ক্ষতচিহ্নগুলি...






১.
সন্দেহ ছিল বলেই 
প্রতিটা হাতনাড়ার পিছনে তুমি তাকিয়ে ছিলে
সন্দেহ ছিল বলেই
আমিও তাকাইনি অঙ্গীকারের শাখাপ্রশাখায়

আসলে আমরা
দুজনেই জানতাম;
মনে মনে জানতাম

সময়টা বিদায় জানানোর নয়।






২.
কতোটা গভীরে গেলে
তোমার ঠাণ্ডা হাতের ছোঁয়া পাবো;
জানিনা--

শুধু ক্লান্ত চোখে মাঝেমাঝেই তাকিয়ে থাকি
রাত্রিটার দিকে--
বুকের ভিতর তোলপাড় করে নক্ষত্র
ভিন্ন ভিন্ন জ‍্যামিতিক রেখায়
তাদের যোগ বিয়োগ করতে থাকে
গণৎকার,

ভাঁজ খেতে খেতে উল্কাপিণ্ডটা
ছুটে চলে কালো গর্তের দিকে
আমিও ছুটে যাই।ভিড়তে চাই।
শীত গায়ে একা লাগে।

পৃথিবী পিছিয়ে যায়।
এখন আমার তোমায় ভাবতে ভালো লাগে.....






৩.
বুকের ভাঁজে ছিল কুসুমবীজ
কয়েকটা ঝড়রাত্রির কাক
একটা প্রচণ্ড ঝার বাতি
মুহুর্মুহু শব্দ ভাঙার আর্তনাদ 

তবুও আমার উদ‍্যত মুখের সামনে
এগিয়ে এসেছিলে
সব ঢ‍্যাঁড়াচিহ্নে একে একে বুলিয়ে দিলে
তোমার জ‍্যোৎস্নাস্নাত রাবার গাছ

বিপুল বিপথে এখন
ঘনঘন তোমার গোপনে আমার অস্বস্তিকর নিঃশ্বাস
নাভিতে দুর্বৃত্তের কালাপানি

তবু স্মিত তুমি!
আমার  এতোকালের গুহায় এ তোমার 
কেমন রাত্রিবাস?






৪.
প্রকাণ্ড পাথরটার গা বেয়ে গজিয়ে 
ওঠা আগাছাটির মাথায় 
ঝরে পড়ছে তোমার 
বিন্দু বিন্দু বীর্য--
মেঘের গায়ে কৃষ্ণ হয়ে উঠছে আকাশ
রাধার গন্ধে আচমকাই নাবালক
আমার বাগধারা সমাজ

এখানে আল কাটা নেই।সে'কাজ তোমার।
এখানে নির্জন বাতি নেই।সে কাজ তোমার।

আমি শুধু পাথর ঠেলে গাছের গোড়ায়
ঢেলে দেব কিছুটা হারুত-মারুত
 বাকিটা করবে তোমার ঘামে
তৈলাক্ত আমার অমিমাংসিত উত্তরাধিকার!






৫.
তুমি কে?

পৃথিবীর সোনালী হলুদ পৃষ্ঠা থেকে
হঠাৎই উঠে এসে আমার পাঁজরে
ঘর বেঁধেছো--
ঘর বেঁধেছো আমাদের বারুণী গুহায় ;
অনাদি তপবায়ুর মতো স্নিগ্ধ 
কোন পরিচ্ছদে গাঢ় হয়ে
উঠেছো বিকেলের জলরঙে;

আমি বারবার আঁচল পেতেছি।
পলাশ বসন্ত তুলেছি।পলাশ বসন্ত মেখেছি।

তবু আজও আমার কলম
ঘোচাতে পারিনি
তোমার পিঠ থেকে অনাস্থার তীক্ষ্ম সেই দাগ!


স্বপ্নদীপ রায়

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন