অনুপ মণ্ডল--এর কবিতা




বিরহকালীন জ্বর 

আকাশের তলপেট থেকে কেবল নীলের ওমটুকু নিয়েই
শিয়র রচনা করে রেখেছি
জলপটি থেকে গড়িয়ে নামছে জলের শেকড়
কপালের দু'পাশে দুটোমাত্র ঘাট;বাঁজা কলাগাছ
পালা করে ডুবছে কখনো সূর্যাস্ত কখনো সূর্যোদয়

বিকেলের জানালায় এসে বসল সম্মানিত রোদ
ঘোষণা ছাড়াই বুঝি বন্দর পরিত্যক্ত হল আজ
আঁধারে ভেসে বেড়ায় পেটফোলা সাদা মাছ
তলিয়ে যেতে দ্বিধা নেই তবু গোপন সিন্দুকে
ইতিহাস নড়েচড়ে ওঠে
এক চোখে ঠুলি,নৌকোয় ঘুরে বেড়ায় জালিম শেখ

থার্মোমিটারের কাঁধেই হাত আমার
জ্বরের ঘোর;সারা আকাশ জুড়ে সাদা পালকের ওড়াউড়ি
আপাতত দু'একটা সেলফি তো তুলে রাখি
জানি কোলাহল এড়িয়ে তবেই সমাপ্ত হবে বিহঙ্গউৎসব



পালক 

বিরহবিচ্যুত কান্না ফেলে তাপ সহ পালক উড়ে যাচ্ছে
আমি ও আমার পাখি থুতুতে ভিজিয়ে ফেলেছি
প্রস্তরীভূত আকাশের আকন্দভাঙা মুখ এবং
এক অন্য আকাশের গূঢ়তম মাতৃভাষা
তবু নৌকো বোঝাই হয়ে ভেসে আসে কান্নার ধ্বনি
হলুদ আলোয় ফেরে সবৃন্তক বিরহ
কান্না মোছার পর সব দেহই কামশক্তিহীন
চলৎশক্তিহীন পথে দুগ্ধমেশা বিমল আঁধার
আমাদের মৃত চামড়ায় ঘষাঘষি করে
রোদ তার চশমা ইতিমধ্যে লাল করে তুলেছে
প্রতিটা ঝোপের আড়ালে জন্ম নিচ্ছে
জোড়ায় জোড়ায় বাঘের চোখ
পালকের ওপর পালক।পাখির ভেতরেও এক পাখি

পেঁজা তুলোর কাফনে জন্ম নিচ্ছে পালকের উপসংহার



সমুদ্রকাঁথা 

দগ্ধ জীবনের তলা থেকে টেনে বের করে নেওয়া হচ্ছে
কাঁকড়াবিছেদের গান ও ইতিবাচক আয়ুরেখা
শ্রমকাতরতার সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিচ্ছে
নোনায় পাওয়া আমার বৈকালিক গতর
সম্পর্কের ওঠানামায় পরের পর ফোঁড় তুলছে ঢেউ
সমুদ্রকাঁথায় গল্প বোনা হচ্ছে
কোনও এক ভিনদেশী নীল বর্ণ নাবিকের

বৃষ্টি চেতনায় জল ও আকাশের মাঝখানে লগ্নরেখা
বিগ্রহ নেই বিরামচিহ্নও নেই
নাবিকের কাছে আকাশখানা খুব কাছের মনে হয়
তুমুল বৃষ্টির মধ্যে
নিঃসঙ্গতাকে জাহাজের খোলা ডেক ভেবে
বকলশ ছেঁড়া একটা কুকুর শুধু
নোনা জলের কাছে ছুটে ছুটে যায়;ফিরেও আসে পরক্ষণে


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন