নিমাই জানার বারোটি কবিতা




বাইপোলার ও জবা ফুল

বাইপোলার আত্মহত্যার পর লাল জবজবে রং ভরে রাখি সংক্রমণময় মাইকো ব্যাকটেরিয়ামের পিঠের ওপর
দ্রাঘিমাংশ দিয়ে এই আত্মহত্যার ভগ্নাংশদের ক্ষেত্রফলের কাছে উপুড় হয়ে বসে আছি আজন্মকাল অপার্থিব সঙ্গমে
আমি অনেক ঈশ্বরীকে নিহত করার পর নেমে আসি ইছামতি নদীর তীরে , ধুয়ে ফেলি আমার এই রণক্লান্ত পোশাক , কিশোরী নৌকা , জবাফুল , সেরাটোপেপটিডাইজ তরোয়াল
ঈশ্বর কোনদিন অসম্পূর্ণ সঙ্গম ছেড়ে উঠোনের ফুলের কুঁড়ি কুড়োয় না




পাঠক্রমের বান্ধবী ও দ্রাঘিমাংশ ব্রণ

সকলেই আমার মুখের ভেতর পচনশীল ক্ষয়জাত পাহাড়ের লালাভ রক্ত বের করে পবিত্র গঙ্গা জল ঢেলে দেয় ,
আমি মাছিদের বদ রক্ত খাই মৌরলা মাছের ভাজা দিয়ে
আমার সব শরীর জুড়ে নেমে আসে আম্রপালির রাত্রিকালীন মূর্ছনাময় ঘুঙুর ও  আঁচলের গন্ধ অথচ আমার অবৈধ লিঙ্গান্তরের পর কোন শরীরের দ্রাঘিমাংশের চূড়ান্ত তাপ থাকে না
আয়নার পাশে দাঁড়াতে আমার সহস্র বছর আগের আত্মহত্যা করার একটি মৃত প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই
অথচ আমার পাশে কোন পাঠক্রমের বান্ধবী নেই শুধু ঠোঁটের কাছে কালো রঙের ব্রন ছিল প্রাচীন প্রস্তর যুগের আলতামিরা আমার ঠোঁটে কামড়ে দিয়ে সব রক্ত শুষে নিচ্ছে




জরায়ুর অজগর ও বীজগণিত

বীজগাণিতিক শঙ্খ নদীর তীরে বসে অনেক কালো রঙের ঈশ্বরকে আমার ব্যাগে ভরে রাখি সব নিরাময়ের বেলফুলে আকণ্ঠ ডুবিয়ে
আমি শুধু বেলফুলের গন্ধকে চিবিয়ে খাই , আমাকে চিবিয়ে খায় আমার পিতা , পিতামহ , প্রপিতামহ , মনুর বংশধর
অনাদিকালের কাছে আমি এক কাঠের ময়ূর
এমন উদ্ভিজ্জ সহবাস দেখে ক্লান্ত হইনি কখনো , আমাকে বিষাদ মগ্ন স্তনবৃন্ত দেখিয়ে যায় আজব জরায়ুজ অজগর কালাচ ও গন্ধরাজ
হলুদ বেসিনে সবাই হলুদ বমির লালাভ অভিমান উগরে দেয়,  আমি কতজনকে পুড়িয়ে এলাম সায়াহ্ন বেলায়
২০৬ টি হাড় পুড়লে কিভাবে ৪০০ হয়ে যায়




লাল ব্লাউজ অথবা অবৈধ গর্ভপাত

এক পক্ষকালের পর আমাদের কোন সম্পর্ক ছিল না , একটি পিঠের উপর দিয়ে লাল ব্লাউজ ও আত্মহত্যার রেখা চলে গেছে স্বর্গীয় সাম্রাজ্যের দিকে , এক পশলা বৃষ্টির কথা কাউকে বলিনি গুয়াফেন্সিং সিরাপ খেয়ে আমি পৃথিবীর তলপেটে ফুটো করে অবৈধ গর্ভপাত ঘটাতে চেয়েছি বারবার ঘুমের ঘোরে ঈশ্বরকে নলেন গুড় খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি একাকী এই আলপথের নিচে বসে
বিষ্ণু আমাদের শারীরিক শীঘ্রপতনের কথা জানেন তুলসী বৃক্ষ হয়ে , দূর্বাঘাস অকারণ আমার অনামিকা জড়িয়ে ধরে শ্রাদ্ধের সময়
এই কালিদহ নদীর কাছে নৌকাটি এলে পঞ্চম দিনের শ্বেতপ্রদর অসুখের কথা মনে হয়





পলিসিসটিক ইউটেরাস ও দ্রাঘিমা বিন্দু

নোনামাটি এইতো জঙ্ঘাহীন ঈশ্বরীদের দাঁড় করিয়ে রেখেছে বিষাক্ত কর্কটক্রান্তি রেখার উপর
তুমি নির্ভার হতে চাইলে তোমাকে লাল রঙের পোশাক পরিয়ে অশ্বত্থ বৃক্ষের সীতা ভেবে বসে রাখি নন্দনকাননে ১০৮ পদ্মের নারীটি কখনো সমুদ্রের কথা ভাবে , আমি তার আঙ্গুলের পাশে বসে রামায়ণ লিখে যাই আঙ্গুল দিয়ে আসলে সেটি আঙ্গুল নয় পলিসিসটি  ইউটেরাস
তুমি কি জানো মহাকাল এই সমতল পিঠের ওপর দিয়ে কতগুলো লাল রঙের আত্মহত্যার দ্রাঘিমা বিন্দু ছেদ করে গেছে নারী ফুলের রেণুময় গর্ভাশয়কে
নারীটি কতকাল ঈশ্বরের মতো জামা গায়ে রাখেনি




বক্ষবন্ধনী অথবা ধারালো নেলপালিশ

ঘরের ভেতর দিয়ে সব পরিচয় উড়ছে আজ আমি ধরে ফেলতে চাইছি উদ্বায়ী রঙের ধারালো বৃন্ত অথবা ভারী জমাট নিম্নচাপ আবহাওয়াকে
আমার নিম্ন প্রদেশের হলুদ রঙের ভ্রুয়েরা নেলপালিশের ছবি আঁকতে গিয়ে ভুল করে এসিডিক দ্রবণ খেয়ে নাচতে থাকে উন্মাদিনীর মতো
আমি তার ঠোঁটে অসংখ্য বৃত্তচাপ দেখি ভুমধ্যসাগরীয় , জমাট ছায়াপথ আমাকে এঁকে দেয় কেবল
পিচ্ছিল সরোবরে স্নানের আগে বক্ষ বন্ধনীর নিচে যে পার্বত্য শৃঙ্গার থাকে তা নৈশচারীর শাড়ির মতো
দাঁতে করে তুলে নেয় সুতি কাপড়ের আঁচশ
আমি সব ধান গাছের গোড়া থেকে ফসফরাস খুঁজে বেড়াই ঝিনুকের মত
ঝিনুক আমার পরিত্রাণের পথ জানে , শঙ্খ বাজিয়ে দেয় কেউ,  আমি ক্রমশ মহেশ্বর হয়ে যাই




অমরাবতী ও ক্লোরোফর্ম ঘুম

কাকতালীয় দান বৃক্ষের কাছে প্রার্থনা করি এই উদ্ভ্রান্ত শরীরের জন্য , প্রজাপতি তুমিও এসো এই দাহ কার্যের সময়
অর্ধমাত্রার ঋষি বিশ্বামিত্র পুরাণ পাঠ করছেন লাল দগদগে সেলসিয়াস পারদের কাছে, আগুনই হলো আসল কামনা
দুর্বাসা ফেলে যাচ্ছে সব রতি চক্রের পোশাক অথচ ক্লোরোফর্মের গন্ধ নেই বলে আমি কোন ঈশ্বরীকে ঘুম পাড়াতে পারিনি আজও
এই সিলিকেট পাথরের পাশে আমি ও সাদা রঙের ওড়নার নিচে জেরোফাইট উদ্ভিদের বসবাস করছি
এখানে কোন স্থাপত্য নেই , সব বালিয়াড়ি ভেঙে অমরাবতীর পার্কে নিয়ে অলৌকিক সঙ্গম খেলা খেলছি রাত্রি প্রহরের পর আমাদের এক নোনা সমুদ্রের জন্ম হলো




অঙ্গার অথবা অলিন্দের কান্না

শুধু গভীর রাতের বিছানার উপর দিয়ে এক পশলা বৃষ্টি ভেজায় আমাকে , তাদের লোমশ অভায়ারণ্য হেঁটে বেড়াই পুরোহিতের ব্রহ্মাস্ত্র মাথায় নিয়ে
আমি ঈশ্বরীর পায়ের শব্দ পেয়ে উঠে পড়ি আমার বুকের উপর , অলিন্দ কাঁদছে একা
এই মৃতপ্রায় কালো অঙ্গারের দিকে মুখ করে কতোবার পুড়িয়েছি অর্ধনগ্ন শরীর
ঈশ্বর অ্যাসিটিলিন ও জৈব রসায়নের কথা ভাবছেন
রতিক্লান্ত বাবা তিনটি বিবাহের পরেও এক সঙ্গম ঘোরের নেশা ধরে আছে মার্কার কলমের ডগায়
আমি বাবার পিঠের গেঞ্জির ঘাম দাগ তুলছি লেবুর এসিড দিয়ে
বাবা কোনদিন বয়সকে কাঁচের স্কেল দিয়ে মেপে দেখেনি , আয়ুষ্কাল সকলেই সাপের দৈর্ঘ্য দিয়ে মাপবে




পরকীয়া অথবা লজ্জাবতীর গজল

যে মেটাফিলিক কালো জামা পরেছি আমি তার উদর দেশে দুটো সরলরৈখিক ত্রিভুজ কতো পরকীয়ার কথা বলেছে এই নীলাভ ঘাসের উপর বসে
ত্রিভুজেরা পরস্পর সর্বসম নয় বলে উর্ধ্বক্রমে বায়ুচাপ ভাঙছে লাল রংয়ের অন্তর্বাস
পরিধির পাশে আজ গুম্ফা পর্বতের মেগাস্থিনিস বিবরণ , বৃত্তের সর্বসমতা দেখে নেমে পড়ি উপপাদ্য খাতায়
হাতে থাকা বিরল প্রজাতির গুননীয়ক ও কিশোরী অন্তর্বাস
আমি ৩৪ নম্বরের এক স্থাপত্য পাহাড়ের নীচে ইলোরা দ্রবীভূত শিল্পীর আয়ান পর্বতমালা
মরচে রঙের জানালা দিয়ে সব পুরুষেরা পুরুষ হয়ে যায় জানালার তলপেটে অজস্র নারীর বসবাস
লজ্জাবতী গজল গাইছে জলে আখরোট ভিজিয়ে খাওয়ার পর , ৩ পেগের রাতটি বেশি রাত পোশাক রেখেছে অঙ্গে




কন্ট্রাসেপটিক ও সাদা খই

মাটির ভেতর অসংখ্য সাদা রঙের বৃত্তেরা আদিম খেলতে খেলতে ক্ষয়প্রাপ্ত মরুভূমির গাছ থেকে নেমে এসে লোমশ স্তুপ পর্বত হয়ে যায়
নিচে শুক্রাণু ঝেড়ে ফেলতেই গ্রন্থপোকারা আমার তলপেট বেয়ে পিঠের উপর কিছু দুধেল গন্ধ ধুয়ে রাখে
পার্বত্য মালভূমির সান্ধ্যকালীন সহবাস তৈরি করে ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন
গর্ভপাত ইমার্জেন্সী কন্ট্রাসেপটিকের উপর কতগুলো ফণীমনসার ফুল , আমি সব পোশাকের নিচে এক অচৈতন্য বনভূমি রাখি
যে আমাকে গভীর রাত্রি কালেও ভাসিয়ে নিয়ে যায় চাঁদের কাছে
আমি কিছু সুপারি ডগার উপর আমার গিঁট দেওয়া শুক্রাণু ফেলে রাখি তারপর উঠোনজুড়ে সাদা খই হাসছে




দাহ পর্ব ও  স্বস্তিক চিহ্ন

অযৌন পাহাড় থেকে নেমে আসে পিঁপড়ের সারি
আমি নিজের বিছানাকে মন্দির ভেবে সমর্পণ করি জবা ফুল
ঈশ্বরীর মতো নারীরা হেসে ওঠেন , তাদের দুটি পায়ের উপর সব ভাঙ্গা দাঁতের ক্ষত স্থান আছে
ক্ষতস্থানের ভেতর দিয়ে ঈশ্বরীরা হেঁটে বেড়ান গভীর রাত্রিকালের স্নান থেকে ফিরে আসা ভেজা শিফন শাড়ি পিচ্ছিল বর্গক্ষেত্রে ,
অভিমান ভোরে গোপনীয়তায় সব দাহপর্ব সেরে বানপ্রস্থে চলে যাই
আমি সব নারীদের মাথায় বুদ্ধ অহমিকার স্বস্তিক চিহ্ন রাখি কেউ আমাকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য দ্রাঘিমা,  তথাগত পুরুষের দিকে
বুদ্ধ কতবার এই বিছানার পাশে এসে সহবাস ঘটিয়ে গেছে অথচ আমি আগুনের তাপ পাইনি , পুড়িয়ে ফেলিনি এই পোশাক শুধু আমাকে ফসফরাস ছায়া দিয়ে গেছে




স্নানঘর অথবা অষ্টোত্তর শতনাম

স্নানঘরের সাবান সব গোপনীয়তা দেখে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস বলে দেয়
আমার পোশাকের সবাই zerodol-sp খেয়ে ঘুমোতে যায়,  জিভের তলায় রাখে ষ্টেমিটিল এমডি
নির্দ্বিধায় অশরীরী আত্মারা সোমরস পান করেন আমার সাথে , আমি জামা খুলে অষ্টোত্তর শতনাম পড়ছি ক্যালকুলাস ভঙ্গিতে , লিউকোরিয়া রোগের নারীটি কাগজ ফুলের মতো চওড়া
আমি ও এনেসথেসিয়া দিদিমণি অপারেশন থিয়েটারের বাইরে অজস্র কালো গোলাপের স্বপ্ন দেখছি
নিচের তলায় সিঁড়ি বেয়ে অশৌচ বাতাসের পোকারা বাতাস নিয়ে খেলে যাচ্ছে ভেজা পারদের সাথে
আইসিইউ থেকে ফিরে আসা মৃতপ্রায় মানুষটি জলের গভীরে একাকী ডাংগুলি খেলে বেড়ায় , দৃষ্টিভ্রম সন্ধ্যা কালে 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন