মৌমিতা মিত্রের কবিতা

১.
প্রথম আলাপ 



প্রতিটি দ্বীপের কিছু রহস্য থাকে এবং আমরা তা সংরক্ষণ করি। প্রথম আলাপে আমরা মটরদানা থেকে জন্মদিন যেকোন বিষয়ে কথা বললেও আমাদের অতীত সম্পর্কে কোন কথায় যাই না। একে অপরের সঙ্গে হাসিমুখে কয়েকঘন্টা কাটাতে পারলেই নিজেদের বন্ধু বলে ডাকি। অপরিচিত মুখের অপরিচিত হাসি নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে দেখা যায় বলে প্রথম আলাপ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর আমাদের সব অতীত বাক্সবন্দি করে আমাদের দ্বীপের মাটিতে পুঁতে আমরা হাসিমুখে মুখোমুখি বসি। 


২.
বালির সিঁড়ি বেয়ে

চেয়ারের হাতল ধরে দাঁড়ালে উল্টো দিকের পৃথিবী পায়ের ফাঁক গলে ছড়িয়ে যেতে যেতে বলে যায় তোমাকে এখন‌ও জানা হয় নি। আঙুলের মাঝে লেগে থাকা জলের দাগ এতকালের সহজ ব্যাখ্যাকে ভুল বলে মানতে মানতে সঠিক সিদ্ধান্তের খোঁজে শুকনো বালির পথে হাঁটে। বালির সিঁড়ি বেয়ে হয়তো কেউ চলে যাবে অনেকটা দূর। আর ওজনের ভারে বাকিরা নতুন ভূগোল খুঁজবে। হয়তো দুদিকেই আমরা দাঁড়িয়ে থাকবো যতক্ষণ জল না আসে।


৩.
আঁকার পাতায়

আঁকার খাতার কাকতাড়ুয়া গোলাপী আকাশের নিচে হাত ভেঙে দুটো নতুন পা দিয়ে সাদা পাতায় মানুষ আঁকছে। আমাদের যন্ত্রণার ভয়ের উপাদান কি শেষ হয়ে গেছে? চোখের জলের মতো স্বরে শব্দ বসিয়ে পুরোনো প্রেমিকার কালো কাপড় উড়িয়ে দিয়েছে আমার পরিচিত গল্পের পার্শ্বচরিত্র । তার দিকে তাকাতে ভুলে গিয়ে আমরা বড় রাস্তার সঙ্গে বড় হ‌ওয়া গাছের সবুজের ক্ষয় দেখিনি। আমরা জানি না ঠিক কত দিন আগে শেষ বার্তা লিখে গেছে আমাদের গল্পের গাছ। শুধু কাঁধের ভার বলে দেয় জমা হয়েছে অনেকগুলো অসমাপ্ত গল্প। কিছু তথ্যের গায়ে সন্ধের রঙ লাগিয়ে আমরা প্যালেট এগিয়ে দিয়েছি ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন