনীর তোড়ে কাকের ডানার ভাঁজ থেকে খসে পড়ে ঘুমন্ত রাত।স্নানার্থী নগ্নিকা যেন খুলে ফেলেছে তার সাত-বাস্টে অঙ্গবাস। গড়িয়ে আসে লাল বল।জন্ম নেয়—নতুন শাবক। বীতরাত্রির অপসৃয়মাণ আলোছায়ায় তখন শব্দ-গতি-কথা-বৈভবের আরো এক ‘আশ্চর্য’’ উড়ান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন