রিতা মিত্র-র গুচ্ছ কবিতা
অন্ধকারের দৈর্ঘ্য প্রস্থ
অন্ধকারের দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপতে মাপতে ছুঁয়ে ফেলছি আলোর সীমানা
গাছেরা ধৈর্য হারা হয়ে উঠলে দরজার কড়া নাড়ে পর্ণমোচী ঋতু
দুধ পুকুর কারুর খিদে মেটাতে পারে কি না জানি না
জানি সব ব্রতকথার পর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে তেল সিঁদুর ছেড়া ফুল
আতব খই এ ভরে ওঠে কোচোড়
তাই পাষাণ এর চিবুকেই চুমু আঁকি।
মেঘের সেতার
আকাশের বুকে মেঘের সেতার
ভাব জমাচ্ছে পাখির ডানা
রাখালের ঠোঁটে আড়বাঁশির স্পর্শ
সুরে ফুটে উঠছে প্রেম পদাবলী
মন্দিরের গায়ে টেরাকোটা কারুকাজ
গোধূলির মতো মিষ্টি স্মৃতি যেন
ভাঙা রাসমঞ্চে আজও পুর্ণিমার আলো
অশরীরি আঁকছে ঘুঙুর শব্দ
মেঘ জলে ধুয়ে রাখছি আদর চিহ্ন
জারি আছে অবুঝ মনের চোর পুলিশ খেলা।
সন্ধি রেখা
ঘুঘু ডাকের অলস দুপুর
চোখের পলকে ভাত ঘুমের রেস
চৌকাঠের ওপারে আঁকা সন্ধি রেখা
মজে আছে মন ফিরে যাওয়ার শর্তে
যতবার হাসতে চেয়েছি পাঁজরের শরীরে হিমেল বাতাস
জাফরানি আঁচল গুটিয়ে নিয়েছে
সন্ধার আকাশ
এরপর পা ছড়িয়ে কাঁদতে বসবে জন্মান্ধ রাত
যে রাতের ঘাটে কোনো নৌকা নোঙর ফেলেনি কোনদিন।
এভাবেও বলা যায়
এমন ভাবেও বলা যায়
এভাবেও বলে যেতে পারতে
' ফিরব একদিন আজ তবে আসি'
তারপর মহাশূন্যে ঝুলে থাকত একটা প্রশ্ন চিহ্ন
অদৃশ্য এই প্রশ্ন চিহ্নের চারপাশে ঘুরপাক খেতো আমার নিজস্ব ব্রহ্মাণ্ড
সময়ের তিরতির বয়ে যাওয়া নদীতে ছিপ ফেলে অপেক্ষা করতাম অনন্তকাল
আর বয়সের শেকড় সেঁধিয়ে যেত মাটির বুকে মন্ত্রপূত রসদের সন্ধানে
অমৃত লোভের আনন্দে শুস্ক অধরে
লেগে থাকতো এককণা নির্মল হাসি।
রুট ম্যাপ
ফেনিল ঢেউ এর মধ্যে নীল বড়ো ব্রাত্য
ধোঁয়াশার বুকে কে আঁকবে প্রশ্ন চিহ্ন
রাতের বুক পকেটে কতটা নাব্যতা লুকিয়ে আছে
এখনও উজাগর হল না আর
ছিপের বাজার গরম
ভাবনারা হামাগুড়ি দিতে দিতে কখন যে দৌড় শুরু করেছে খেয়াল নেই
দু ফোঁটা গঙ্গা জলের আশায় বসে আছে দাঁড়কাক আর
পাতাল রেল গঙ্গা মাথায় তুলে নেবার রুট ম্যাপ বানিয়ে ফেলল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন