এমিলি ডিকিনসন-এর কবিতা

                       
(বঙ্গানুবাদ সপ্তর্ষি বর্ধন)





কারণ আমি মৃত্যুর জন্য থামতে পারিনি

কারণ আমি মৃত্যুর জন্য থামতে পারিনি 
সে নিজেই আমার জন্য থেমেছিল -
গাড়ীতে শুধুই আমরা দুজন -
এবং অমরত্ব ।

খুব ধীরে চললাম - সে জানত কোন তাড়া নেই 
আর আমি আমার সব কিছু রুদ্ধ করলাম আমার শ্রম ও বিশ্রাম, 
শুধুই তার জন্য -

পার করলাম শৈশবের ক্রিড়াঙ্গন,
পড়ার অবকাশে মুক্ত প্রাঙ্গণ -
পার করলাম পরিণত শস্য ক্ষেত্র,
পার করলাম সূর্যাস্তের সরোবর ।

বরং সে নিজেই আমাদের পার করল-
হিমেল পরশ শিহরণ ও কম্পন জাগাল -
কারণ পরণে আমার সূক্ষ্ম মলিন বসন -

আমরা এক কুটিরের সামনে থামলাম 
এক স্তূপ মৃত্তিকা -
দৃশ্যমান নয় যার ছাদ -
শব শয্যায় সজ্জিত ক্ষেত্র 
তখন থেকে এক শতাব্দী প্রায় - তবু আজ
যেন এক দিনের চেয়েও ছোট মনে হয়।
প্রথমে বাহন ঘোড়ার মাথা যেন 
মনে হয়েছিল অমরত্বে ধাবমান ।।







অর্জুন দাস-এর কবিতা

(অসমীয়া থেকে বাংলা অনুবাদ সপ্তর্ষি বর্ধন)






জীবনানন্দের শেষ মৃত্যুদৃশ্য

জীবনানন্দের শেষ চিৎকারটা
রাজপথে আছাড় খেয়ে পড়ে রইল না ।
অজস্র কোলাহলও ঢেকে রাখতে পারল না ।

একদিন দুদিন করে
সাতদিন অবধি চিৎকারটা
শহরটার অলি - গলি বিচরণ করল।

রক্তাক্ত চিৎকারটা একটু পরে শোবার জন্য
নষ্ট হওয়া একটা ক্যানভাসও পেলো না ।
অর্ধেক লেখা উপন্যাসের খাতাটাও
পুরনো বাক্সের ভেতরে থাকলো।
উন্মাদ ও বিষাদগ্ৰস্ত ট্রামটাতেও তো
একটুও জায়গা খালি নেই ।

সাতদিন, সাত রাতের পরে
ছটফট করতে থাকা সূর্যটাও
তার বুকে নিরালায় শুতে দিলো।।


জন্ম আর মৃত্যুর মাঝে থেকে
            অর্জুন দাস
অসমীয়া থেকে বাংলা অনুবাদ সপ্তর্ষি বর্ধন

অন্ধকার একটা ঝুপড়িতে
আমি পুনর্বার জন্ম নিতে গেছিলাম ।
অরণ্যের বুড়ো অশ্বত্থ গাছটা
আমার দিকে তাকিয়ে হেসেছিল ।

আমি সেখানে একটুও থেমে থাকিনি
সেই হাসি আর সহানুভূতি আমি সম্পূর্ণ
অবজ্ঞা করে ছিলাম ।

অন্ধকারের প্রতি এতো মোহ
যে আমি আলোর সব উৎসকে
ভুলে গেছিলাম ।
আর অন্ধকারের প্রাচীন গর্ভে
নিজেকে সঁপে দিয়ে ছিলাম ।
জন্ম আর মৃত্যুর মাঝের অন্ধকারটা
মাতৃগর্ভের অন্ধকারের চেয়েও গভীর ।।








সপ্তর্ষি বর্ধন 

(অনুবাদক)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন