কবি প্রসঙ্গেঃ-
১। জলে রাখো, শুদ্ধতায়। অভিষেক,                         বহরমপুর। ১৯৯৬
২। যাত্রাপুস্তক।  কবিতা পাক্ষিক-১৯৯৮
৩। প্রশান্ত পুণ্যশ্লোকের কবিতা। অপাবৃতা-                   জলপাইগুড়ি-১৯৯৯
৪। রম্যরচনা। কবিতা ক্যাম্পাস-২০০০
৫। স্ববিষয়ে দুচার বাক্য। নয়া উদ্যোগ-২০০৫
৬। কাহাদের কথা। কৌরব -২০০৮
৭। এইখানে যত শব্দ (ই বুক সংস্করণ - বাক);             
মুদ্রিত সংস্করণঃ-এখন, জলপাইগুড়ি-২০১৬
৮। ইতিবৃত্তের বেলুন। কৌরব-২০১৭
     
প্রশান্ত গুহমজুমদার-এর ১গুচ্ছ কবিতা

উড়ানের ছায়া

উড়ানের ছায়া। উড়ন্ত পাখি হেতু এই দৃশ্য। আপাত মলিন এবং সম্ভাবনাময়। যেখানে লুকিয়ে শূন্য, আলো এবং একা নৌকা। দেরাজ থেকে পিস্তল এবং বহু কিছু এই উড়ানের ছায়ায় আছে। লুকিয়ে কিছু লাভ নেই। হাঁটাহাঁটি কিছু দেবে বলেছে। দীর্ঘ এবং হিংসা। প্রাচীন, কুঁজো, অন্ধকার, প্রতারিত এবং এক পুরানো রাস্তা। লিরিকের বাইরেও আলো জ্বলে। সেখান থেকেই এই সন্ধ্যা, রাত্রি এবং উদ্ধোধনের কথা। সুরূচির অন্য গল্প। 


রাত্রির কথা

এই প্রকার। অথচ জল। আমি, এই আমি, উড়ন্ত। সম্ভাবনাময়। আমার সকল রাত্রির কথা। কোলাহলের কথা। ঠাকুমার গল্প। গতিময় হুইস্ললময়। তাহার কষ্টার্জিত দুপুরের কথা। ফেরার কথা। সিঁড়ির কথা। শূন্য দশকের শব্দ বুনন। এক গল্প, অতঃপর চরাচরের আলো। তাহার স্তন এবং উন্মুখ জানুর শিল্প। রক্তের স্নিগ্ধতা। আরও বহুকিছু। এই জলে। উপেক্ষা করি। লাল টালি, ঘুলঘুলি দেখি। সকাল। অপ্রয়োজনে।


এমত প্রাচীনে

তৃণ বোঝে সেইসব। ওই আন্দোলন। ছায়া। প্রকৃতই অসামান্য নয়। কেবল জলের মনে হয়। নতুবা সে কেবল নতুন। ক্ষুধার্তের অন্য গল্প। শীতের, ঊষ্ণতার, ওমের। অথবা অনিকেতের। তুলসি মঞ্চের। কে যে কোথায় ভাল থাকে! ঝুঁকে পড়ে, নিচু হয়। যাতায়াত অবিরত। অশ্রুর ধারাপাত। অদ্যাবধি অসমাপ্ত। বোধ করি, সাম্রাজ্য এবং সে বৃক্ষের বিরোধ ছিল কিছু। ফলত অক্ষরসব দৃঢ হয়। বৃষ্টি হয়। কালোকোলো বিন্দুসব ধরে রাখে শীষ। অসীম, এমত প্রাচীনে।


আহত শরীরে

অবশেষের গল্প এবং কিছু বৃক্ষের ছায়া। নির্বিকার অথচ রসিক। বিবিধ খেলার অন্তিমে, স্বপ্নে তাহারা আকাশ দেখিয়া থাকে। যেহেতু ওইখানে কিছু ঘরবাড়ি, একটি সেতু, রঙিন মাছ এবং পালক আছে। এ যাবতকালের গতায়াতে এইরূপ প্রাপ্তি। সে। তাহার হাতের পাশে নিবিড় একটি হাত। মৃত্যু। রতিক্রিয়া তাহার পূর্বে থাকে। বহুল আসনে। বর্তমান অপরাহ্নে সে প্রশ্নে ছিল। পাতাসব হলুদ। নিবিষ্ট উত্তর সঙ্গীতে। এরূপেই কী প্রীতি আসে! আকাঙখা! উত্তাপ! এবং রক্ত ক্রমে পরবর্তী উৎসবে! এমত বাহুল্যে প্রকৃতই স্থিতি সে আহত শরীরে?


কানাকড়ি

ছবি আঁকার মধ্যে কথা। লাল ফুল নীল ফুল। প্রাক্‌বসন্তের কোলাহল। সে প্রাচীন ছুরিতে ক্ষত নাই আর। লেবুর গন্ধ, মন্ডপে মন্ডপে উৎকৃষ্ট। ঝরা পাতাগুলি দেখি। ঝরা মানুষগুলিকে। কিছু বিরোধাভাসে লেখা হয় তন্ময়। বছরান্তে কানাকড়ি। বেলুন। 


জলপটি

জানালা৷ খোলা। আসবে। অপেক্ষায়। কেবলই কি রাত্রি! চন্দ্রিমা ছুয়ে! ভেঙে! টেবিল। সরে যাচ্ছে। গাড়িটাও। তার গায়ে সাদা। সাদার ওপারে নীল। ডোরাকাটা। অসংস্কৃত। সরে যাচ্ছে অলৌকিক। জলপট্টির সাতসতেরো নামছে। অপেক্ষা করছে ঘুম। এইবার দাঁড়াবে। তার হাত। বিশেষণগুলি ক্রমে গলে গলে। দ্রুত উড়ে উড়ে ওড়না। বিলম্ব হয়েছে। লজ্জ্বা?


খেলাধুলা

এই হচ্ছে খেলাধুলা। তোরণ এই। জলে ছায়া। সে হত্যার। আলোর অভ্যন্তরে আলো এবং চলমান। শাশ্বত নহে। অশ্রু তাহাকে এইরূপ। চরাচরে বিরল। যুক্তি খেলিতেছে। বিনীত অশ্বারোহী। সাম্য। রক্ত। আর্তনাদ ক্রম লইয়া বাঁশিতে। অনুষঙ্গে। বিকটে। অন্তর এবং বাহিরে। হ্রাসমান এবং অফুরান। পুষ্প কি এ নিয়মের মান্যতায় আদৌ ফুটিবে! 


মৃত্যুশোক

হত্যার গল্পের আলোছায়ায়। এতদূর দৃশ্য। দশক অবান্তর। কেবল জল ও জঙ্গল ত্রস্ত। তাহাদের ইতিহাসে রক্ত ছিল না। বস্তুত শোক ছিল। মানুষের আলাপে ছিল। ধ্বংসে ছিল। প্রাচীন একটি ইঁটে সিঁড়ি ছিল। বর্তমানে লিরিকবিবর্জিত। তাহাতে আমি বিশ্বাস রাখিয়াছি। বহুদূর বিস্তৃত ছায়ায় এবং আলোয় দেখিতেছি একা পাখি। মৃত্যুশোক গাহিতেছে। 

2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন