জুঁইফুলের অমলেট
মাঝরাতে রোগা টেবিলটা ফর্সা
চেয়ারটিকে আয়নার আইবুড়ো ভাতের গল্প
বলছে।
রাগি রেজারটি বলল, টেবিল চেয়ারের প্রেমিক।
ওর কথার পরই বেডশিটটি বলতে শুরু করল,
ফ্রিজের সঙ্গে ফুলদানি টেলিভিশনের সঙ্গে
পিয়ানো সোফার সঙ্গে ডিভান আর কাগজের
সঙ্গে কলমের রসাল সম্পর্ক আছে।
সন্ধ্যা নামার আগেই,
প্রেসারকুকারটি ওভেনকে ফিশফিশ করে বলল,
আজ রাত্তিরে চেয়ার আর টেবিল ঘর ছেড়ে
পালিয়ে যাবে।
এ-কথা শোনার পর আফটারসেভের ভয় হচ্ছে।
ওরা চলে যাবার পর যদি কিশোরী লিপস্টিক বাড়ি
আসে,
সে কোথায় তাকে বসতে দেবে আর কোনখানে
জুঁইফুলের অমলেট রাখবে?
লোরকা যদি খুন না হতেন
অতিভুজ বারবার বোঝানোর
পরও লম্ব বুঝতে পারছে না, একটা বৃত্তের ঘরে
কতগুলো দরজা জানালা আছে।
আজ ঈশাবাস্য শব্দটি কুহুধ্বনিকে
ফ্রেন্ড-রিকোয়েস্ট পাঠাল। এতে কি বিছানার
ঢেউগুলি শীৎকার বিপন্ন বলে স্লোগান তুলবে?
ক্রুশকাঠ আর্তনাদ শব্দটিকে মন্দাক্রান্তা
ছন্দের ডায়েরি খুলে দেখিয়ে দিচ্ছে,
লোরকা যদি খুন না হতেন, তাহলে,
a2 + b2 = মরচে পড়া রোদ,
লম্ব × বৃত্ত = ফুলদানির জ্বর,
ত্রিভুজ ÷ সমকোণ = টুথব্রাশের লিরিক, আর
সরলরেখা - বক্ররেখা = টি-শার্টের একাকিত্ব
হয়ে যেত। কিন্তু হলো না।
আফটারসেভের ডাকবাক্সে অ্যাতো হাহাকার কেন?
পা-ভাঙা চেয়ারের মেলবক্স
একাকিত্ব ভাঙার জন্য পারফিউমের
শিশিটাকে মুঠোয় ধরলাম। তার মুখ ফাঁক করার
পরই বুঝলাম, সে এক নির্জন বাতিস্তম্ভ।
এখন স্পষ্ট বুঝতে পারছি,
শুধু সাদা-রঙের মনসামঙ্গল পড়লেই হবে না,
এই বেঁচে থাকাকে বাঘের ডাকে বদলে দিতে,
দিয়াশলাই কাঠির এনাটমিও শিখতে হবে।
অনেকদিন বৃষ্টি না হলে ঘুমগুলো কেন
ফ্রাস্ট্রেশনে ভোগে, তার কোনো লজিক পা-ভাঙা
চেয়ারের মেলবক্সে নেই।
তারা ফোটা রাত্রি।
জেব্রাক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে একটা জিরাফ। তাকে
দেখে আমার রিলকের কবিতা মনে পড়ছে।
আর ট্রাফিকপুলিশ ভুলে যাচ্ছে, হাত
পাতার অ্যালজেবরা।
ফেভিকল-টিউবের দীর্ঘশ্বাস
জোনাকিকে এডিট করে কীভাবে
শঙ্খচিল বানাতে হয় ললিতা দিদিমণি জানে।
আমার জানালার সামনেই তাঁর শ্রীকৃষ্ণ
নামে জানালাটি।
তবু গলা বাড়িয়ে কোনোদিন জানাই হলো না,
বেদানার দানার মধ্যে কে ধৃতরাষ্ট্র কে দুঃশাসন,
কে কর্ণ আর কে দ্রৌপদী।
আমি না হয় জিজ্ঞেস করিনি,
তিনিও তো বলতে পারতেন, যশোদার জন্মদিনে
কে বেলুন ওড়ায় কে কত্থক নাচে আর কে
মেঘমল্লার গায়।
দুটো জানালার মাঝে সারাদিন কুয়াশা ঝরে,
কেউ দেখতে পায় না।
শুধু টেবিলের ওপর ফেভিকলের টিউব দীর্ঘশ্বাস
ফ্যালে...
সোনাগাছির ওমরখৈয়াম
বিষদাঁতগুলো কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না,
ওরা কি পেরেকের গুরুকুল থেকে দীক্ষা নিয়ে
এসেছে?
একটা কয়েনের কোন দিকটায় আলো বেশি,
আজ সেই প্রশ্ন অবান্তর,
কেননা মেঘগুলো চাতককে বন্ধু-তালিকা থেকে
বাদ দেবার পরই,
গোলটেবিলে চৌকো কথা শুরু হয়েছে।
ওই, ওইতো সোনাগাছির ওমরখৈয়াম আসছে।
ওঁকে জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে,
ই.মেল থাকলে এ.মেল বি.মেল সি.মেল অথবা
ডি.মেল নেই কেন।
টম্যাটোর বাউলগান শুনে যেসব দাঁত অহিংস
হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,
মর্গের গন্ধ বিষয়ে তাদের ধারণা অফহোয়াইট।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন