মানসী বিশ্বাস




প্রাগৈতিহাসিক 

কেউটের কাছে হেলে এসে বসে


চোখ ফুলে ওঠা বিশ্বাসে 
             কিশোরী হাতছানি দিয়ে ডাকে 
                                   অভিশাপ 
সাদা কিংবা কালো পাথরে ঢাকা 
              নাগিন নৃত্যে ঘুম আসে 
                                   মাঝরাতে 


অতঃপর,
পাঁচি, ভীখুকে কাছে টানে 
             একটি চুমু আঁকে 
                            কপালে 




২২ এর মধ্যাহ্নে  

অতঃপর আবার আমি একলা হলাম
তুমি দূরে দাঁড়িয়ে নেড়েছিলে হাত
অবিশ্বাস করতে পারিনি
এক পা এক পা করে অন্ধ দুয়ারে প্রতীক্ষা করেছি

বিশ্বাসের মধ্যে অভাব ছিল শুধু 'অ' এর
অল্প আলোয় নিজেকে দেখতাম সুকুমারী
তীব্র শ্লেষে ঠুকেছি নিজেকে বারেবার
চেয়েছি তোমায়, হতে চেয়েছি কর্মচারী

মধ্যাহ্নের এক বিপুল আলোয়
নতুন করে খুঁজি নিজেকে
একলা পথে কেউ নেই সে রাস্তায়

ওমের ধোঁয়া এখনও ডাকে
পিছুটানে...




জিন্দেগি

and birth ? 
  it comes naturally.

  and death ? 
  it comes naturally too.

  but life ??


 সাহারাতে হারিয়ে গিয়েও কুতুবমিনারের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকে ছবিতে দেখি আরো কয়েকবার
 অভ্যেস হয়ে গেছে একা থাকা
 ক্লান্ত হাতে টাইপের বুড়ো আঙুল, কাঁচকলা দেখায়
তবু ডিপি চেক করি বারবার

গরম জলে সেঁক দেওয়ার সময় ফোন আসে
মশারীর টাঙানোর তীব্র আক্ষেপে মনে পরে
কিছু তো মিল ছিল

এক ফুট দু ফুট মেপে নিয়ে বসা
কানের ধরে হাল্কা হেসে আড়চোখে চাওয়া
ইঙ্গিতে জিন্দেগি বদলে কাঁটাকম্পাসের সাহায্য ছাড়াই সরলকোণ এঁকেছিলাম


আমাদের হাসি ফুরোয়নি এখনো
কিছুটা পরে আছে মরচে লাগা হৃদয় জুড়ব বলে
উথলে ওঠা ফ্যানাভাতে এক ফোঁটা ঘি'য়ের মতো স্মৃতি যার




ইচ্ছে গুলো

ওড়না দিয়ে মুছিয়ে দিই ইচ্ছেদের
আঁচল মাথায় দিয়ে যাওয়া হয়নি 
ওপাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ফুচকা কাকুকে বলেছিলাম
পরের দিন দেখা হবে
দেখা হয়নি যদিও

ঝুমকো গুলো গুছিয়ে রেখেছি
পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়লে চোখ খুলে দেখি কটা মেসেজ এল,
মেসেজ আসে
কিন্তু উত্তর দেওয়ার মন ফুরিয়ে গেছে বহু আগেই

আবার ইচ্ছেদের ডাকি
এক একদিন রবিবার হয়ে যা তোরা
এক দিনে সব সমুদ্র আর ঝর্ণা নিয়ে চলে আয় আমার কাছে
গঙ্গা উঠুক ডেকে তালে তালে


ইচ্ছেগুলো মরে গিয়ে আবার বেঁচে উঠুক
ডুকরে বলুক মাথা তোল, দেখ
ঝুমকো পরতে হবে... 






এক একটা

আরও একপ্যাকেট সিগারেট শেষ হল
ব্রা'য়ের গার্ডারে আটকে যাওয়া নরম চামড়ায়
হাত বুলিয়ে দিলাম সযত্নে

এক একটা রাত কেটে যাচ্ছে দেখতে দেখতে
ঘুম নেই চোখে আমাদের
কপালের কালো তিল এঁকেবেঁকে বেড়ে উঠছে ক্রমশ
অতঃপর উনষাট দিনের মাথায় পুড়িয়ে দেব সব
মনস্থির করেছি

কতগুলো না ঘুমানো রাতের জন্য পেয়েছি কালো চোখ
দীর্ঘশ্বাসে বেড়ে ওঠা বুক
থমকে যাওয়া থুতনি ও গাল
দাঁতের ফাঁকে রয়ে যাওয়া ময়লা...

আবার নখ খোঁটার অভ্যাস শুরু করছি,
অজান্তেই ছিঁড়ে ফেলছি চামড়া, গড়িয়ে পড়ছে রক্ত...
অন্যসময় ভয় পেয়েছি, আর আজ রক্তের মধ্যে দেখেছি তারায় তারায় ফোটা লাল গোলাপ


বুঝলেন,
বুকে পুড়ে যাওয়ার দাগটা এখনও দগদগে



ধুলট 

আজানুচুম্বিত রাঙা ঠোঁটে
বিষ ঢেলেছিলে দুহাতে
মেঘমল্লার যত্ন ক'রে আঁকড়ে ধরে তানপুরা

দীর্ঘশ্বাস ফুরিয়েছে বহুদিন
একঘেয়েমিতে কেউ বলেনি ধুলটের ধুলো কতটা গভীর
মাপতে মাপতে জলপাই বোঝালো 
সংসারের গুরুত্ব ঠিক কোথায়!

আদপে হাতে-পায়ে মানুষ হয়েছি আমরা
ভিতরের হিংস্র পশু নির্লিপ্ততায় মেতে উঠলে
ভুলে যাই ধুলটের পরে মুছে যাওয়া দাগ...
কতটা গভীর হলে কাদামাখা গর্ত বোনে সুদৃঢ়! 


শুধু প্রেমিক হয়েছো তুমি, মানুষ হওনি
অন্ধকারে হাত ধরে কলেজস্ট্রীটে চুমু দিয়েছো
পাশে থাকা রহমত আলি'র মাথায় হাত কিংবা সাহিমা বিবির আঁচল ঠিক রাখতে পারোনি তুমি...

কিসের তবে প্রেমিক তুমি!
যেখানে সকলকেই প্রেম না দিলে...

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন