যেতে যেতে পথে
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
পথের ওপর শুয়ে আছে পথ
আমি দুজনকেই চিনি
অন্তত পৃথিবীর প্রথম পথ
যার ওপরে আমরা শুয়ে আছি
আমি তাকে পাখি বলি
চিনি বলাটা ঠিক নয়
চিনি বললে গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে সাপ
মেঘের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে মেঘ
পথ চেপে ধরে বলে, " কী পথ চেনো ?
আমি তো পথ হতে চাই নি
উড়ে যেতে চেয়েছিলাম
ওরা বলেছিল, এভাবেও উড়ে যাওয়া যায়
আজ বুঝি এটা উড়ে যাওয়া নয়
উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া । "
পথের কাছে এসে অনেকটা গুটিয়ে যাই
আর সত্যিই তো পথকে আজ
ইচ্ছার বিরুদ্ধে উড়ে যেতে হয়
দ্বিতীয় পথকে দেখেছি অনেক কাছ থেকে
তাকে চেনার ওপর
অনেক জোর আছে আমার
আসলে ওটা আমারই মনের একটা আস্তরণ
মূলত আমার কাছ থেকে
আমার গায়ের আস্তরণ থেকেই
পাখি পেয়েছিল তার খোঁটার ধান
আমাকে দেখেই তার ডানাদুটো
কিছুটা হলেও গতি কমিয়েছিল
কতদিন সে কথা বলে নি
উড়ে যায় নি কতকাল
কতকাল
তার হৃদয় জুড়ে বেজে ওঠে নি বাঁশি
তবুও সে চুপ
যেন চিরকালের মতো মাটি
দিগন্ত পর্যন্ত
নিজেকে ছুটিয়ে দিয়েছে পাখি
অথচ আমরা পাখি হই নি
বৃষ্টির হাত ধরে
আকাশে তাকাই নি কখনও
দরজা খুলে একদিনের জন্যও
বাইরে বেরিয়ে এসে সময় ভুলে যাই নি
রাগের মাথায় কাঁচের শিশি ভেঙেছি
পাখি দিগন্ত পর্যন্ত
আমাদের কথামতোই ছুটে গেছে
অথচ আজ আমাদের
একটাও চড়ুই নেই
এসো আমরা গাছে জল দিই
ছাগলগুলোর জন্য
সবুজ ঘাস দেখে দিই
কাটা ঘুড়িটা
বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা
ছেলেটার হাতে দিয়ে আসি
ফিরে আসবে না জেনেই
পাখি উড়ে যাক ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন