ভুবনডাঙা-১৪৩০ পঁচিশে বৈশাখ প্রিন্ট সংখ্যার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ
বৈশাখ
মুরারি সিংহ
গতকাল, রবি-ঠাকুরের জন্মদিনে, হাজির হয়েছিলাম শান্তিনিকেতনে, আমিনুল ইসলামের ভুবনডাঙা আয়োজিত বার্ষিক কবিতা উৎসবে। তীব্র রোদ, গনগনে সূর্য, দুঃসহ তাপপ্রবাহকে অগ্রাহ্য করে নানা দূর দূর জায়গা থেকে অনেক কবিতা-অনুরাগী এসেছিলেন , কবিতার টানে, রবি-ঠাকুরের টানে, শান্তিনিকেতনের টানে। গান-কবিতা-আলোচনার মধ্যে দিয়ে সারাদিন একটা চমৎকার সেলিব্রেশন এল।
নতুন প্রজন্মের অনেক ছেলেমেয়ের মধ্যেই দেখি কেমন একটা গা-ছাড়া ভাব, কবিতা লিখে নানা পত্রিকায় পাঠানও বা ফেসবুকের দেয়ালে পেস্ট করাটাই তাদের একমাত্র কাজ। তাদের মধ্যে আমিনুল আশ্চর্য ব্যতিক্রম। নিয়মিত একটা ওয়েব-ম্যাগাজিন প্রকাশ করা, মাঝে মাঝে তার প্রিন্ট ইস্যু বের করা, তা ছাড়াও অল্প-সামর্থ্যের মধ্যে বই বের করা এ-সব তো আছেই তাদের সঙ্গে নানা জায়গার কবিতাপ্রেমীদের এক জায়গায় এনে এই রকম একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন, বাংলা-কবিতার এক সামান্য কর্মী হিসেবে আমিনুলকে টুপি খুলে সেলাম ।
এই উপলক্ষে নতুন প্রজন্মের অন্যান্য কবি-বন্ধুদের অনুরোধ করছি, কবিতাকে সামনে রেখে আপনারাও নিজের নিজের এলাকায় সাধ্য মতো ছোটো ছোটো অনুষ্ঠানের আয়োজন করুন। সেখানে কবিতা-পাঠ, কবিতা নিয়ে আলোচনা, পারস্পরিক মত বিনিময় করুন। বাণিজ্যিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বড়োবাবুদের জানিয়ে দেন – আমরাও আছি, তোমরা যতই অবজ্ঞা, অবহেলা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য বা বর্জন করো না কেন, আমরা আমরা আছি কবিতার ভাইরাস হয়ে, দলে দলে , আমরা আমাদের মতো করে কবিতাকে উদ্যাপন করছি। তোমরা কবিতাকে বিগ্রহ করে তোমাদের সাজানো ঠাকুরঘরে ফুল-মালা দিয়ে তার সেবা করতে পারো, আমরা কিন্তু কবিতা নামিয়ে এনেছি প্রান্ত-বাংলার মাটিতে, আমাদের রোজকার যাপনে, আমাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হিসেবে। আমাদের হাত ধরেই তৈরি হচ্ছে বাংলা-কবিতার আগামীকাল।
ধন্যবাদ আমিনুল, ধন্যবাদ ভুবনডাঙা, ধন্যবাদ বাংলা-কবিতার আগামী প্রজন্ম। এই সময়ের সমস্ত বিরূপতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কবিতাই আমাদের একমাত্র ভরসা, একমাত্র অস্ত্র।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন