অরণ্যের পোস্টম্যান
মন্দিরা ঘোষ

গ্রীষ্মের  পাতা উলটে গেলে বেরিয়ে  আসে ধূসর মেঘের এলিজি।
আকাশি সেলাইঘরে  পিক্টোগ্রাফে বৃষ্টিপাখির ছুটোছুটি।
আশির দশকের ফ্রকে সেলাইদিদিমনির ধমকে মেরুন অভিমানের
রুলটানা ক্লাসঘর।
ভীরু  চোখে স্কুলবাংকের দুরুদুরু আত্মবিশ্বাসে স্নেহের লিথোগ্রাফি। 

শীত এলেই  ফেরিওয়ালার ঝোলায় রঙিন উলের গন্ধ।
ধানরঙের দুপুরে খাঁখাঁ মনখারাপে উড়ে আসতো নীল
সোনাপোকার ডানা।
আহ্লাদের ভাঙাচোরা আসবাবে ইস্কিমিক কালো চশমার  ছায়া।

গোটানো ব্যালকনির ক্যাথিডা থেকে চুঁয়ে পড়ে এইসব
সাদাকালো ঈশপের গল্প।  পাঞ্জাবির পকেটে লেবু লজেন্স
আর  চোখে ঠোঁটে  ডাকনামের আহ্লাদ।
টিনের বাক্সে লুকোনো প্রথমপ্রেমের ভুলভাল সন্ধে ।
কাশ্মিরি শালের ভাঁজে ভাঁজে শীতের দুষ্টুমির বকাঝকা।

আজও ঘুমের আয়তক্ষেত্র  জুড়ে  অরণ্যের পোস্টম্যান 
রোদের চিঠি হাতে দাঁড়িয়ে  থাকে ভাঙা স্কুলবাড়ির বারান্দায়।
শালের বন পেরিয়ে একা একা সবুজ শালোয়ার কামিজে
হেঁটে আসে কলেজ ব্যাগ কাঁধে  একটা ছটফটে  সময়।
হাতে হাত ছোঁয়াতেই বর্ষার মেঘ ভিড় করে আসে
আর ঝমঝম বৃষ্টি  নামে খুব!
সাদা হয়ে যায় চোখের দুফালি আকাশ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন