ধ্যাততেরিকি
১.
অনেকগুলো বছর তোমার সঙ্গে ঘর করলাম। ছারখার করে দিয়েছে তোমার ছারপোকা আমার ভূর্জপত্র।
ভাঙা ভাঙা অক্ষরে নাম হয়ে ফুটে ওঠার দিনে শুকিয়ে গেছে সবটা নদীর জল।
আবার তাকিয়ে দুফোটা জলের প্রতীক্ষা ___
পাক খেয়ে খেয়ে শরীরের গায়ে বর্ষবলয় জমা করেছি,
আর প্রজাপতি হয়ে উড়ে গ্যাছো তুমি পূরাতনকে খোলস ভাবিয়ে--
তবু ছিলে তুমি --
যেভাবে নির্জন পুকুরে ঘুমিয়ে থাকে বুদ্ধিজীবীর বুদবুদ চেতনা--যেভাবে ধাক্কার মিছিলে হুইস্কি হয়ে যায় মানুষ মানুষ ছলনা---
অনেকগুলো বছর ঘর করছি তোমার সাথে--এভাবেই;
ভাঙা ঘর আর হারামজাদা হারিকেন---
আর ট্রফিজেতা মাঠকাঁপানো সন্ন্যাসীর দল
অনুগ্রহপূর্বক বলে যায় সদরে টোকা মেরে---
শালা!কুয়োর ঢ্যামনা____
২.
অনেকবার সাক্ষাতে বলেছি
আমার মদ খেতে ইচ্ছে করে।
আমায় মদ এনে দেবে?
লাল টিপ--লাল জিভ--
বাল্মীকির ভিতর মহাকাব্য---
এসবে আর হবে না!
এবার মদের ভিতর আগুন জ্বালিয়ে
আমি গলিয়ে দেব তোমার শাসানির রক্তচোখ
তারপর বামাল বাতাসের মতোন
ভটকে বেড়াব দৃশ্য দৃশ্যান্তরে
বলব;মাগী!
সব দোষ তোর!
৩.
নতুন কী আর তুই শেখাবি আমাকে?
কিছু গোপনীয়তার হিজিবিজি গল্প যাদের
ত্বক হিজড়াদের মুখসুদ্ধির চেয়েও করুণ ;
তেতলার ব্যালকনি থেকে অবেলায় ঝুলতে থাকা
বৌদিমণির না দেখা বিকিনি
তোর আলটপকা ক্ষতে বিবাহিত প্রেমিকার রোমান
স্বাক্ষর!
তার চেয়ে বরং চল দুজনেই হাঁটি
চোলাই পথে লঙ্গরখানা,
রক্তে রক্তে টাটকা করে তুলি পাকস্থলী
যেটুকু পিত্ত এখনো ফুরায়নি যকৃতের
বুদ্ধিজীবী প্রকল্পে,
তাই দিয়ে বাঁচিয়ে তুলি সীমাহীন তড়িতের খেলা;
মনে রাখিস্!
আমাদের বীর্যে নেই কোন প্রভুর আণ্ডারপাস____
৪.
জড়ো করা চটিজোড়া
মাথায় তুলে বনেদি বাড়ির কালো মেঘ পেরিয়ে
যখন ছেলেটি এল মেট্রোর রাস্তায়
তখন চারিদিকে খটখটে শুকনো সূর্য
গলে গলে ফুটপাতের দুধারে অভাবের তেলরঙ--
ছেলেটি ছবি খুঁজছিল।মনরঙের ছবি।
যেমনটি সে আঁকত
প্রায়ই বনেদি হাভেলির ভিতর
দুপুর হলে ফোনের ওপার থেকে
নারী কণ্ঠ ভেসে আসে;
এখানে খুব বৃষ্টি হচ্ছে..... খোকা।
ভিজে চোখ দুহাতে মুছে
খোকা গলিয়ে নেয় চটিজোড়া,
প্রেমিকার ঠোঁটে লাল লিপস্টিক খেলতে খেলতে
বলে:হোলি হেল্!হাতে আমার জলরঙ---
দূরে সরিয়ে রাখো তোমার শহরের
ফটোজেনিক ম্যাজেন্টা!
৫.
শুয়ে পড়ো কবি
চোখে তোমার ঘুম শুঁয়োপোকা।
চতুর্দিকে থুথু লালা ছিটিয়ে বিকল্প শক্তির বুর্জোয়া বিকেলে তোমার উল্লম্ফন রসাত্মক ---
বান্ধবহীন বিসর্গে দোল খাচ্ছে পঞ্চভূত
শব্দের তলপেটে বসে তুমি শুনতে
চাইছো করোনাল হোলের আর্তনাদ
শুনতে চাইছো মৃত্যুর অণু-অণ্ড
ভালোবাসার সংসার যোনি;
অথচ তোমার শরীরে ঘুম শুঁয়োপোকা--নীল
হয়ে আসছে সন্ধ্যাপ্রদীপের গর্ভ--
পৃথিবীর অনেক নীচে
শুকিয়ে এসেছে ধ্বনিজন্মের রেণু
ভুগোলহীন মাতৃত্ব;
কবি!শুয়ে পড়ো_____
৬.
তোমার গল্পে বারবার বিষ মাখানো শিস উঠে এসেছে।
হাতির পায়ের চেয়েও ভারী কোন
অলৌকিক পার করতে চাইছে
মোমিনপুরের সহজ একটি সেতু।
গল্প ফেলে
বিকেলের চা হাতে বারান্দার একফালিতে
খুঁজছিলাম মধুসূদনমঞ্চ,মিনার্ভা থিয়েটার ___
যোনি থেকে সূর্য হেসে বলল
ডেমোক্রেটিক হোর!
৭.
প্রতিবেশি সড়ক
ফাটল ধরা একখণ্ড দেওয়াল
সেখান থেকে বেমক্কা গজিয়ে ওঠা সবুজ শ্যাওলা
একটা এন্ড্রোজেনিক বিকেল
এসবের কিছুই আর নেই।
ভারী পেপার ওয়েটের নীচে অনেকগুলো টিস্যু
বুক চেপে অপেক্ষা করে;
আমার কুকুরের অপেক্ষা!
আমি মাংস দেখি।মাংসের নারী দেখি।
কাছেই চার্চে ইভিনিং প্রেয়ার এর ঘন্টা বাজে.....
আমি খুঁজছি সড়ক দেওয়াল শ্যাওলা
মরা বিকেলের রক্ত গেঁজে উঠছে;
কিচ্ছু নেই!কিচ্ছু নেই!!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন