কণ্ঠস্বর
ধাক্কা মেরে
ভেঙে ফেলেছি নৌকো
গুঁড়ো হয়ে
আটা হয়ে ঝরেছে সারাজীবন
সেই আটা দিয়েই
রুটি বানিয়ে
মাংসের ঝোলে ডুবিয়ে খেয়েছি
বাড়িও বানিয়েছি
জমিতে ফসলও ফলিয়েছি
এসবেরই ছায়ায়
একদিন আমি হারিয়ে যাব
কিন্তু সেই কণ্ঠস্বর শোনা যাবে
বাচস্পতি
সেই ঈশ্বরওই নেমে আসছেন
ওই মিলিয়ে গেলেন তিনি
তাঁকে ধরে রাখার
কোনও আঠাকাঠি নেই
কোনও ফাঁদ নেই
কোনও খাঁচা বা বেড়িও নেই
বর্ণমালার সমস্ত অক্ষর জুড়ে দিলেও
তাঁকে বাঁধা যায় না
তিনি
নির্বাক বাচস্পতি হয়েই থেকে যান
উপঢৌকন
মিথ্যেটাসত্য হয়ে যাওয়ার ভয়ে
আমি উচ্চবাচ্য করিনি
বা গলাও তুলিনি
অথচ
আমার চোখের সামনে
পোকারা মাংস খুঁটে খেলো
এবং কুচক্রীরা
উপঢৌকন পাঠাল
স্বর্গে
শয়তান
মেরুন রঙের এই রবিশস্যঅর্থাৎ ডাল
সবার থেকে আলাদা
সে স্বাদেও
সবার থেকে আলাদা
আমাদের মেরুন পাঞ্জাবির মতো প্রিয়
এই ডাল
হঠাৎ গাছের টঙে উঠে বসে আছে
তাকে নীচে নামিয়ে আনতে গিয়ে
নাটের গুরুরা
সবাই শয়তান সেজেছে
সে কে
একটা সামান্য গরুযখন ঘাস খেতে খেতে
মুখ তুলে কিছুক্ষণ দাঁড়ায়
আর দু'চারটি ঘাস ঝুলে থাকে
তখন তাকে
সাধক বা দার্শনিক মনে হয়
তার দাঁড়িয়ে থাকার ভঙিমার
গিঁট খুলতে খুলতে
কিছুই খুঁজে পাবেন না আপনি
না দেহ না ভাব
সে কে
চিনতে পারলেন না তো?
সাধারণের দিকে তাকিয়ে দেখুন একবার
তর্ক
একটা সরলরেখার পাশেআর একটা সমান্তরাল রেখা টানলে
বুঝতে পারি
গাছও একটা দেহভাণ্ড
বুঝতে পারি
তারও একটা দেহতত্ত্ব আছে
আমরা বাউলরা
গান গাইতে গাইতে যখন
বিচ্যুত হই
গাছের দেহতত্ত্বের গান
শুনতে পাই না
মূর্খের মতো
শুধু তর্ক করি
নটবর
একেবারে শেষেএবং একেবারে গোড়ায়
জল দিতে দিতে
এ জীবন ফুরোয়
এক হাতে জীবন
আর এক হাতে মৃত্যু নিয়ে
আমরা কি নটবরের মতোই
কোথাও ফিরে যেতে পারি না?
প্রসাদ
যুগে যুগেযেসব স্তম্ভ নির্মিত হয়
তার উচ্চতা মাপতে গিয়ে
সব চোখ ওপরে উঠে যায়
তার কারুকার্য বিচারের সময়েও যা
তার ঐতিহাসিক মূল্য নিরূপণের ক্ষেত্রেও তাই
আমরা যেটুকু অনুগ্রহ পাই
সবটাই ওপর থেকে গড়িয়ে দেওয়া প্রসাদ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন