দুই নদীর এই মিলন স্থলে বোলান একা আসে না । সে তার কয়েকটি ভেড়া এবং ছাগল নিয়ে আসে। প্রতিদিনই বিকেলবেলা তার ছাগল আর ভেড়া কটি নদীর পারে ঘাস খায়। সন্ধ্যা হয়ে গেলে পরিতৃপ্ত ভেড়া ও ছাগলগুলিকে তাড়িয়ে নিয়ে সে ফিরে আসে বাড়িতে। তখন হয়তো সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। বাড়ির পাশের প্রাচীন বটগাছ থেকে পাপিয়াপাখিগুলো চোখ গেল চোখ গেল বলে ডাকছে। তার মা প্রদীপ হাতে এগিয়ে যাচ্ছে তুলসীমঞ্চের দিকে। এই সন্ধ্যার পৃথিবী তার অপেক্ষায়।
আজ তার খুব মন খারাপ। ঘাসজঙ্গলে সে হারিয়ে ফেলেছে তার লাল রঙের লাট্টুটা। এই লাল রঙের লাট্টুটা ছিল তার প্রিয়। যখন ছাগল-ভেড়াগুলো চরছিল, সে একাকী লাট্টু ঘোরাচ্ছিল । খেলতে খেলতে হঠাৎ হাত ফোস্কে লাট্টুটা ছিটকে পড়ে ঘাসের জঙ্গলে। বহুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরেও সে ঘাস জঙ্গল থেকে উদ্ধার করতে পারে না তার লাল রঙের প্রিয় লাট্টুটা। অথচ একটু আগেই তো হাতের তালুর মধ্যে সে কেমন উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। সে তো শক্ত করেই ধরেছিল কিন্তু হাত ছাড়িয়ে সে হারিয়ে গেছে।
কত কষ্ট তার। মনে হল তার কত প্রিয়জনকে সে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। মা প্রদীপ হাতে একবার তার দিকে তাকাল। সেই বটগাছ থেকে আবার নাছোড় পাপিয়ারা ডেকে উঠল। সেই ডাকের ভেতর সে হারানো লাটিমের ভয়ার্ত কন্ঠস্বর শুনতে পেল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন