আফজল আলি-র কবিতা




শব্দ-ঋণ নামের

মন খুব খারাপ,  চেয়ে দেখো শ্বাস কষ্টের গভীরে নিমজ্জিত হচ্ছি
জীবনকে ভালোবেসে জীবন থেকেও চলে যাচ্ছি দূরে
ভাবনাগুলো এখন আপাদমস্তক ঢেউ
প্রতিটা অতীত থেকে উঠে আসে চিৎকার
কেন যে এই প্রশাখার যত্ন , মদ  ও  সিগারেট অমীমাংসিত রাখে
শব্দ-ঋণ নামের এক মেয়ে , আমি ছুটে গিয়ে দেখি
হাওয়া শূন্য,  খালি বিছানা পড়ে আছে
দখল নেওয়া নতুন তাকে বিবর্তনে দুষছে
কী করি এখন , বুকে তো কান্নার বিচ্ছেদ ঘটিয়েছ
সময় সরে যাচ্ছে ,
পরিপূর্ণতা থেকে পিছিয়ে আরও কি হাজার বছর
অপেক্ষার মাঝে যন্ত্রণা সমাহিত হয়
দেখো আমি পুনরায় বেঁচে উঠছি
সেই পাঁচ হাজার বছর কোথায় ঢেকে দিলে
রাস্তাগুলো কি তেমনই এবড়োখেবড়ো  আছে যা ছিল মিনার পর্যন্ত 





হাওয়ার কাশ্মীরে

মনকেমন লাগছে ভীষণ
না জানি কোন উপোস-পাড়ায় পড়ে আছে মন
তোমার আদরে ডুবে যেতে চাই
সে এক অদ্ভুত ঘোর
দশদিক জুড়ে উঠে আসে নাম 
নিমজ্জিত সারাক্ষণ
মাথার ভিতর বুকের ভিতর শ্বাসের ভিতর
এক অদম্য টান শরীর টিপে রাখে
সেই মেলোডিয়াস সন্ধা সেই হারিয়ে ফেলা রোদ্দুর
এই তো ফুলগাছ তুমি,  অগণিত সময়
X ray দিয়ে দখল নিচ্ছো সব অবয়ব
তীব্র আকাঙ্ক্ষার ভিতর একটা gold flake slk
সব পবিত্রতায় এক অদ্ভুত ঘোষণা
কেমন জল ঢেলে দিচ্ছো,  কখনও উজ্জীবিত
কখনও শান্ত সৌম্য হাতে জুড়ে দাও হৃদয়
সৌন্দর্যের অবাক দৃষ্টি
তাকে তো দেখেছি হাওয়ার কাশ্মীরে আর বিভাবে
হারিয়ে যাওয়ার দক্ষিণেও কি ছিলে না,  নন্দিনী 





Black horse

ভালোবাসার রং কী হতে পারে এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে ট্রেনে উঠলাম
ট্রেনের মধ্যে অনেক মানুষ
প্রতিটা মানুষই এক একটা জীবন
আর এক একটা জীবন মানে সুখ দুঃখ যন্ত্রণা , পাওয়া , না-পাওয়া
এই যে দুদিন ধরে তীব্র যন্ত্রণায় ডুবছি এর মূলে কি সেই ভালোবাসা
আমার ভালোবাসার রং লাল থেকে ক্রমশ কালো হয়ে উঠছে কেন
বোরখা পরা মেয়েটি ট্রেনের মধ্যে  নির্জন
একটা বাঁক আমি অতিক্রম করতে চাইছি
মেলামেশা করলে বোঝা যায় কে কতটা গভীরে থাকে
যখন আপাদমস্তক ডুবে যাচ্ছি
তখন আগের ভালোবাসা আমাকে টেনে তুলতে পারছে না
বিষন্ন চাহিদার ওপারে দাঁড়িয়ে আছে একটা মুখ
ভালোবাসা তেমনই প্রকট
তার সাদা সবুজ  heart চিহ্নগুলো ভেসে ওঠে
একটা লাল চিহ্নের জন্য আমার passion  এবং যখন পেয়েও যাই
তখন black horse আমি কতটা powerful হয়ে উঠি
গন্তব্যে চলে আসে ট্রেন,  একটা escape velocity দরকার এখন 





ম্যাডাম-জি

চাউমিন ফুচকা এগরোল মোগলাই বিরিয়ানি , ম্যাডাম-জির এগুলো খুব প্রিয়
অর্থাত আমি দেখতে পাচ্ছি না যে শীত কিছুটা ব্যালেন্স রাখছে
কিন্তু গতকাল ছিল বুধবার , ভীষণ ছটফটে এবং ক্লান্তিকর
আজ অফিস থেকে ফেরার সময় ম্যাডাম-জিকে খাওয়ালাম
পারসেল করলাম কিছুটা
এখন জ্যোৎস্নারাত,  আমার হৃদপিণ্ড ধকধক করছে
আমি কিছুতেই স্যালাড বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে পারছি না
ম্যাডাম-জিকে ভালোবাসি বললেই রেখে যান
বলে , আগে চাঁদে গিয়ে একটা সমকোণী ত্রিভুজ আঁকতে হবে
তারপর উবের চড়ে ঘুরতে হবে কলকাতা
তারপর না হয় সেলফি তোলা
আসলে ম্যাডাম জি এক নিরাপদ দূরত্ব যাকে স্যালাইন দিতে হয় না
শীত অবসন্ন হচ্ছে , আমার গন্তব্য এখন মালঞ্চ
এ সময় খুব একা লাগে , বিরহ যন্ত্রণা শেষ করে দিচ্ছে ভিতর
আগামীকাল,  oh yes , আগামীকাল-ই আমাকে উঠে দাঁড়াতে হবে
কারণ আমি জানি এই জার্নির শেষে পড়ে থাকবে শুধু একটা গতকাল 





Absurdity

মাঝে মাঝে কিছু ভুল মানুষের সাথে সময় কেটে যায়
ভুল চিন্তা ভুল সোচ এবং ভুল পথে
নিজেকে বিলিয়ে দিতে দিতে অন্ত:ক্ষয়ের জিজ্ঞাসা চিহ্ন
হয় হয় , এমনও  হয়
কারণ নিজেকে বুঝতে না পারা হল মানুষের এক রোগ
অথবা বুঝেও তা নিরূপণ না করা
কবিতায় কথাগুলো আমি কেমন সোজাসাপ্টা বলি
তা এই জন্য যে ভাষাকে আমি চাবুক বানাতে চাই
পিছিয়ে থাকা সময়ের সাথে লড়াই করেছি অনেক
অনেক কবিতা লিখেছি
খুবই আনপর আমি সমর্পণ করেছিলাম
মানুষ তো এমনই,  দোটানার উপর বন্দুক চালায়
আত্ম-সম্মান আভিজাত্য  এ সব ক্ষীণ হয়ে পড়ে
আজ আবার সমুদ্রের কাছে যাব
আবার কালবৈশাখীর কাছে গিয়ে বলব
প্রেম কি এমনই ধ্বংস
জীবন কি আদপেই এক absurd , meaningless really 






এককাট্টা হচ্ছি এখন

মাঝে মাঝে মনে হওয়ার মতো কিছু থাকে না
তখন ইচ্ছে করে সব ছিঁড়ে ফেলি
এই টুকরো অভিমান , রাগ , অভিযোগ , কাছে চাওয়া
মানুষের জন্য একা একটা লড়াই থাকে
সে লড়াই তাকে লড়তে হয় একাই
অধিক চাওয়ার সাথে চলে যাওয়ার একটা সম্পর্ক
আবেগ বরাবরই চিট করেছে কারণ অনুগত ছিল না সময়
বুকের যন্ত্রণাও থেকেছে প্রবল
সব ছিল অথচ যারা না-থাকার তারা আর নেই
প্রবল প্রতিঘাতের পর ভেঙে যায় ঢেউ
দরজার বাইরে এখন কেমন ঝাপসা মনে হয়
শীত ভীষণ ভাবে নিঃসঙ্গ করতে থাকে
তবু কিছুতেই হেরে যেতে রাজি নই
নিয়তির বিরুদ্ধে , না-পাওয়ার বিরুদ্ধে
একটা শেষ অসম্ভব টলিয়ে তবেই যাব , এককাট্টা হচ্ছি এখন 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন