হাঁটিয়েছো কোন্ পথরেখায় 




১.
হাঁটিয়েছো কোন্ পথরেখায়,
কোন্ অভিসন্ধি নিয়ে
সরিয়ে নিয়েছো হাত, কাঁধের কাছে এনে?

ধবধবে আঙুলের রং
আরও বেশি ধবধবে মনে হয়
হঠাৎ আলোয় 
সুস্পষ্ট হয়ে ওঠা অপরাজিতার
পাপড়ির গায়ে গায়ে ঘোরাও যখন।

তোমারও কি নেশা লাগে! 
গ্ৰাস করে রাহু কেতু কখনও হঠাৎ?
মনে হয়, আমাদের কাছে আসা ছাড়া সব শূণ্য?

বামন হয়েছি, তাই বলে আজীবন
কল্পনায় ছুঁতে হবে চাঁদ?







২.
ভেসে যেতে যেতে তোমার প্রবাহে
বাঁক আসে হঠাৎ হঠাৎ
আসে পাথর বাঁকে বাঁকে

মাথা ফেটে রক্ত
হাত ভাঙ্গে পা ভাঙ্গে
রক্তের দাগ নিয়ে বয়ে চলো
মুছে মুছে যাও বালির কণায়।

দশাঙুল ঘষে ঘষে ওম দিয়ে
কত আর জাগাবে এ বাঁশি
কত আর তুলবে সুর বিষাদ গুঞ্জনে?

হাত দাও, দাও লবনাক্ত জল
বিচ্ছেদেরই ছবি আঁকি অবেলায় বসে
অথবা ছেনির ঘায়ে ঘায়ে
আলাদা একটা রং নিয়ে আসি
তোমার দু'পাড়ে।

তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। আমি দেখি, 
তোমার ঘুমের ভেতর কার আসা যাওয়া!







৩.
কী গান শোনাবে আজ 
ভোরের পাঁচিল ধরে 
মাটির গন্ধ মাখা কম্পমান ঠোঁটে
কী সুর শোনাবে 
ভাঙ্গন ধরা নক্ষত্রের খোঁজে?

জাগিয়ে তুলেছো পীড়া পুরাতন

আঙুল দিয়ে দগদগে ঘায়ে
দিতে চাও সুখ?

তোমার মোহনা জুড়ে জমে ওঠা পলি
কতজনের আসা যাওয়ার ছাপ
মুখ তোলে জীবাশ্ম হয়ে। সেভাবেই
আমিও চাপা পড়ে যাব
প্রবাহে তোমার?

বুকের গভীরে রেখে আমার নিশান
হাঁটবে অচিরে,
হস্ত সঞ্চালন করে অন্য কোন কাঁধে…







৪.
অবধারিত সময়ের আগেই
মগ্ন হয়েছো জৈব ক্রিয়ায়
জল ঢেলেছো পত্রহীন বৃক্ষের গোড়ায়।

যত মজবুত হবে ততই শান্তি
পাতায় পাতায়
ভরে গেলে চারপাশ
ছায়ায় ছায়ায় বিষপান

জীবের জয়গান এভাবেই সম্ভব?

জৈব সংযোগ শেষে
অবধারিত ক্লান্তির রেশ থাকলে
কীভাবেই আবেশ আসে
কীভাবেই গান আসে ঠোঁটে?

প্রকৃত গান দুঃখ ছাড়া বহন করে না কিছুই।








৫.
কোন এক সুপ্রাচীন ঘরে
আবদ্ধ হতে চাই
তোমাকে নিয়েই
থাকতে চাই কাল্পনিক এক আসনেই

বয়ে যাক খরস্রোতা নদী
সব বাঁক সোজা হয়ে 
থাক না হয় পর পর কয়েকটা যুগ
সেখান থেকেই দেখি পাহাড় সাগর,
জেগে উঠুক ষাট হাজার বংশধর সাগর রাজার।

চলো আজই আবদ্ধ হই
যে আসনে উপযুক্ত সুখ, পাবে বলে আশা করো
হোক সে ক্ষণস্থায়ী
দীর্ঘ পীড়াদায়ী, লাঞ্ছনায় মোড়া 
সেই আসনেই 
থেকে যাই অনন্ত ঢেউয়ে।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন