নিকু দুয়ারা


নিকু দুয়ারা  অসমের লক্ষ্মীমপুর  জেলার নিবাসী। রাজনীতি বিজ্ঞানের  ছাত্ৰ, স্নাতকোত্তর ডিগ্ৰী সম্পূৰ্ণ করেছেন। নিকু দুয়ারা অনেক  বছর  ধরে  প্ৰবন্ধ এবং কবিতা লিখে চলেছেন।








ভালোবাসার মেয়েটিকে চিঠি

(মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ– বাসুদেব দাস)





একটি যুদ্ধ শেষ হয়েছে
ওরা আমাদের শরীর থেকে
মাথাটা আলগা  করে চলেছে।
আমি দশ হাজারটা শ্মশানের মধ্যে অপেক্ষা করছি
আমার মাথাটা ওরা বস্তার মধ্যে ভরে নিচ্ছে।
তোকে চুমু খাওয়া আমার ঠোঁট দুটি,
তোকে জড়িয়ে ধরা আমার হাত দুটি,
এই সমস্ত কিছুই ছুঁড়ে দিচ্ছে
ক্ষুধার্ত কুকুর গুলির মধ্যে।

যুদ্ধটা শেষ হল যদি
পুনরায় তোর কাছে ফিরে যেতে পারব,
আবার এক ঝাঁক বৃষ্টি হবে,
আবার একটি গোলাপ ফুল ফুটবে।

বোধহয় আবার একটি যুদ্ধ হবে।





এই যে তোর জন্য বহন করে এনেছি একটা লিলি ফুল।
এই যে আমি অপেক্ষা করছি একটা ডিহাইড্রেটেড পৃথিবীতে
আমার মাথার কাছে বালির স্তূপ।

গতরাতে একটি কিশোর থেমে থেমে কাঁদছিল 
গুলি লেগেছিল

আজ কিছু নেই
বিরাট শূন্যতার  মধ্যে আমি বসে আছি
 এই যে তোর জন্য নিয়ে এসেছি একটা লিলি ফুল।





প্রেমে প্রতিবাদে আমরা লুকিয়ে রাখি
হাতগুলি
কেবল অর্গাজমের জন্য হাত প্রয়োজন

একটা হাত ছিল ঈশ্বরের
উড়ে আসা একটি বর্ণান্ধ বিশপের সঙ্গে আমি 
পার করলাম নিরলস রাত গুলি।
ঐ যে ছাতিম ,
আম হলে একটি রাজনৈতিক
কৌতুক বলতে পারতাম।

একটি দীর্ঘ স্লোগানের শেষে
একঝাঁক হাত ওপরে উঠেছে।

আমার একটি হাত নেই।
অন্য হাতে আত্মসন্তুষ্টির বৃথা
প্রচেষ্টায় পার করেছি জ্যোৎস্না।
প্রেম এবং  প্রতিবাদ-
দুটোই এই মুহূর্তে আমি সরিয়ে রেখেছি ।
চারপাশে যুদ্ধের প্রস্তুতি,
যুদ্ধে নিশ্চয় অন্য হাতটির প্রয়োজন
হবে।





বিশ্বায়নের শেষ রাতটা কার সঙ্গে
কাটাব?
কবিতা তোরই শপথ 
আজ কেবল ধোঁয়ার মধ্যে আমি ভেসে 
বেড়াচ্ছি

পরিচিত রাস্তাগুলি শেষ না হওয়া একটি 
যুদ্ধের পথ
জলপাই গাছের গোড়ায় পড়ে আছে কার 
মুণ্ডহীন মৃতদেহ?

প্রতিনিয়ত আমরা যুদ্ধ করছি 
আমাদের রক্তে লেখা হয়েছে একটি ক্লাসিক
আমাদের মাথাগুলি খসে পড়ছে,আমাদের 
হাতগুলি কেটে নিয়েছে।
দীর্ঘ রাতগুলি আমরা হিসেব করেছি 
মৃতদেহগুলি 
দিনগুলি আপাতত ছোট-
যুদ্ধের আখড়া কিম্বা একটি যুদ্ধ।





বন রোডে দাঁড়িয়ে একটি মেয়ে হাত 
নাড়ছে
আকাশপথে উড়ে যাচ্ছে তিনটি 
যুদ্ধ বিমান 

সোনামা ,আমার এক হাতে একটি 
গোলাপ 
আর অন্য হাতে গুলিভর্তি একটি 
বন্দুক।
সোনামা,গতরাতে তোকে বড় 
মনে পড়ছিল
আজ আমি রক্তবমি করে মরছি 
আমার মৃত্যুর জন্য পথ চেয়ে আছে আমার
ভোকাতুর সতীর্থরা।

সোনামা,যুদ্ধটা শেষ হলেই আমরা গান 
শুনব
সীমান্তের ওপার থেকে তুই হাত 
নাড়াবি,একটা হাসি হাসবি,আমি চলে 
যাব তোর কাছে একা।




বাসুদেব দাস (অনুবাদক)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন