অনিরুদ্ধ সুব্রত




মৃত্যুর কবিতা

সারি দেখে বুঝি
সারি সারি দেখে বুঝি
পিচ-হাভন -এ ঘুমন্ত গিটার, ছেঁড়া তার

নিঃশব্দের মিউজিকে শেষ রাগ জলসা
দুরন্ত কনসার্টে মুগ্ধ হয়ে গেল যা
কোথাও খুঁজল না উন্মুখ অভিধা

সারি দেখে বুঝি, শান্ত মিছিল দেখে বুঝি
মৃত্যুর মতো সহজ একটি কবিতা হয় না।








শেষ খেলা

খেলাটি জানলার কপাটে সশব্দ 
চৌকাঠে--- রেফারির বাঁশী তীব্র 
বারান্দায় দর্শকের থিকথিকে গ্যালারি--

খুনসুটি গুলো থেমে গেছে রাত বারোটায়
ম্যাচে বার বার যে হাত হেরে যায়
একা একা তার বল- বিকৃতির দায়--

ধীরে ধীরে নিলামে অনির্বাচিত
একদিন টুর্নামেন্ট শুধু জুয়াতে নির্ধারিত, হবে
একদিন শরীর হাতড়াবে পুরনো খেলোয়াড়

জানলায় পরিতৃপ্ত ঢেকুরের শব্দ, অম্ল
রাত্রি-ক্ষতর হাসিমুখে পোস্টাবে সকালে
যখন কুঁচকে গেছে কোনো চামড়ার বাদ্যযন্ত্র।






ভিজে ধোঁয়া

বৃষ্টিতে ভিজে গেছে দেহাতি আগুন
সমস্ত শুকনো পাতার বাধ্য স্নানে
ম্লান হয়েছে নগ্ন শরীরের সামনে
আঁকড়ে ধরার যত আহূত দাউদাউ।

এখানে দীর্ঘ এই জীর্ণ শৈত্য বনে
বরফায়িত বহুকাল অর্ধমৃত থেকে
উৎসাহিত পাথরের মগ্নতার আগুনে।

জ্বলে উঠে তাপে আর পরিতাপে 
চেয়েছিল সেঁকে নিতে বাঁচবার সাধ
তবু ভিজে গেছে, অকাল বৃষ্টি পাতে
একটি নিরালা বনের অগ্নি-উপাখ্যান।






প্রদীপ

শরীরে নিভে যায়, আবার শরীরে ফেরে
দাহ্য যে তার ভৌত অভিজ্ঞান
অথচ জ্বলে থাকে চির বাতিখান যার
অম্লান, এই মনের অন্ধকারের ভিতর।

শূন্য পংক্তির পরে দপদপ করে ওঠে হঠাৎ
কোন এক দূরের বাতাস ফুঁ দিয়ে চলে যায়
রক্ত স্নায়ুর পাত্র থেকে অনন্ত স্নেহপদার্থের গায়
যুগপত বেদনা ও উৎসাহ যেন পরস্পরের
অন্তর্গত দাহ টের পায়।






সাপের বিষের নেশা

ভয় তো আসলে উচ্চারণ ব্যতীত কিছু না
শব্দ যেন রক্তে কান পেতে শোনা
পাথরে হাতুড়ি হানার ছন্দে মেতেছে মন
নীল নীল বিভ্রান্তির বিষেই বৃন্দাবন,
যন্ত্রণা না,ধাতব যন্ত্র সমবায়ের সংকীর্ত্তনে
নগরে নেমেছে চেতনার চৈতন্য দাস
ভেঙেছে ধূসর সরণীর পুরনো অভ্যাস
তিল তিল আচ্ছন্নতার ক্রমাগত টানে ।
                                              

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন