আমার রাইফেল আমার বাইবেল

ফালগুনী রায়

আমার রাইফেল আমার বাইবেল এই নামের দুটো কবিতা পকেটে

নিয়ে আমি গল্পকবিতার পথে হাঁটি – এই পথে একজন অগ্নিযুগের

বিপ্লবীর নামে রাস্তা ও বাজার এবং একজন সত্তর দশকের শহিদের

নামে রয়েছে একটি শহিদবেদি রয়েছে কলেজ স্কোয়ারের জলে পুরনো

বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গ্রন্থাগারের ছায়া রয়েছে কিছু দূরে মেডিকেল

কলেজের মর্গ আর তার উল্টোদিকে দেবালয় ও গ্রন্থালয়ের মধ্যবর্তী

পথ চলে গ্যাছে স্ট্রেট গণিকালয়ের দিকে এই পথ দিয়ে আমি হাঁটি

গল্পকবিতার দিকে – বুকপকেটে কাগজি নোটের বদলে দুটো

কবিতা – বুকপকেটের তলায় গেঞ্জি গেঞ্জির তলায় চামড়া চামড়ার

তলায় হৃদয় হৃদয়ের হাড় ভাববাচ্যে কাটা গ্যাছে আমার তবু আমি

হাড়কাটায় যাইনি এখনো কয়েকটা লেখা নিয়ে গল্পকবিতার দিকে

হেঁটে গেছি – পাঠের ক্ষুধা নিয়ে ছুটে গেছি গ্রন্থের কাছে প্রেম ও

পুরুষাঙ্গর ক্ষুধা নিয়ে ছুটে গেছি প্রেমিকার কাছে কিন্তু গ্রন্থ ফিরিয়ে

দ্যায়নি আমাকে – মানবী দিয়েছে – তারপর থেকে আমি লাল-নীল

মাছের অ্যাকোরিয়ামের পাশে বসে মাছভাজা খেয়েছি বেশ্যার উঁচু

বুকে যৌন আকর্ষণের বদলে আমি লক্ষ করেছি মাংসর ঢিবি – আমার

প্রাক্তন প্রেমিকার বর্তমান স্বামীর দাঁতের উজ্জ্বলতায় আমি টুথপেস্টের

বিজ্ঞাপন দেখেছিলুম – হাসি দেখিনি


রামকৃষ্ণ শ্মশানে জ্বলন্ত শবদেহের ঝলসানো মাংস মহাপ্রসাদ মনে করে

খেয়ে ফ্যালে নিমাই সাধু এবং এমনকী সে খিদে পেলে গঙ্গামাটি বা

স্রেফ নিজের পাইখানা খেয়ে ফেলে ও গাঁজা খায় এবং হরিনাম করে

– নিমাইসাধুকে অনেকেই মুক্তপুরুষ ভাবে আমিও মুক্তি চাই কিন্তু সে

মুক্তি মানে পোড়া মড়ার ঝলসানো মাংস ছিঁড়ে খাওয়া কিম্বা মাটি বা

নিজের গু খাওয়া নয় – চে গ্যেভারাও মুক্তি চেয়েছেন এবং পরাধীন

ভারতের কবি লিখেছিলেন যেথায় মাটি ভেঙে করছে চাষা চাষ কাটছে

পথ খাটছে বারোমাস সেখানেই দেবতা আছেন দেবতা নাই ঘরে- এই

ধরনের মুক্তিপ্রসঙ্গ লেখা হয়েছিল স্বাধীনতার আগে – আমি আজ

স্বাধীন ভারতের কবি দরিদ্রতার হাতে বন্দী অগণন শিশুর নির্ভেজাল

হাসি দেখে তাদের মুক্তির পথের কথা ভাবি – পেটোর বদলে দুটো

কবিতা পকেটে নিয়ে গল্পকবিতার দিকে হাঁটি এই পথে একজন

অগ্নিযুগের বিপ্লবীর নামে রাস্তা ও বাজার আছে, আছে সত্তর দশকের

একজন শহিদের জন্যে একটি শহিদবেদি এই পথে

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন