ঘুমের দানাপানি



(১)
রোদ খুঁটে খুঁটে  নিচ্ছি। বৃত্তের চারদিকে থৈথৈ করছে জল

যেদিকে তাকানোর কথা ছিল, সে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে জনতা 

এখন আমি একটা গাছের নীচে দাঁড়িয়ে থাকি


বৃষ্টি বা সুনামি স্পর্শ করতে পারে না কিছুই

অথচ আমার চোখের সামনেই দড়ির ওপর দিয়ে হেঁটে যায় অসংখ্য পিঁপড়ে 


খাদ্য খাদক থেকে শুরু করে জলীয়বাষ্প মেঘ...

সবটুকু স্পষ্ট  দেখতে হলে মগডালে নয় মুগডালে সেদ্ধ করতে হয় একমুঠ  চাল





(২)
ঘুমিয়ে পড়ার আগে ঘরের চার দেয়াল, কেমন যেন অতিরিক্ত সুন্দরী হয়ে ওঠে

জুঁইফুলের মালা জড়িয়ে নতুন কনে সেজে তার চলাচল ঘরময়

বারান্দায় থপথপ করে জল।ঘরের মেঝেতে রোদ্দুর 

বিছানাতে সার্মথ্য ছাড়াও ছড়িয়ে রাখি "ভরা বাদর "

ওস্তাদজী আসেন। এসরাজ বাজে।

নীলজলের পেয়ালায় মিশতে থাকে দরজার ক্যাঁচক্যাঁচ


"আভি না যাও ছোড় কর কে দিল আভি ভরা নেহি"





(৩)
একটা মিথ। 

"ভেঙে দেবার হলে ভেঙে দিয়ে যান"

নথিতে উল্লেখ থাকলে জেনারেশন গ্যাপ আসবে না


একটা অভিযোগ। 

"আপনার বিরুদ্ধে বাঁচানোর মামলা দায়ের হল"

যার খিদে নেই তাকে ঘুমের বড়ি খাওয়ানোকে জনতা অপরাধ বলেছে


একটা আয়না।

"কাচের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমাকে দেখবেন কখন?"

জন্মান্তরবাদে আস্থা আছে, জানি এক বিছানায় ঘুমোনোর অধিকার আসবে





(৪)
পর্দা সরালে সভ্যতা সরে যায় বাঁদিকে

ভিজে কাপড় শুকায়। রাজার বিছানায় উড়ে আসে পাখি 


শস্য ফলে। লোকজন ভীড় করে জানালার পেছনে

তুমি ঝুঁকে পড়ে দেখে নাও খাটের তলায় কতটা মাটি ছুঁড়ে ফেলে গেছে তারা


হিসেব শেষে দেখা যায়, তোমার মাথায় বালিশে ওরাই তুলো ভরেছে কিন্তু দাম ধার্য্য করেনি ঘুমের 





(৫)
উনুন। একটা প্রতীকী মাত্র 


এর সামনে একদল লাজুক মানুষ।

ভেতরের আগুনে পুড়ে যাচ্ছে বেগুন, সকলে হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছে ভর্তার জন্য 


খিলখিল করে হাসছে খিদে। উনুনের নীচে নদী

কতদিন সাবান মেখে স্নান করিনি।

কতদিন একথালা ভাত নিয়ে সূর্যকে বলিনি,"খেতে বড় ভালবাসি"


এখন... 

হামাগুড়ি দিতে দিতে রোজ ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি ঘরময় ছিটিয়ে থাকে প্রিয় দানাপানি 





পিয়াংকী 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন