কাছের ছবি  দূরের ছবি

পূর্ণাঙ্গ ছবিটার পাশ থেকে সরে দাঁড়ান
তুলনামূলক আলোচনায় ফিরতে
চাইছেন কি?

শোভন সুন্দর   বাতিদানে সুবাসিত আলো
ঝরে পড়ছে। দেয়ালে আলোছায়ার
শাদাকালো   বিমূর্ত আঁকিবুঁকি।

টলোমলো পা। সংযত ও অতিথিপরায়ণ
সিঁড়ি। কিছু ছবি দূর থেকে দেখতে হয়
সামনে থেকে দেখার ছবিও আছে।

সরে দাঁড়ালেন বটে   তবে আপনাকেও
মনোরম স্থিরচিত্র মনে হচ্ছে।

দূরের ছবি  কাছের ছবি-----
সবই কি দেখলে বোঝা যায়?
               



নিরুদ্দিষ্ট নক্ষত্র

ব্রহ্মান্ড জুড়ে কমবেশি দশহাজার কোটি
নক্ষত্র-----যদিও এই সংখ্যা আরো আরও
বেশি। এই সীমাহীন মহা সমাবেশে
একটি তারা উধাও। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের
কাছে কোন খবর নেই।

তিনি কোথায়?

নাম-পরিচয়হীন একটি নীল তারা 
মহাশূন্যের   গভীর হিম-আঁধারে অথবা 
হয়তো আলোর আড়ালে 
অদৃশ্য রয়ে গেছে।

কোথাও যেন একটা বাগান আছে
নিরুদ্দিষ্ট নক্ষত্রটি ফুল হয়ে ফুটে থাকে।
                



চোখ ধুয়ে এসেছি

হৃদয়ের কাছাকাছি অফুরন্ত সামুদ্রিক ঢেউ
অথবা অন্তিম সমাচার। যে যেমন বোঝে----
স্পষ্ট বা আবছা!

এই মাত্র চোখ ধুয়ে এলাম   চমৎকার
দেখে রাখি প্রতিদিনের সন্ধ্যা তারাটিকে। 

নির্বাক মাটির রোমকূপে হিমজল শুকিয়ে
এসেছে। সৃষ্টিলগ্নের মুহূর্তগুলি এবং
অবাঞ্ছিত ধ্বংসাবশেষ----ছায়ামগ্ন মানুষের
আত্মকথন। খুব বেশি  দ্রুত হেঁটে যাওয়া
সম্ভব নয়। দিকচক্রবাল যথারীতি
অদম্য গতির বাইরে।

দিকবালিকাদের হাতে হাতে বিশুদ্ধ
স্বর্গীয় গোলাপ।
             



ধুলো

যা থেকে নিস্তার নেই  অর্থাৎ কিনা   ধুলো
এমন কি সামঞ্জস্যপূর্ণ অথবা স্ববিরোধী 
সংলাপের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আপাত নিরীহ
পান্ডুর ধুলো জমে থাকে।

কবিতার অবয়বে যেমন তেমন ত্রুটিবিচ্যুতি
থাকুক বা না থাকুক সমস্ত ব্যবস্থাপনার
পরতে পরতে----ধুলো। এমনকি 
সুর সাধনায়ও অনুরূপ ঘটনা।

স্বরচিত ছবি থেকে ঝরে যায় রং  সেখানেও
এবং এ যেন এক অনিবার্য পরিণতি!
                  




লক্ষণ রেখা

যে কোন ব্যাপারেই ভালো মন্দ বিচার এবং
যা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। আপনাক
কেউ লক্ষণ রেখায় বেঁধে রাখেনি। একটা
অজানা ঠিকানা খুঁজে নিতে 
বড়রাস্তা  ছোটরাস্তা  অলিগলি যাবতীয়
ঘাঁটতে হতে পারে।

মেঘের গায়ে গর্ত খুঁড়ছে নিশিপেঁচা। এ পথে
ভিন্ন আকাশে যেতে হয়।

টেবিলে সাজানো সুস্বাদু ফল।  ফুলদানিতে
মরশুমি ফুল। একটা ফড়িং টুক করে ঢুকে
পড়লো এই চর্চায়। অপূর্ব নকশাকাটা  ছবি!

হাঁকডাক  লম্ফঝম্প  যতই  হোক
লক্ষণ রেখা ভাঙা অতোটা সহজ নয়।
             




নজরবন্দী

টিকটিকির চোখে নজরবন্দী ছায়া। পায়ের
শব্দ একটানা সিঁড়ি পর্যন্ত নেমে গেছে।
গল্পের চলনে সমানুপাতিক গতি 
পূর্বনির্ধারিত নয়-----
প্রতিটি বর্ণ ও শব্দ  অত্যন্ত সংবেদনশীল!

মাত্রাজ্ঞানের অভাবে প্রতিমার ভ্রু-যুগল
কিঞ্চিৎ অসমান। মাটি রোদ জল ও নীল
মিলেমিশে সমগোত্রীয় হয়ে ওঠে  অথচ

প্রতিমার ঠোঁটে আর্দ্রতার অভাব।
              




দেবানন্দ ভট্টাচার্য

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন