জিজ্ঞাসা
সৌমিতা চট্টরাজ


কতখানি ছাই কালো গিলে খেলে ভিখিরীর বাটিতে ভয়ে ভয়ে নেমে আসে আকাশের চাঁদ!--
-- জিজ্ঞেস করে লাভ কি তাদের! যারা আলো আর আগুনে তফাৎ জানে না।
সত্যান্বেষী মরেছে সেই কতো কাল আগে---- অন্তত বেঁচে থাক মা, ফুল পিসি, সোনা ঠাম্মা। চোখের আড়াল হলেই যারা ডাক দেয়-----" ও আগুনে ডুব দিতে যাস নে বিনি, তোর যে আজন্ম অতলে ফাঁড়া"।
হাসি পায়, মনে মনে ভাবি-" জলেই আমার বড়ো বেশী ভয়। কই! আগুন তো আমাকে ছুঁয়েও দেখে না।"
মানুষেরা চিরকালই এমন বোকা বোকা হয়---- শক্তি আর দুর্বলতা কে গুলিয়ে ফেলে, বুঝেও বোঝে না।
সন্ধ্যের মুখে রোজ হাঁটা শুরু করি;
মায়ের কপাল থেকে স্নায়ুর ভেতর।
চোখ দুটো কড়কড় করে। ক্রমাগত জেগে থাকে মা---- ভীষণ ছোঁয়াচে এই ইনসোম্যানিয়া, রাতজাগা রোগ।
ফুলপিসি একমনে উল কাঁটা বোনে।
চটপট ঘর তোলে---- একে একে এগারোটা এফোঁড় ওফোঁড়----সোজা উল্টো, বেগুনী সোয়েটার-----  হাতে ধরে শেখাতে চেয়েছে বহুবার। পারেনি----
কাঁটার ওই ঘর আমাকে কোনদিনই টানে না। তবুও হেঁটে যায় মধ্য পঁচিশ ---- কপালের ভাঁজ থেকে ভ্রুএর মাঝে ----- চোখ থেকে ঘুমে----- ঘুম থেকে সেই বুড়ো ফকিরের কাছে----
ঝুলিতে যার মুঠো মুঠো ধান, হা হা ক্ষিধে, কবিরের দোঁহা, তিন তালাক, লতানো বিকেল আর ঝকঝকে ভোর---- যে দিলেও দিতে পারে আমার সমস্ত উত্তর------ কতখানি ভালবাসা পেলে মাটিতে নেমে আসে আকাশের চাঁদ?
শুতে চায় ভিখিরীর তোবড়ানো বাটির ভেতর!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন