হাংরি আন্দোলন
উৎপলকুমার বসু
লাল-হলুদ কাচের জানালার দিকে তাকিয়ে
সেদিন অকস্মাৎ
বিকেলের অপরিচ্ছন্ন মুহূর্তে আমি
জটিলতাহীন
সূর্যরশ্মির দিকে চোখ মেলে
“পোপের সাম্রাজ্য আর
তাঁর আসুখের
রহস্যময় বীজাণুর স্হিতিস্হাপকতা”
আঙুলে একটি বড়
গ্লোব পৃথিবীর
বর্তুল পরিধি দেখিয়ে
আমি কলকাতায় তোমাকে বলেছিলাম
“পোপের সাম্রাজ্য
আর তাঁর আসুখের রহস্যময় বীজাণুর স্হিতিস্হাপকতা
কতোখানি দেখা যাক”
বীজাণুর সঙ্গে তুমি চাও না কি যুদ্ধ হোক?
অন্তত আমি তা চাইনা
কারণ সে যুদ্ধ যদি থর্মযুদ্ধ না হয় তাহলে
কুরুক্ষেত্রে কার মুখব্যাদানের অন্ধকারা
আমি ছোট পৃথিবীর গ্লোবের প্রতিচ্ছায়া দেখে
হতচকিতের মতো
কৌরবের খেলার পুতুল হব?
আমি কি নিজেই নিজেকে থলির মতো
নাড়া দিয়ে ভেতরের
বীজাণুর, সন্ত্রাসের, সিকি-আধুলির শব্দ,
গড়াগড়ি তোমাকে শোনাবো?
অন্য বহু
পুরুষের মতো এই সাতাশ আটাশ
বছরের ছোট খিন্ন জীবনের কেবলই
ঝিল্লি শিরা অন্ত্রবহুল
ঐকান্তিক শরীরের প্রেমে
বারবার নেমে এসে
আমাদের দ্বিধা হল কেন?
যথার্থ মাতাল, পাপী,
কর্মজ্ঞানী, সাধু ও চোরের সঙ্গে মাখামাখি হল না তেমন ।
নৌকায় বেশীদূর বেড়ানো হল না
ভালবাসা জোরালো হল না-
খালপারে বিবাদ হল না-
পাঠক, এখন,
রোমের চত্বর থেকে
দূর জানালায় চোখ রেখে
দেখা গেল দ্যুতি নিভে যায়
ক্যাথলিক মিশনের কাছে
আমি ভারতের
অপুষ্ট শিশুর জন্য
গুঁঢ়ো দুধ চাইবো আয়াসে
ঊনচল্লিশ পোপের মৃত্যুর পর
কূটজ্ঞানে
চল্লিশ পোপের
জীবাণুমুক্ত আয়ু ফিরে আসে-
এই বোধে ।
কিন্তু আমাদেরো
অন্য বহু পুরুষের মতো
আরো কুঢ়ি, বাইশ বছরের আয়ু বাকি আছে ।
ততদিন বিমান-বন্দরে গিয়ে বসে থাকি
ঊড়োজাহাজের ওঠানামা দেখি
অথবা ছাপার কলে
গিয়ে বলি কবিতাগুলি
ছেপোনা বা
বুড়ো আঙুলের দাগ ছেপোনা বা
ল্যাজের খুরের দাগ
ছেপোনা বা
আমাকে বদল করো
রহস্যের মূল জানালায়
অন্ধকারে
যখন হলুদ নীল ভিন্ন রং
মুছে গিয়ে পোপের সাম্রাজ্য আজ
বীজাণুর মতো ছোট
সংখ্যাহীন, ধূর্ত ও কোমল
মাতব্বর ঈশ্বরের আবির্ভাব হল সদলবলে ।
( হাংরি বুলেটিনে প্রকাশিত )
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন