যে মেয়েটি
-জ্যোতির্ময় মুখার্জি
গাছ হতে হতে ঘুমিয়ে গেছিল রাতের সন্দেহে
তার চিঠি জমিয়ে রেখেছিলাম সযত্নে
ও নদীকে বলত পাখি
ও আকাশ দেখে বলত চাদর-মোড়া ঘুম
ওর চোখে কখনও পুরনো দেখিনি
ও চাঁদ মুছে মুছে আলো জমাতো
ও পালক ভেঙে ভেঙে স্বাধীন
ওর শব্দেও, কোনও মৌন দেখিনি
ওর চিঠি, আশ্চর্য সাদা চুপ
নদী বলল অকারণ হয়ো না
জ্যোতির্ময় মুখার্জি
পুজোর থেকেও ফুলগুলো সুন্দর
যেভাবে সেতুর বাইরে বাইরে ঝুলে থাকে মানুষ
নদী বলল অকারণ হয়ো না
বাতাস বইছে
বাতাস বইছে
রোদের অপরাধে
গাছগুলোও সুন্দর
ওদের হাড়মাসে দলা পাকিয়ে পাকিয়ে মানুষ
একটি প্রেমের কবিতা
জ্যোতির্ময় মুখার্জি
সমস্তকিছুই ব্যক্তিগত হয়ে উঠছে, আমার
যা কিছু, সকাল বিকাল রাত এবং তুমি
হয়তো এটাকে একটি প্রেমের কবিতা
বলেই ভুল করবে। কিন্তু আমি
রিক্ততার থেকে নিঃস্ব হতেই বেশি পছন্দ করি
এসো, হত্যা করো রাত
-জ্যোতির্ময় মুখার্জি
এই দ্যাখো কেমন হেঁটে যাচ্ছি, হেঁটে যাচ্ছি
অথচ পা’দুটো কিছুতেই পথ হচ্ছে না
ইতিউতি ছড়িয়ে পড়ছে দাগ
বুঝতে পারছি, শেষ হয়ে আসছে সময়
এতো কালো কেন
এসো, হত্যা করো রাত
আমার আলো ভালোলাগে না
আয়না
-জ্যোতির্ময় মুখার্জি
যদিও এটা কোন’ও কথা নয়, তবু
সময় বলতে আমি ঠমক-ভাঙা নারীই জানি
এই যে জল মহাশয়া, স্থির হয়ে দাঁড়াতেই
আমি তাকে অভিবাদন জানালাম
তিনিও স্মিত হেসে ঢেউ খুললেন
পাড় ভাঙলেন, নাচতে নাচতে নদী হলেন
প্রকৃত প্রস্তাবে দুজনেই দুজনের প্রসারিত নকশায়…
গুলিয়ে উঠলে মেরুদন্ড, শিরদাঁড়ার
ভিতর ধুয়ে খেমটা নাচে যে দ্বন্দ্ব
তাকে আমি আয়না বলেই মানি
মৃত
-জ্যোতির্ময় মুখার্জি
নেই নেই কিছু। পুরনো শব্দেরা
এবং একটা মুখ
যাকে আমি মৃত্যু নামেই চিনি
সেখান থেকেই শুরু হয় একটা দৌড়
ক্রমশ পিছোতে পিছোতে এই যে মুহূর্ত
তাকে আমি মৃত বলেই মানি
ফিরে গেছে রোদ
-জ্যোতির্ময় মুখার্জি
প্রতিটি রাতের শেষেই ভোর থাকে
যেভাবে প্রতিটি ভোরেই শেষ হয় রাত
ব্যাপারটা খুবই সোজা
কিন্তু অতটাও সহজ নয়
জটিলতা শুরু হয় ঠিক তখনই, যখন
রাত ফুরালেও আঁধার কাটে না
যেমন ফুল ফুটলেই কিন্তু বসন্ত আসে না
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন