গীতা কর্মকারের কবিতা 






অথচ 

 রাত্রি ঘনিষ্ট হলে 
 মৃত্যু উপত্যকা থেকে ভেসে আসে কার বাঁশি 
 বাঁশি বাজলে তবেই উপস্থিত হবে 
 সেই অমোঘ মুহূর্ত। চিদাকাশ ফুঁড়ে 
 বেরিয়ে আসবে প্রাণ ভোমরা।

 একাল সেকাল পরকাল 
 সকলি মুছে যাবে 
 তখন কুলুঙ্গিতে কুলুঙ্গীতে 
জমে থাকা স্মৃতিরা 
 উলসে উঠবে অস্থির।
 সন্দিগ্ধ জীবন খাবি খেতে থাকবে 
 উরুক্কু মাছের মত 
 যত কিছু গ্লানি তাড়িয়ে ফিরবে অনলস 
 উদ্ধার নেই। উদ্ধার মেলে না।

 অথচ
 যেতে তো হবেই 
 বাঁশি বাজলেই যেতে হবে।
 যেতে তো হবেই।
 যেতেই হবে।





 

পাখি বাস 

 মাঝখানে ভারী জল 
 চারপাশে শূন্যতার ঝালর 
 ভেতরে ভেতরে শুধু আমি'র 
 অস্তিত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে প্রতিবিম্ব 
 প্রকৃত মানুষটা কোথায় কেউ জানে না 
 আসা ও যাওয়ার মাঝখানে 
 নদী বয়ে চলে দ্রুত 

 পেটের ভেতরে ঘূর্ণিপাক 
 হাঙ্গর ও কুমির 
 ওপারের শ্যামের বাঁশি 
 শ্যাম ভোলানো হাসি 
 এপারে বিষ ব্যথা ছেঁদো কথা 
 এইসব টুকিটাকি 
চিত্রল পক্ষী নিবাস 

 তা বাদে শূন্যতা শূন্যতা শূন্যতা 
 অথৈ ডুব জল।


 



দিনকাল

 সমূহ চর্চায় উঠে আসে দিনকাল 
 সংবাদপত্রের পাতাগুলো 
 ক্রমশ ক্লিশে 
 একই খবর প্রত্যহ সামনে আসে।
 নাম কাল পাল্টে পাল্টে
 পুনরাবৃত্ত ছবি।

 ভেসে আছি বিমূর্ত সাগরে 
 উন্মুক্ত বিশ্বায়নের ঢেউ 
 বাণিজ্য শপথ করে।
 বিশ্বের  এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত
 তথ্য চেটে খায় ইন্টারনেট।
 অন্ধকার পাতালের নিচে 
 পচে গলে থেমে যায় 
 মানুষের শেষ চিৎকার।

 ভালোবাসা হীন দিনগুলো 
 এভাবেই ছুটে চলেছে 
 অপরিমেয় ভবিতব্যের দিকে। 
  






উদ্দিষ্ট

 নাঃ সেখানে কেউ ছিলনা 
 কোন শব্দ,ধোঁয়াশা বা মায়াজাল
 কিংবা কোন প্রহরী।
 এক পা এক পা করতে করতে 
 পেরিয়ে গেলাম একটা ফাঁকা বৃত্ত 
 এখনো বেঁচে থাকার অভিযোগে 
 অভিযুক্ত আমি 
 দাঁড়িয়ে আছি নির্লজ্জ।বেমানান।

 এই তট এই কিনার সমস্তই ফাঁকা ।
 দূরবর্তী কোনো এক জাহাজের বাঁশি 
 সামগ্রিক অস্তিত্ব দিয়ে ভ'রে তুলছে 
 আকাশের গহীন 
 
এখন ও চারপাশে কেউ নেই 
 কেবল অবান্তর অভিযোগেরা 
 তীক্ষ্ণ শলাকার মতো বর্তমান।
 এ  ফোঁড় ওফোঁড় করে দিচ্ছে ললিত যা কিছু 

 প্রকৃত  উদ্দিষ্ট বলে কিছু নেই। 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন