আফজল আলির কবিতা

১.
নির্জন ভেড়ার সামনে

আর একটা সিগারেট বাকি রয়েছে হাতে
তারপর আমি সেই অলৌকিক বাঁশি শুনতে পাব
তারপর  শুরু করব দৌড়
স্বপ্নের ডানদিক হয়ে একটি নির্জন ভেড়ার সামনে
কাঙ্ক্ষিত সত্যের কামরাঙা ফলের ভিতর
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকব দুজনে
এখন আকাশে অনেক তারা , বুকের মাঝে বিঠোফেন
এই চরম মুহূর্তেই বুঝি অন্ধকার উদযাপন হয়
আর একটু সরে এসো, মন চাইছে ভীষণ
আলমারি গুছিয়ে নিয়েছি, অসম্ভব একটা সুতো মাত্র
টান মেরে ছিঁড়ে দেব
বেঁচে থাকার একনায়কতন্ত্রে এ সবই তুচ্ছ
গৌরবে ফুলের কুঁড়িগুলো ফুটছে, জীবন তো দ্যুতিময় এমনই
ভীষণ অভিপ্রায় শীতল আর কাতলা মাছের আঁশ ছাড়ানো
দরজা খোলার শব্দে অতিচেতন নড়ছে
এখন একটা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দরকার  যা ঘিরে থাকবে শুধু

২.
ভালোবাসার রূপান্তর

আপনি ভালোবাসলেন অথচ চেপে যাচ্ছেন বেমালুম
তার মানে আপনার দম নেই
আবার বললেই যে দম থাকবে ব্যাপারটা তা নয়
আসল দম হল আপনি স্বীকৃতি দিতে পারছেন কিনা
স্বীকৃতি দেওয়ার কাজটি তীব্র ভালোবাসা না থাকলে হয় না
তার জন্য চাই আরো বেশ কিছু
বেশির ভাগ ভালোবাসাই রয়ে যায় স্বীকৃতিহীন এবং ফিকে
স্বীকৃতির পরেও অনেক ভালোবাসা আবার নষ্ট হয়ে যায়
অদ্ভুত রসায়ন থাকে মানুষের মনে
কাছে পাওয়া হলে তা তুচ্ছ হয় আবার না পাওয়া পর্যন্ত ব্যাকুল
কাছে এলে ভালো মন্দ দোষ সব প্রকট হতে শুরু করে
তখন মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধা হারাতে থাকে ক্রমশ
পিছনের দিকটা ভুলতে ভুলতে শূন্যে দাঁড় করিয়ে দেয়
ভালোবাসা কখন রূপান্তরিত হয়ে যায় ঘৃণায়, টের পায় না কেউ

৩.
ইহজন্মের কয়েকটি লবঙ্গ
যন্ত্রণা সহ্য হয়ে যায় বুকের ডানদিকে
ভালোবাসা এমনই এক গান পয়েন্ট
ঠিক যাকে চায় তাকেই লাগবে
অন্য কোথাও কথা বলে মন লাগে না
সে যাই হোক, বলুন পটল কত করে
বুঝতে পারি অনুশীলন এখন অন্যত্র
একাধিক সঙ্গে কি বখাটে হয়ে যাবে
আর একটা সিগারেট ধরাই
ইহজন্মের কয়েকটি লবঙ্গ মুখে রাখি
অনলাইন শপিং এ পটুতা নিঃসন্দেহ
মন প্রচণ্ড তুই তুই করছে
কী বললে সাবান দিয়ে ধুয়ে দেবে আত্মা
সেই সব দিনগুলো কি মনে আছে
সহবাস ছিল আমাদের দৈনিক কার্যক্রম 

৪.
অবৈধ ভাবনার মধ্যিখানে

চুমু সম্পর্কে এতদিন যা জেনেছেন তা কি সবটাই সত্যি
গভীর রাতে চুমুর দৃশ্যে কোনো architecture ছিল কিনা
স্বপ্নের দোষে নষ্ট হয়েছিল কিনা মূলধন
এ সব ভাবনার অবৈধ মধ্যিখানে আমি একটি বেডসুইচ রাখলাম
এবং তোমাকে জড়িয়ে নিলাম বুকের উপর
Black tea সম্পর্কে এই মুহূর্তে জ্ঞাতব্য বিষয়গুলো থাক
শিরশির করছে শাড়ি
দর্শন দিয়ে আর জাগিয়ে রেখো না বিধিবদ্ধের ভিতর
মনকেমন তীব্র হলে যন্ত্রণা লুকিয়ে রাখি বিছানার কলেবরে
সহবাসে সহবাসে তোমাকে লীন করে দিই
যতক্ষণ না আগামীর কিছু কথা সম্পর্ক ঝালিয়ে যায়
পুনরায় প্রেমে পড়ি
মাধুর্য ভরে শ্বাস নিই 
নিতম্ব কি জ্ঞান পাত্রের নিবিড় ক্রিয়ার মধ্যিখান
যা সহজেই জোড়া লাগাতে পারে যাবতীয় উত্থানের
ওহ কী যে করি, স্বপ্ন ভাঙা প্রজাপতিগুলো আবারও উড়ছে
আমি কি ঠোঁট লুকিয়ে রাখব তোমার জাগ্রত নেশার সম্মোহনে 

৫.
রক্তক্ষরণ

কষ্টগুলো একটু পালিশ করে নিলে দিব্যি চকচক করে 
তখন ডাকনামকে আমি pronoun বলে চালিয়ে দিই
একটা সিঁড়ি থেকে উপরে উঠতে  পুরনোগুলো ভুলতে পারি না 
আমার হৃদয়ে কিছু বসন্ত উত্তাপ ছড়ায়
তখন জলের বোতলকে নীল দেখি
অহংকারে পেরেক গাঁথতে গিয়েও সরিয়ে রাখি 
এক একটা সমর্পণ ছিল বিকেল দাগের ভেলা
আজ এত আনন্দ কোথা থেকে আসছে, সময় তো নয় তেমন 
তাহলে কি আমার হৃদয় রক্তে ভরে উঠেছে
আর বিষে জ্বলছে সারা শরীর 
ওহ হো, দেখলে তো খুচরো পয়সার জন্যই কি যত অশান্তি হচ্ছিল 
আমি তো আসলে হ্যাঁ-বাচক ফুলদানি,  ক্রমশ শোভা দিয়েই যাই
আচ্ছা থাক, আর একটু রক্তক্ষরণ হোক, তাহলে জমে উঠবে খেলা


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন