রাক্ষস প্রেমিক
১
তুমি আমার সব নিয়েছ
দিন নিয়েছ
ভরি দরে সুসময়ের আতর
আলোয় মোড়া সবুজ
সকাল-সন্ধে-বিকেল
রাতের ঘুম কবেই নিয়েছ কেড়ে
ত্বক থেকে লাবণ্য নিলে
শরীর থেকে রস
শূন্য হাঁ গিলতে আসে আমায়
টুথপেষ্ট ভেবে টিপে টিপে নিলে সময়
তবু তোমাকে আঁকড়ে ধরি নাছোড় প্রেমিকা
তুই নে, নে আমায় রাক্ষস
সর্বস্ব নে কবিতা আমার!
২
আমাকে কুপিয়ে কুপিয়ে কাটে এক কবিতা-পুরুষ
তখনও হাতের আঙুলে জড়ানো ছিলো লেখা
তোমার অগম দেহের ঘ্রাণ
আমি দেখি ছিটকে পড়া মাংস রুধি
আমি দেখি নিরন্ন শোক দু:খ নিরবধি
বুকে হাঁটা অসঙ্গত সময় সকাশে
তোমার উদাসীনতার ধারালো ছুরি
হিস হিস, শিষ দিয়ে ওঠে আকাশে
৩
ভাড়াটে খুনীর মতো জান্তব সময়
অকরুণ
ট্রিগার করেছে আমায় চোখ সরু করে
এক অঝোর বর্ষার পড়ন্ত বেলায় রাজাভাতখাওয়ার জঙ্গলে দেখেছিলাম
অভুক্ত জানোয়ারের দৃষ্টি
ঠিক সেরকম !
আমি সেই সন্ত্রস্ত সোনালী হরিণ
তফাত শুধু এটুকু
জানি আমরা খাদ্য-খাদক তবু
নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টাটুকু যেন নিষিদ্ধ ইস্তেহার!
তুমি ঠিক, সময়ে সময়ে বিকেল-বিলাস
কব্জিতে আতরের ছিটে
দু-হাত বাড়িয়ে ডাকো সুযোগে, অবরে-সবরে
আমি ছুটে ছুটে যাই বুকে তুলে নেব বলে
অস্থির শরীর তোমার অমেয় মনের সীমানা
শেষরাতে জানলার গরাদ-ভাঙা জোছনা এসে
বিছানায় বসে
দু'হাত বাড়িয়ে ডেকে নেয় গভীরে
যা করেছি জানি ভুল মন্দ সবই তা
তুই ফুটে যা বাংলা কবিতা!
৪
খুলে খুলে দেখিয়েছি ক্ষত
কালশিটে ডালিমের রঙ হয়ে জমাট বেদনা
ওষ্ঠপুটে সাজিয়েছি হাসি কষ্ট করে
আমার তো আর কিছুই ছিলনা
বলব বলব করেও বলা গেল না তো
তবু কেমন করে বুঝে নিলে
জমা পুঁজের মতো কীটদংশন
গাঢ় কাজলের নীচে অভিমান কেমন করে ঢেকে রাখা যায়
রাত যেমন করে বুকে তার তারাফোটা দু:খ সাজিয়ে রাখে
সে তো ক্ষত
তারই আলোয় চিনে চিনে যাই জীবনের গলিঘুঁজি কানা
তেমন করে কাফনের কাপড় খুলে খুলে
দেখিয়েছি দগদগে ক্ষত
ও আমার কবিতাপুরুষ
আমার তো আর কিছুই ছিল না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন