সংবাদ

আমার তোমার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করছে, 
ক্লান্ত শরীর স্থবির প্রায়
তবুও আমি বলব
মন্দ্র উচ্চারণ 
ঘোর লাগা শব্দগুচ্ছ গুলো,
 ছাপ্পা ভোট বুথ দখল সন্ত্রাস পেরিয়ে
শব্দের জাগলারি আর সার্কাসের দর্শকের ঠাই দাঁড়ানো সেসব পেরিয়ে
আমি ঘুমোতে চাই।
আমায় ঘুম পাড়িয়ে দাও
কাল আমি জাগতে চাইনা আর।






মানস দাম্পত্য

কখন ফিরছ? 
একা ভালো লাগছেনা,
যেদিন গেছিলে, ওদিন যা রান্না করে রেখে গেছ, তাইই দিয়ে দুদিন চলেছে।
রান্না ঘরে জমানো বাসন, খাবার টেবিল এটো কাঁটায় নোংরা;
এলোমেলো ঘর ও জীবন। 
ঘরময় ছড়িয়েছি সিগেরেটের টুকরো, ছাই জমেছে পাপোষের কোন ঘেষে,
জানি বকা দেবে, সিগেরেটে বিছানার চাদর পুড়িয়েছি অখেয়ালে।
তবে ঘুম থেকে উঠে গাছ গুলোয় জল দিয়েছি নিয়মিত রোজ,
ছায়াঘন হলে রোদ মাখাতে সরিয়েছি-নড়িয়েছি মুন ক্যাকটাস আর কারনেশন টাকে।
চারদিনের খবরের কাগজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এঘরে ওঘরে,
হোটেলের তরকা-রুটি, দিনে হোম ডেলিভারির ট্যালটেলে মাছের ঝোল ভাত, আর গুচ্ছের মনখারাপের সাথে দিনাতিপাত।
হ্যা ওষুধ খেতে ভুলিনি কখনও।
পর পর দুদিন বৃষ্টি হয়েছে খুব, তারে মেলে দেওয়া তোমার একটা জাফরানি রঙের ওড়না, শুকিয়ে গেলেও তুলতে ভুলে গেছিলে তুমি। জানো আমিও ওকে তুলিনি,
বৃষ্টি এলে আমি আর ও খুব ভিজেছি সঙ্গোপনে। কখন ফিরছ জীবনে?






অনুতাপদগ্ধ জাতক

সেই মেষ পালক জন্মের কথা,
তুর পাহাড়ে আলো নেমে এলো যখন,
শুভ্র দ্যুতি মেখে গেলো চোখে মুখে ও সর্বাঙ্গে, 
মহাশ্বেতা সে অগ্নি আবাহনের ঐশী উদ্ভাস
স্পর্শ করল বিহ্বল চোখ।
'প্রকাশিত হোক' বলে জলদগম্ভীর সম্মোহনী দৈব নির্ঘোষ;
অনিত্য চরাচর থেকে কুড়িয়েছিলাম প্রস্তরখন্ড,
খোদিত প্রস্তরলিপিতেও দেখি
জ্বরা-মৃত্যু-সন্তাপ আর উদগত কান্না শোক।
জীবন বলতে এটুকুই পেয়েছি,
যেন দূরান্তে মিলে যাওয়া শেষ ট্রেণ 
আর অবধারিত ষ্টেশন।
ফেলে রেখে যাওয়া শালপাতার ঠোঙা, ধূলা বালি
আর অনুতাপদগ্ধ জাতক।
তুমি ভালো আছ তো নারগিস? 







নির্জন সংলাপ

-সে হাতে ঝরে পড়ি যদি?
- আগলাবো দুহাতে, জুড়ে দেব নিরবধি।
-যদি হই তরল জল, গড়িয়ে যাই, গলে যাই আঁজলা থেকে?
-নদী হব, তনুপট দিয়ে ধরে রাখব, শেষ জলবিন্দুটি।
-মিশে যাই যদি, বালু রাশি ও অহল্যা পলিতে?
- শরীর খুঁড়ে, হৃদয় উপড়ে নাব্যতা দেব লোহু-শোণিতে।
- তবে যদি স্রোত ফিরে পেয়ে, হই মোহনামুখী ফেলে রেখে নদিটীকে?
-অসুবিধা নেই, জনপদ আর লোককথায় প্রত্নচিহ্ণ রবে, 
জিজ্ঞাসা হবে জনে জনে,
যুবক জারুলের স্রোতস্বিনী কে।







রুহার আম্মুকে (৪)

ওরা ছিড়ছে খুঁড়ছে কাটছে,
অনন্তকাল ধরে টুকরো করে দিচ্ছে যাবতীয় মায়াবাসা।
আমি স্থাণু ঋজু দুহাতে আগলাচ্ছি শবদেহ খানা।
যদি ক্লান্ত হয় ওরা,
যদি বিরতিতে খানিক চোখ বুজে আসে;
তুমি জেগে উঠো সেইক্ষণে,
অধর ওষ্ঠে বৃষ্টিদাগ পিয়াসে।
জেনো আবার মারবে,
খন্ড-বিখন্ড করবেই নিশ্চিত, 
ছড়িয়ে দেবে চরাচর মর‍্যুৎ ও ব্যোমে, 
পুনঃ দ্যোতনায়
রুহের নির্যাস মেখে তুমি;
স্বাহা হয়ে থেকো হুতাশন হোমে।







নীল গৌরব মামুন 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন