মামণি দাস
অসত্যর শেষে
অসত্যই আমাকে বলল
চোখ বন্ধ করে দেখো
অন্ধকারের মতো ফুলগুলো কেমন ফুটে উঠেছে
অন্ধকার পার হওয়া
আলোর চমকে যা দেখা যায় না
আরাম কেদারায় বসে থাকতে থাকতে
অন্ধকারে আমার চোখ দুটো সম্মোহন করল
কানে গুঁজে দিলো ঝরে যাওয়া শিমুল
অন্ধকূপে সমাগত ঋতু দেখে আমি বিচলিত হলাম না
আগুন পার হলাম, জলে হাত ভিজিয়ে দেখলাম
চোখের পাতায় ডুবতে চাওয়া সূর্যকে বিদায় দিলাম
আমি বিচলিত হলাম না
ফুলে ওঠা ঢেউ দেখে
তারা ফুল ফুটেছে
এটা অন্ধকার না স্মৃতি
আমি প্রমত্তের মতো অসত্যের কথা শুনলাম
হাতড়ে হাতড়ে দেখলাম হারিয়ে যাওয়া ছায়া
ছায়া হারালো, তথাপি আলো খুজতে গেলাম না
সত্যের সঙ্গে যুদ্ধের শেষে অসত্য যে বলল
আমি অস্বীকার করতে পারলাম না।।
অবচেতনার পরিধিতে
গত রাতে কার সঙ্গে কি কথা বলেছিলাম,
আমার মনে নেই।
আশি উর্ধ্ব লোকজন বলেন ভালো থেকো!
বহু বিদীর্ণ সময় আমরা পার কের এসেছি
আমি একদৃষ্টে তার যাওয়া দেখে গেলাম।
সেদিনের প্রতিবাদী সমদলটার সাথেও
আমি কিছু কথা বলেছিলাম
আমার স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্যে।
বাজারের কথা, দেশের কথা, দ্বন্দ্ব - বিদ্বেষের কথা,
আমার চালাক প্রতিবেশীর সাথে বলেছিলাম ,
ফাগুনের কথা, আমার বন্ধুর সঙ্গে।
খসে পড়া নিজের বাহুতে নিজের হাতেই ধরে উদ্ধার করেছি
এই কথা আমি নিজের সঙ্গে বলেছিলাম।
আর সহজাত চেতনার অবেচতন সমেয়র
এই কথাগুলো সামগ্রিক বিশ্লেষণ করতে
প্রতি রাতে আমি কারুর সঙ্গেকথা বিল।
গত রাতেও বলেছিলাম
কিন্তু কাছে কে ছিল একেবারেই মনে নেই।।
হতাশা নিয়ে একটা কবিতা
হতাশা থেকে উঠে দেখলাম
আমার কাছে আরও এক হাজার হতাশায় ভোগা
মানুষ নিজের মাথাটা খুলে নিজেকে দেখেছে।
গনগনে আঁচে সেকেছে নিজের পা
আর আপোন মনে বসে আছে ।
হতাশায় ভোগা মানুষগুলো খুব সরল আর কঠোর ,
নিজেই নিজেকে আঘাত করে
সকালে ফুলের পাশে শুয়ে থাকতে পারে ,
পতনকে মৃত্যু আর নেশার মতো
বিলাসকে আনন্দ বলে ধরে নিতে জানে।
আমার কাছে এক হাজার মানুষের মধ্যে
নয়শো জন মৃত আর একশো জন জীবিত,
এই ভাগাভাগি আমি নিজেই করেছি ,
আমার চলাচল করা রক্তের সাথে
তাদের ফ্যাকাশে মুখগুলো তুলনা করেছি আর
নিজেকে জীবিত বলে ভেবেছি ।
আমার ঠান্ডা হয়ে যাওয়া পায়ের সাথে
তাদের হাসির ছবিগুলো তুলনা করেছি
আর করুণা করেছি।
হতাশায় ভোগা প্রতিটা ব্যাক্তি
বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে মনের ভেতরে আর
একটা সময়ে আমার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে ।
আমি হলাম দর্শক আর অনাহত নিক্ষেপকারী।
প্রত্যেক চারজন মানুষই এক একটা ক্যারামে ব্যাস্ত
আর লাল গুটির পর আবার
একটা ফেলতে না পারার উত্তেজনায় চিৎকার করে উঠেছে।
এই মানুষগুলোর সঙ্গে বিভেদ আছে তাই
একা চোখ বন্ধ করে
একটা বরফের জল ঝড়ার দৃশ্য রোমন্থন করতে থাকি।
হতাশায় ভোগা প্রতিটা মানুষই আমার সময়সাপেক্ষ বন্ধু,
খেয়াল করলে দেখা যাবে আমরা একটা
আইরনিক খেলা খেলি আর
একে অপরের মশকরা করে মজা পাই ।।
অ্যান্টি ফাল্গুন
(১)
ভোরের বাতাসে ঝরাপাতা গুলো সব দৌড়াল
ধুলোয় গড়াগড়ি খেয়ে মরতে থাকে রাঙা
(২)
বৃষ্টি প্ৰত্যাহ্বান জানালো ফাল্গুনকে
মদারের পাপড়িতে তাই ঝুলে থাকে জল
(৩)
যতো ফ্যাকাশে হয়ে আছে আকাশ
ততোই তারে লেগে থাকা বৃষ্টি চমক
(৪)
রাস্তা তুমি পার হয়ে গেছো আর আমি
কাছে ফুটে থাকা ফুল থেকে চুইয়ে পরছি ধুলোয়।
সপ্তর্ষি বর্ধন
(অনুবাদক)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন