রুমা ঢ্যাং অধিকারীর কবিতা 




 

প্রতীকী 

নির্জন দাঁড়িয়ে পাশাপাশি
নির্জন চূড়ান্তের নিচে এক পাথরসমৃদ্ধ নাভি

অতএব, যে কথা এখন শুরু হয়ে থামলো
অথবা খুললো পিঁয়াজ উদ্ভাসিত বেলাসমগ্র
সহজের সেইসব অবারিত মৃত্যুর পরে
শবাসন এক স্বপ্নকুসুম

একটি ছায়া যার দোরে ফেলে এসে যেন
বাসা বুনছি আমি অনুচ্চারিত জলে

গলা ডুবলেই এবার প্রতীকী নদী


  



ব্রহ্মাণ্ডনাভীর দিকে

নিশ্চিন্তের আগে আঘাত পড়েছিল কি দরজায়?

রেলপথ যদি এমনটাই দৃশ্য নিয়ে প্রলয় অনুভাবিত 
মনের মাধুকি পথের যমমুখে 

ফিরে আসা ছেলেকে যামঘোষের তারাহীন রাতের কথা বলিনি
সংশয়ের উর্ধ্বতনে দাঁড়িয়ে বলিনি গর্জে ওঠা প্রত্নবস্তুর কথাও

অস্থিকলা ধারণে এতদিন
নিজেকে টুকরো টুকরো করে, জ্বালানি আশ্রয় করে
পুবে ঢেলেছি পাঞ্চজন্যের ধ্বনি

রন্ধন মুছে গেলে প্রকৃত ভোগীর মৃত্যু অবধারিত
স্রোতের ভোর যে অভিমুখে স্বয়ংজাত
বর্ণশিখার তলানি চেটে সেখানেই প্রস্তাবনা এগিয়ে দিচ্ছি সহসা 

গোলকধাম থেকে একটি চৈত্রের পাতা
উড়ে যাচ্ছে ব্রহ্মাণ্ডনাভীর দিকে...

আমি, রেলপথ
যেন অনন্তবিস্তৃত



  



কালখণ্ড 

বীক্ষণ ও ছিয়াত্তর পরিক্রমার মধ্যবর্তী স্থানে রয়ে গেছে করতলগত অনেক অবশেষ। ক্যালেন্ডারের লাল গর্ত থেকে যে দিনকে স্তন্যপান করানো হয় তার পোশাকি নাম হতে পারে স্বাধীনতা। কিন্তু স্বাধীনতা আসলে তো একটি ঘুড়ির মতো। যতটা ছাড়া ততটাই তার পতপতে স্বভাব। ঘুড়ি ওড়ে সুতোর প্রান্তে। মানুষ কি ভিন্ন! 

বদ্ধ কথাটি যেখানে লেপ্টে থাকে সমাজের সঙ্গে স্বতন্ত্র ডানার জন্ম বোধ হয় বৃথা
পতাকা যদিও আজ পেয়েছে একখণ্ড জমি নিদেনপক্ষে একটি দণ্ডও

সভা করে এসে জিহ্বাগ্রে তুলে নিয়েছি যে উৎসব, চারিয়েছি যা পাঁচকান--- উন্মাদের চরাচরে মিশে গেছে গর্ভের ভূমি। এ উন্মত্ত ছুটি ছুটির তীব্র উল্লাশ।  লোকপ্রিয় এক বহুজাতক লোককল্প

রক্তকে আশ্রয় করে আমরা আজ গরমার্ত 
আর সবরমতী নদীর প্রান্তে পড়ে থাকা কালখণ্ড 

হাওয়া বদলে বদলে প্রকাশিত সংশোধনে
মাঙ্গলিক 
এখনও সংশয়ে

যতটুকু আলোর বিচ্ছুরণ ফুঁ দিয়ে কি তাকে নিভিয়ে দেবে? 


       



অমীমাংসিত

Today's version এ চক্করকাটা কিংবা aversion এ পোড়ার পর
ঠাণ্ডাশ্রী ভাতায় দহনের নাম সুজাতা কাঁড়ার
মাটি কাটার একশো এক বাদবিচারে যে
খনন উত্তোলন ছায়াছবি-নির্মাতার কাছে বেচে দিয়েছে ঘুঙুর

শ্মশানছায়ার তীরে সূর্যও যখন কিছুটা অমীমাংসিত
যাপন মুরতির সামনে তখন এক কাপ চাপের ধোঁয়া
নির্বিকল্পের দুয়ার থেকে শ্রমভবনে...

আর কোনো পৃথক যাত্রা নেই

দেয়াল ঝিমের সম্যকসফরে কৃষ্ণধন
গোলক বৃন্তের ধার ঘেঁষে যেটুকু নীলোৎপাদন

মানতের শ্বাস পড়ে দীর্ঘচরাচরে


যার থেকে
সন্ধে কামিয়ে নেওয়া



    



ধৃতিকৌশল

তুমি স্মরণের আদ্য ও উপান্তের পথে পথে
বিরহ একা একটি উট

মনকাটা ছুরির দিক থেকে নেমে যাওয়া খাদে ঝুমুরস্বভাব

একপায়ে লেগে যেসব পার্বণের নদীজল
স্রোত জড়িয়ে স্থিমিত
অন্য পায়ে অনুঘটকের চিহ্নিতকরণ

এই দাগ বলছে এ জন্মের সবর্ত্র চর্যার তারাধিপ
আর মুখে আওড়ানো জড়ায়ুসংরাগ
তারও শিবকায়ায় দেখি আবহমান প্রবেশ

বাঁশিফুটোর কথায় এত সেতুভাঙা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে
অন্তরে কুটে রাখা কুশীলব
আর হাতজোড়া ধৃতিকৌশল

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন