সংক্ষিপ্ত লেখক-পরিচিতি:
অনিরুদ্ধ আলম (Anirudha Alam) পেশাগত জীবনে একজন ফ্রিল্যান্স উন্নয়নকর্মসূচি কন্সালটেন্ট এবং উন্নয়ন-যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি এ পর্যন্ত চল্লিশটিরও অধিক বই লিখেছেন এবং সম্পাদনা করেছেন। তাঁর প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: সোনালি নৈঃশব্দ্যে হরিণাবলি (কবিতা), প্রেম কি কেবলি পাখিপ্রবণ (কবিতা), ভালবাসা প্রিয়তমাসু (কবিতা), অনেকটা পথ হাঁটতে হবে ঘুমিয়ে পড়ার আগে (কিশোর কবিতা), ২৪ অক্টোবর ১৯৭১ (উপন্যাসিকা), এইসব রাতদিন (কিশোর কবিতা), দূরের ডাক (ছড়া-কবিতা), তারপর তারপর (ছড়া), সকলের জন্যে পরিবেশ পরিবেশের জন্যে সকলে (ছড়ানাটিকা), পিঁপড়ে (সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস), অপারেশন ক্যালপি বত্রিশ (সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস), এবং ক্রিনোর অপেক্ষায় (সায়েন্স ফিকশন), তেইশশত দুই সালের এক জানুয়ারি (ছোটো গল্প), দু’ শ’ বছরের সেরা বাংলা কিশোর গল্প (সম্পাদিত গল্পের সংকলন), তোমাদের জন্যে বাংলা বানান (শিশুকিশোরদের জন্যে বাংলা বানান সংক্রান্ত বই), আমাদের কালো মানিক: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (জীবনী)।
অনিরুদ্ধ আলম
তুই
এ যেন এক-খেলা
দিঘিটা সারাবেলা
জবার কাছে-কাছে
হরিণ হয়ে নাচে।
হরিণও নাচে, তবে
আকাশ মাঠ হবে
মাঠের চৌকাঠে
শালিক ন’টা হাঁটে।
বেজেছে ন’টা যেই
বৃষ্টি পলকেই
ভাসাল পাড়াগাঁও।
মেঘেরা, কোথা যাও?
মেঘেরা বুড়িমারি
যেই-না দিল পাড়ি
আকাশ হল আরও
ঘাসের মতো গাঢ়।
আকাশে বাঁকেবাঁকে
বেদনা পুষে রাখে
চিলেরা সঞ্চারী
কষ্টের পসারি।
কষ্ট বলো কিসে?
নীলে যে বিষ মিশে!
মেশাল বলো তো কে?
মেঘ কি তা জেনেছে?
মেঘেরা আছে ক্লেশে
খরার দেশে এসে।
হৃদয়ে ওঠে ঝড়
সে কী নিরন্তর!
ঝড় নয় তো! হাওয়া –
চমকে দিয়ে পাওয়া।
পেলাম একরাশ
ধুলোর উল্লাস।
পাতারা ডেকে বলে
এখানে আয় চলে।
পাতার পাখসাটে
ধুলোর দিন কাটে।
দু’ চোখে দিয়ে ধুলো
হারাল দিনগুলো।
কী রঙিন তাধিন
দিনের কাছে ঋণ!
দিন তো দরবারি
ছুঁড়ছে তরবারি।
রৌদ্রে কাটকাট
উতালা নদীঘাট।
ঘাটের ডোল আঁচে
জলরা খুব বাঁচে।
সে-জলে কত ঢেউ
জেনেছ আগে কেউ?
ঢেউরা উড়ুউড়ু
এই তো হল শুরু
যাত্রা পুব দিকে।
তুমিও রেখো লিখে –
কুমারী খড় কাশ
ক্ষণের ইতিহাস।
যদি বা না-ই পারো
উপায় আছে আরো –
মেঘের সাথে যেও
মাঠের হাটে। গেও
দরাজ গলা ছেড়ে।
দুপুর এল তেড়ে!
দুপুর কোনো খাকি
আগুনপাখি নাকি?
আগুন নিয়ে গায়ে
হাঁটছে ধুলো পায়ে।
হাঁটছে দুলে হেলে
তাতে কি সোনা মেলে?
সোনাতে খাদ আছে
ঘুরো-না তার পাছে।
ঘুরতে এসে বন
থাকছ কত ক্ষণ?
বিকেল এল-এল
আলোরা এলোমেলো।
গুছিয়ে তবে রাখ্
শুনছি সেই ডাক –
‘আ তই তই তই’
হাঁসেরা গেল কই?
আয়-না ফিরে আয়
বাড়ির সীমানায়।
বাড়িটা পাখিবাড়ি
বলতে আমি পারি।
পাখিরে তুই ভালো
সন্ধ্যাদীপ জ্বালো।
লাগবে শুকতারা?
ও মেয়ে তবে দাঁড়া।
কোথায় তারে পাই?
কোথায় আমি যাই?
খুঁজছি সারা পাড়া
আরে –
নিরালা আন্ধারে
তুই-ই তো শুকতারা!
জেনেছিস কি তুই –
নাম তোর ‘নিতুই’?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন