তলানির ইতিহাস
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
সূর্যসকালে ধুলোপথ ধরে হেঁটে এসেছিলে তুমি
পৃথিবীর প্রথম অরণ্যের বংশধরদের সঙ্গে
তোমার দেখা হয়েছিল নদীর কোলাহলে
দু'হাত বাড়িয়ে নিজেকে ছড়িয়ে দেওয়ার শিক্ষায়
জানলা ভরা ঘরে কেটে গেছে কত কত দিন
কলাপাতায় মোড়া প্রাত্যহিক দিনযাপনে
বারবার উঠে এসেছে রোদের সংক্রান্তি
তুমি তো তখন বানভাসি দেশে
অযুত আর্তের দু'হাতের ভরসা
খেয়ালই করো নি দিন দিন কমে আসছে
বৈচিত্র্যের আদ্যোপান্ত সহজিয়া
উঠোন জুড়ে সাজানো আমসত্ত্বের রাজ্য
মাঝে মাঝে গুটি গুটি পায়ে খুঁজে নিয়েছে
পা রাখার জায়গাটুকুতে ডালের বড়ি
এভাবেই তো ভালোবাসায় ভাগ হয়ে যায়
মানুষের পৈত্রিক সম্পদের দেবদেউল
দু'চোখে জায়গা দিয়েছ আকাশ পাহাড় গাছ
মাথাতে এঁকেছ মাটিঘরের নিকানো দেওয়াল
অথচ অঙ্কটা এমন তো নেই আর
মাথা কেটে ঘোলা জলে ডুব দেয় সব্বাই
ভিজে ভিজে কাঠে লেগে আছে কবেকার রোদ
অনেক কষ্টে তবে পড়া যায়
ধোঁয়া চোখে মায়েদের ফ্যানা ফ্যানা ভাত
কার হাতে সময় অত
অলিগলি ঘুরে ঘুরে চিনে নেবে সনাতন
তবু তুমি পায়ে পায়ে এসেছ উঠোন জুড়ে
হাত নেই পা নেই, নেই খোড়ো ঘর মাচা
কবে তারা খসে গেছে, ঝড় এসে নিয়ে গেছে সব
এভাবেই তো শেষ হয় তলানির ইতিহাস
সব আছে কাছে কাছে
জানা আছে সবুজের সাড়া
তবু সব ঘরে ঘরে
গোঁজা আছে কালো কালো মুখ ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন