চুপকথা
--আমিনুল ইসলাম

প্রতিবাদেরও চিরায়ত কিছু শৈলী আছে। তার মধ্যে আপনি বা আমি কোনটাকে তুলে নেব? যেটাতে কী শুধুই আমির আবর্তে ঘুরপাক খাবে, নাকি সমগ্র মানবজাতির কল্যানের ভায়োলিন বেজে উঠবে, সেটা? আসলে দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কীভাবে গড়ে উঠবে এই দৃষ্টিভঙ্গি, এখানেই একটা দীর্ঘ প্রশ্নচিহ্ন উঠে দাঁড়ালো। এখানেই থেমে থাকলে হবেনা আমাদের, খুঁজতে হবে সেই পথের সন্ধান। কোথায় পাবো সেই সন্ধান? সামনেই পরে আছে, শুধু এড়িয়ে যাচ্ছে চোখ। আমাদের দৃষ্টি নানা ঘাত-প্রতিঘাতে ঘষামাজা খেতে খেতে স্বচ্ছতা হারিয়ে ফেলেছে। মন্থনের আই ড্রপ দিয়ে সেই অস্বচ্ছতা ফিরে পেতে হবে। এই সুবিশাল প্রতিবাদি ক্ষমতার বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিবাদ দিয়ে একে রোখা যাবেনা, একটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে আমাদের। মহাত্মা গান্ধীর নাম আমরা মনে রেখেছি, ভুলে গেছি তার জীবন সংগ্রামের ইতিহাস। আসলে আমরা নিজে থেকেই কি ভুলে গেছি, না কেউ বা কারা আমাদের ভুলিয়ে দিয়েছে? শুধু ভুলিয়ে দেওয়া নয়, তাঁর সম্বন্ধে আমাদের চেতনায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ভিন্ন মতবাদ। এই প্রশ্নের উত্তর আমি দিচ্ছি না, কারণ সেটা আমার নিজস্ব ব্যক্তি বোধের ফসল, সেটাকে উপস্থাপন করে আপনাদের মাথায় আমার মত গেঁথে দেওয়ার সংকীর্ণতার প্রয়াস আমার নেই। শুধু প্রশ্নটি উস্কে দিলাম সবার মাথায়। ভাবুন, ভাববার সময় এখনো হয়তো কিছুটা বাকি আছে।

শুধু গান্ধীজীর ক্ষেত্রে নয় আরও অনেক বিষয়েই আমাদের চেতনার আসল সত্তাকে বদলে দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়েছে এক মনগড়া ব্যাখ্যা, এগুলো আমাদের অবচেতনেই ঘটেছে। আসলে হয়তো আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না কোনো দিনই, তাইতো এই অবক্ষয়ে ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে আমাদের জ্ঞানের পরিধি, সর্বপরি আমাদের বিশ্বাস। অসীম শ্রদ্ধালু ঈশ্বরের বেদিতেও এঁকে ফেলেছি কোন এক জীবন্ত শরীরি ঈশ্বরের ছায়া। আমাদের সভ্যতা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি কতো ঠুনকো হয়ে বেজে উঠেছে নানা ভাবে ভারতের মানচিত্রে। এ সবকিছুই আমাদের সন্মুখেই ঘটেছে, অতএব এগুলোর দায়ভার আমাদেরকেই নিতে হবে। চলুন এই চুপকথায় একটা অহিংস প্রতিরোধ গড়ে তুলি। খেয়াল রাখতে হবে সেটাতে যেন কোনো ভাবেই প্রতিবাদের আগুন লেগে না যায়। আগুন লাগলে তো নিজেকেও পুড়তে হবে।

2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন