তৎসবিতুর্বরেণ্যং
আমিনুল ইসলাম
ওঁ ভূর্ভুঃ স্বঃ -
ধ্যান অনুশীলনের ক্ষেত্রে ভূঃ, ভূবঃ ও স্বঃ – এই তিন লোক। চেতন, অর্ধচেতন ও অচেতন – তিন স্তরের প্রতীক।
তৎসবিতুর্বরেণ্যং -
তৎ=স্রষ্টা, সবিতুর=সূর্য নামক একটি গ্রহ বা সূর্যের সমার্থক, বরেণ্যম=তার সামনে নত হওয়া।
সুতরাং আমরা স্রষ্টার সামনে নত হচ্ছি যার শব্দ ওম এবং যাকে অসীম গ্রহমণ্ডলী থেকে আগত আলোর মত দেখায়।
এই বিশ্বাস রেখে চলতে শুরু হলো পথ বা জীবন। জীবন=তরঙ্গ। ১টা তড়িৎ যা প্রবাহ উৎপন্ন করে, যাকে নদীর গতিপথও বলা চলে।
নাসের হোসেন প্রকৃত অর্থে মানুষ যিনি আমাদের সম্মুখে ১জন কবি, ১জন চিত্রকর বা ১জন সাহিত্যিক হিসাবেই উদ্ভাসিত রেখেছেন নিজের অস্তিত্বকে। যাঁর সামনে সব বিশেষণ নত মস্তকে দাঁড়িয়ে থাকে চুপ।
নিগূঢ় আলোয় যাঁর হাত ধরে পেরিয়ে যাই দূর্গম প্রত্যাশিত পথ।
নাসের হোসেনের নাম এবং তাঁর লেখার সাথে আলাপ ২০০৫থেকে। সেই সময় তাঁকে দেখেছিলাম ২-৪ বার। কিন্তু ব্যক্তি নাসের হোসেনের সঙ্গে প্রকৃত অর্থে আলাপ এবং ঘনিষ্টতা২০১৯ এর জুন মাস থেকে। তিনি মাঝে মাঝেই ফোনে খবর রাখতেন সবার। বহরমপুর ব্যারাক স্কয়ার ফিল্ড -এর পাশে পোস্ট অফিস সংলগ্ন উদ্যান, যাকে কবি নাসের হোসেন 'নন্দন কানন'- বলেই চিহ্নিত করেছিলেন, সেখানে আমরা কয়েকজন প্রতি শনি ও রবিবার মিলিত হতাম নিয়মিত।
এই নিয়ম ভেঙে ৯ই ডিসেম্বর ২০২০তিনি চলে গেলেন অকস্মাৎ। তাঁর অকাল প্রয়াণে আমরা মর্মাহত। তবু তিনি আছেন, তাঁর সৃষ্টিতে।
তাঁকে যত দেখেছি আশ্চর্য হয়েছি, প্রকৃত মানুষ হতে গেলে 'তাঁর অভ্যাস' নিরন্তর অনুসরণ করতে হয়। তাঁর পথ তিনি এঁকেছেন নিজস্ব তুলির প্যাটার্নে। নিরন্তর শ্রদ্ধা সমর্পিত হোক তাঁর ব্যক্তিত্ব ও কবিস্বত্ত্বার কাছে...
সুতরাং আবারও বলি- তৎসবিতুর্বরেণ্যং = যাঁকে অসীম গ্রহমণ্ডলী থেকে আগত আলোর মতই দেখায়, এখন তাঁর কাছে নত হলাম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন