বাদল ধারা
ক্লিপিং গেইম
কাব্য চরিত্র আছে এমন তিনজন কবির তিনটি
পংক্তি নিই,
"নিখিলেশ ক্রুদ্ধ ও উদাসীন, এবং কিছুটা ধূর্ত"
(সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়)
"অখিলেশ—আজন্ম সঙ্গহীন, মিথ্যেবাদী, পাগল ও কবি"
(মোহম্মদ জসিম)
"সমীরণ আমার বন্ধু। চেহারায় দর্শনিকতার ছাপ থাকলেও খুবই স্মার্ট।"
(পরিতোষ হালদার)
~
তিনজন কবির তিনটি পংক্তি, এখন একত্রে জুড়ে দিই
এবং প্রথমে একটি এক লাইনের সম্পূর্ণ গদ্যাণু যুক্ত করি
দেখুন কেমন অণুগল্প হয়ে ওঠে
যা একটি মিশ্র আবহাওয়া তৈরি করবে,
~
নিখিলেশ, অখিলেশ ও সমীরণ একই মায়ের পেটের সৎভাই
নিখিলেশ ক্রুদ্ধ ও উদাসীন, এবং কিছুটা ধূর্ত
অখিলেশ—আজন্ম সঙ্গহীন, মিথ্যেবাদী, পাগল ও কবি
সমীরণ আমার বন্ধু। চেহারায় দর্শনিকতার ছাপ থাকলেও খুবই স্মার্ট।
~
দ্রষ্টব্য : এখন চরিত্র গুলোকে যেকোন পরিবেশে ছেড়ে দিন
এবং নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। আপনি হয়ে উঠতে পারেন একজন সৃষ্টিশীল দূরবীক্ষণ,
গালি গেইম
আপনি আপনাকে একটি গালি দিন
এবং গালিটি খাতায় লিখুন
এবং গালিটি কেনো গালি তা ব্যাখ্যা করুন
সর্বোচ্চ ১০০ শব্দে,
এরপর ৪৫ মিনিট পর চা, কফি কিংবা চুরুট সহিত
গালিটির ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করুন, যদি
গালিটির তেজস্ক্রিয়া কমে কিংবা বাড়ে, তবে
কেনো এর তেজস্ক্রিয় কমলো বা বাড়লো তা
লিপিবদ্ধ করুন এবং উপসংহার টানুন,
সমস্ত লেখাটি একটি শিরোনাম দিয়ে
একটি সাদা পৃষ্ঠায় লেখুন এবং কয়েক বার পড়ুন,
আশাকরি গালি বিষয়ক আপনার গদ্যাণুটি
আপনার ভেতরের মূল্যবোধকে কিছুটা নাড়া দিবে এবং
অপরকে যখন গালি দিবেন তখন আপনাকে
উচ্চমার্গীয় দৃষ্টিবোধের দিকে নিয়ে যাবে,
আমতত্ত্ব
আজ ভোর থেকে রবীন্দ্রনাথ আমার ভেতরে গুনগুন করে গাইছে,
তাঁর হাত ধরে আমার ঘুরতে ভালো লাগে, কিছু কিছু নিঃসঙ্গ প্রহরে
রবীন্দ্রনাথ আমার সঙ্গী হয়, আমার সংগীত হয়,
হঠাৎ করে শেষের কবিতার কথা মনে পড়লো
মলাট ফুঁড়ে হাত নাড়ালো অমিত,
অমিত বললো, "যে পক্ষের দখলে শিকল আছে সে শিকল দিয়েই পাখিকে বাঁধে,
অর্থাৎ জোর দিয়ে। শিকল নেই যার সে বাঁধে আফিম খাইয়ে, অর্থাৎ মায়া দিয়ে।
শিকলওয়ালা বাঁধে বটে কিন্তু ভোলায় না, আফিমওয়ালী বাঁধেও বটে ভোলায়ও।
মেয়েদের কৌটো আফিমে ভরা, প্রকৃতি-শয়তানী তার যোগান দেয়।"
আমি মুচকি হেসে অমিতকে ফজলি আম খেতে দিই,
অমিত ফজলি আম খেতে খেতে বললো,
"কবিমাত্রের উচিত পাঁচ বছর মেয়াদে কবিত্ব করা; পঁচিশ থেকে ত্রিশ পর্যন্ত।
এ কথা বলব না যে পরবর্তীদের কাছ থেকে আরো ভালো কিছু চাই, বলব অন্য কিছু চাই।
ফজলি আম ফুরোলে বলব না, আনো ফজলিতর আম;
বলব, নতুন বাজার থেকে বড়ো দেখে আতা নিয়ে এসো তো হে।
ডাব-নারকেলের মেয়াদ অল্প, সে রসের মেয়াদ;
ঝুনো নারকেলের মেয়াদ বেশি, সে শাঁসের মেয়াদ।
কবিরা হল ক্ষণজীবী,..."
এই আমতত্ব আমার কবিতার বাক পরিবর্তন করে দিয়েছিলো
আজ থেকে প্রায় দেড় দশক আগে,
আমি টসটসে আম খাই আর ভাবি,
যা হয়েছে তা তো হয়েছেই এখন নতুন ফল নতুন শস্যের আবাদ করার সময়,
যা ছিলোনা পূর্বে এবং পরে, যা আছে শুধু ভবিষ্যতে
এবং ভবিষ্যৎ থেকে নিয়ে আসতে হবে ফল ও শস্যের বীজ,
আকাশে চাঁদ উঠেছে, ভরা পূর্ণিমা, আমি ও রবীন্দ্রনাথ পাশাপাশি হাঁটছি,
হাঁটতে হাঁটতে অন্য কোনো গ্রহে, এই জ্যোৎস্নার রঙ অতি উজ্জ্বল,
দূরের ছায়াপথ থেকে ভেসে আসছে সুর,
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন