চন্দ্রদীপা সেনশর্মা-র গুচ্ছ কবিতা 





হেমন্তের কান্না

যুবক দীপাঞ্জনের চারুতায়
সেতারে আছড়ে পড়ছে রাগ হেমন্ত

আর্দ্র হয়ে উঠছে চোখ

ঋতু বা রাগ আমি কি ঝুঁকে পড়ি
হেমন্তের প্রতি ধ্যানমগ্নতায়

হেমন্ত প্রত্যয় এবং প্রতারণার
অনুশাসন ভাঙার বিমূর্ত মুহূর্ত
পাতাঝরার বেদনা

চোখের কোল বেয়ে ঝরে পড়ছে
সরগম
------------
৮ নভেম্বর, ২০২১, রাত ১১.৪০





মীড় ছুঁতে চায় হেমন্তমেপল

হেমন্ত, আমাকে
গান শোনাও পাতাঝরার

মেপলের স্বপ্নে লালচে চোখ খুঁজছে
বিরহরাতের দীর্ঘ বিনম্রতা
আগুন হতে হতে যে বারুদ ছাই হয়ে গেল
টেথিস সাগরে তার থেকে কি জেগেছিল প্রথম প্রাণ?
আরও পরে সভ্যতা বাঁধল তাকে সুর প্রলয়ে
প্রলয়ের উষ্ণতা প্রয়োজন, রাগ হেমন্ত
বড়ো ঐকান্তিক বিষাদবিধুর
স্ফটিক হয়ে যাওয়া কান্না
গলছে, মেপলে শিশির হয়ে ঝরছে...

-------------
৮ নভেম্বর, ২০২১, রাত ১২





ওরে মন

হেমন্তকাল
বিষণ্নতার সব দায় একাকী আমার

একে কি বন্ধুতা বলা যায়?

হেমন্তরাত একদিন জুড়ে দিয়েছিল
ছোট ছোট পত্রাবলি অতীত ব্যথা আলাপন

আকাশ গাঢ় হচ্ছে কুয়াশায়, হিমেল বাতাস
কাচের জানলা মাখছে বিন্দু বিন্দু শবনম

ভোর এসে মুছে দেবে জানি
মুছে যাবে বাতাস, ছিন্নপত্র অতীত
আংশিক খোলা জানলা, বাইরে

স্তব্ধ হাহাকার
-----------
৩১ অক্টোবর, ২০২১, রাত ৯.১২





হেমন্তপুতুল

পুতুলখেলার দিনগুলো এখনও
বাতাসে দোল খায় শিশির মেখে
কী আশ্চর্য ব্যথাবেদনার
পাতাঝরা হেমন্তশরীর

ব্যথা অন্তর্লীন এবং বহিরাগত
ভারত এবং ইন্ডিয়ার দুমুখো তুলাদণ্ড
বার্ধক্যের অন্ধত্বে ডুবে আছে
প্রৌঢ় বলে আত্মস্থ করছি অন্ধত্ব ধীরে ধীরে

তবু পুতুলখেলার দিনগুলো নিজে নিজে
বাজতে থাকে, হেমন্তধানের গন্ধে শিহরিত হয়

শীত
আসুক না, ক্ষতি কী, সব শীত আগুনে যাবে...
------------
১৫ নভেম্বর, ২০২১, দুপুর ২.২০





জরা

আর্দ্রতা টেনে নিচ্ছে বাতাস
চামড়ায় টান পড়লে স্পষ্ট হয় বলিরেখা
প্রতিটি রেখায় লুকিয়ে আছে অতীত
মন্ত্রগুপ্তি
প্রবঞ্চক রাত
দুর্যোগের অসীম লঙ্ঘন করা দিনগুলো

রেখা সরল বক্র হেক্সাগন অক্টাগন
মধুশুন্য মৌচাক, কুইন বী একাকী
তার সৈন্যরা হারিয়ে গেছে প্রবল ঝড়ে
লোভ স্বার্থপরতায়
আগামী শীত সামলানোর দক্ষতা আয়াসসাধ্য
কি না বুঝে নিতে সে চোখ রেখেছে

উত্তরের হাওয়া বেশ জোরালো
ময়েশ্চারাইজ করো নিজেকে...
-----------
৮ নভেম্বর, ২০২১, সকাল ১১.৪৬

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন