ধৃতিরূপা দাস




উনিশ শতকের শিশু-কিশোর পত্রিকার ভূমিকা: নীতিশিক্ষার পরিপূরণ: নির্দোষ আমোদ 

'শিশু কিশোর সাহিত্য' বলতে বোঝায় শিশুসাহিত্য ও কিশোরসাহিত্যকে একসঙ্গে ছোটদের সাহিত্য হিসেবে 
যার পাঠক নির্দিষ্ট বয়ঃক্রমের অন্তর্ভুক্ত নাও হতে পারে। যদিও শিশুসাহিত্য ও কিশোরসাহিত্য বিষয়ের দিক
 থেকে ও রসাস্বাদনের তারতম্যে পৃথক, অনেকেই কিশোরদের জন্য রচিত সাহিত্যকে শিশুসাহিত্যেরই অন্তর্বর্তী
 মনে করেন। পাশ্চাত্যে চাইল্ড লিটারেচারের পাশাপাশি জুভেনাইল লিটারেচার নামে কিশোর সাহিত্যের সমান্তরাল
 ধারা প্রচলিত। পাশ্চাত্য প্রভাবেই এদেশে শিশু-কিশোর সাহিত্য কেন্দ্রিক পত্রিকা-ভাবনা তৈরি হয় ঊনবিংশ 
শতাব্দীতে।

১৮০০ সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে সিভিলিয়ানদের জন্য যে সমস্ত পাঠ্য বই সংস্কৃত ও ফারসি 
থেকে অনুবাদ করা হলো,তাতেই অল্পবয়স্কের জন্য বিশেষ রচনার সূত্রপাত হয়। ১৮১৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া
 কোম্পানি ভারতে সাহিত্যের পুনর্জীবন ও উন্নতি বিধান, পণ্ডিতদের উৎসাহ দান এবং এদেশবাসীর মধ্যে 
বিজ্ঞান শিক্ষার প্রবর্তনকল্পে অন্য সব রকম খরচ মিটিয়ে বছরে এক লক্ষ টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিলে 
উপনিবেশে বিদ্যালয়কেন্দ্রিক পড়াশুনোর একটা ঢেউ ওঠে এবং ১৮১৭ সালে 'কলিকাতা স্কুল সোসাইটি' এবং 
'কলিকাতা স্কুল বুক সোসাইটি' প্রতিষ্ঠিত হলে স্কুল পড়ুয়াদের পক্ষে উপযোগী নানান পাঠ্যবই প্রকাশিত হতে থাকে। এগুলোই ক্রমে শিশু কিশোর পত্রিকার পটভূমি রচনা করেছে। "যা ছিল মুষ্টিমেয় সিবিলিয়ানদের শিক্ষিত করে
 তোলার অন্যতম সহায়ক,তা রূপান্তরিত হয় শিশু-কিশোর পাঠ্য হিসেবে।"১

খগেন্দ্রনাথ মিত্র মহাশয়ের মতে 'বাংলা প্রথম কিশোর সাময়িক পত্রিকা' 'দিগ্দর্শন' -- প্রকাশিত হয় ক্লার্ক মার্শম্যানের সম্পাদনায় ১৮১৮ সালে। পত্রিকাটি পাঠ্যগ্রন্থের মতো স্কুল বুক সোসাইটি বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে বিতরণ করতো,
স্কুলে তা পড়ানো হতো এবং এর বিষয়বস্তু ছিল বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল নির্ভর পাঠ্য ঘেঁষা জ্ঞানবর্ধক 
রচনা। অনুমান করা যায় বিদ্যালয়শিক্ষার পরিপূরক হিসেবেই এর আত্মপ্রকাশ যার উদ্দেশ্য ছিল বাঙালির শৈশব 
ও কৈশোরকে উপনিবেশের উপযোগী করে গড়ে পিটে নেওয়া। তাছাড়া আখ্যাপত্রের বয়ানে "যুবালোকের কারণ 
সংগৃহীত নানা উপদেশ" কথাটা স্পষ্টতই কর্তৃপক্ষের নীতিশিক্ষা প্রদানের চেষ্টাকে প্রমাণ করে। দিগ্দর্শনকে তাই
 বিশুদ্ধ ছোটদের পত্রিকা বলতে নারাজ অনেকেই। এই দোষে কম-বেশি দুষ্ট সেই সময়ের অধিকাংশ পত্রিকাই। 
পশ্বাবলী (১৮২২),জ্ঞানোদয় (১৮৩১),জ্ঞানচন্দ্রিকা (১৮৩৮),পক্ষীর বৃত্তান্ত (১৮৪৪) এছাড়াও সমকালে মেকলে মিনিট,উডের ডেসপ্যাচের হলে বাঙালির লেখাপড়া করে গাড়িঘোড়া চড়ার আগ্রহ অর্থাৎ উপযোগবাদী 
শিক্ষাব্যবস্থায় আগ্রহের সূত্রে বা মিশনারিদের চেষ্টায় আরও যেসব শিশু-কিশোর পাঠোপযোগী পত্রিকা প্রকাশিত 
হতো অধিকাংশই ছিল স্কুল বুক সোসাইটি নির্মিত পাঠক্রমের পরিপূরক।

তাছাড়া যে লেখাগুলি এসময় বেরুচ্ছে তাতে প্রতিবাৎসল্যের জায়গা ছিল না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নীতশিক্ষা 
দিয়ে যুগোপযোগী করে তোলার চেষ্টাই ছিল এখানে প্রধান।

১৮৫৩ সালে প্রকাশিত 'বিদ্যাদর্পণ'-এ (মাসিক পত্রিকা) খগেন্দ্র মিত্রদের উক্তি অনুযায়ী 'নীতি' ও 'বালকদিগের 
পাঠযোগ্য অনেক বিষয়' গুরুত্ব পেয়েছিল। খৃস্টান ভার্নাকুলার এডুকেশন সোসাইটি কর্তৃক ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে 
প্রকাশিত শিশুসাহিত্য মাসিক পত্রিকা 'সত্যপ্রদীপ' আবার অবলম্বন করেছিল খৃস্টকে। ১৮৫৭'র মহাবিদ্রোহের 
পরে এই পত্রিকাটি আসলে শাসক কর্তৃক উপনিবেশের সমাজ-সংস্কৃতিকে একরকম ভাবে বুঝতে চাওয়া এবং 
গল্পচ্ছলে নীতিশিক্ষা প্রদান। অতঃপর মাসিকপত্র 'অবোধবন্ধু' (১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দ) প্রথম ভেবেছিল বালক 
বালিকাদের পাশাপাশি 'অন্তঃপুরস্থ মহিলাগণের' কথা। 'জ্যোতিরিঙ্গণ' (১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ) মাসিক পত্রিকাতে 
নীতিশিক্ষার পাশাপাশি 'আমোদ'কে প্রথম গুরুত্ব দেয়া হয় যা আদর্শ শিশু কিশোর পত্রিকার অপরিহার্য উপাদান। বালকপাঠ্য বাংলার প্রথম পাক্ষিক সাময়িকপত্র 'বালকবন্ধু' (১৮৭৮) প্রকাশিত হয় কেশবচন্দ্র সেনের সম্পাদনায়। অবিমিশ্র শিশু পত্রিকা বলতে যা বোঝায় তার আভাস জোরালো হয়েছিল এ পত্রিকায় যদিও ব্রাহ্মধর্মের প্রভাবমুক্তি ঘটেনি।

উনিশ শতকে প্রকাশিত প্রথম আদর্শ ছোটদের পত্রিকা ছিল প্রমদাচরণ সেনের 'সখা' (১৮৮৩)। বিদ্যালয় শিক্ষা,
নীতি শিক্ষাকে এ  পত্রিকা যে পুরোপুরি বর্জন করেছিল তা বলা যায় না। প্রথম সংখ্যার প্রস্তাবনায় 'বালক বালিকাদের জ্ঞানের ও চরিত্রের উন্নতির জন্য ' পত্রিকাটির জন্ম বলে সম্পাদক জানিয়েছেন। ফলে নৈতিক শিক্ষা প্রদানের চেষ্টা
 একটা ছিলই। ছাপা হয়েছিল 'ধূমপান' নামাঙ্কিত একটি ধূমপান বিরোধী নিবন্ধ, 'ব্রাহ্মধর্মের লক্ষণ ও উপাসনা 
পদ্ধতি' গ্রন্থের সমালোচনা, বালিকার পোশাক সংক্রান্ত রচনা, 'সহজে কি বড়লোক হওয়া যায়' নামাঙ্কিত নীতি 
শিক্ষামূলক ধারাবাহিক লেখা। কিন্তু এসবের পাশাপাশি রোমান্টিক  প্রত্নকল্পে যে শিশুকে আমরা পাই,যাকে অলীক স্বর্গরাজ্যের বাসিন্দা মনে করি অর্থাৎ ছোট বড়োর বাইনারি থেকে বেরিয়ে শিশুকে খোঁজা -- এ চেষ্টা ছিল 'সখা'র। উপযোগবাদী দর্শনকে এভাবেই প্রত্যাঘাত করতে চেয়েছিলেন প্রমদাচরণ।

এখনকার শিশু কিশোর পত্রিকায় যেসব বিভাগ থাকে-- সবই ছিল সখাতে। ছোটদের সঙ্গে এ পত্রিকা নানা ভাবে যুক্ত
 হতে চেয়েছিল। আকর্ষণের জন্য মুখপত্রের ক্যালিগ্রাফি থেকে শুরু করে ছবি,ধাঁধা, পুরস্কার ঘোষণা, ছোটদের লেখা ছাপা, নিয়মিত গ্রাহক তৈরির চেষ্টা এবং সর্বোপরি ছিল এর অভিনব সম্পাদনারীতি। নানান জ্ঞানবর্ধক বিষয় নিয়ে
বলা হতো বটে যার সঙ্গে নীতি ও বিদ্যায়তনিক শিক্ষার গভীর যোগ আছে কিন্তু যেভাবে গল্পচ্ছলে বলা হতো সে কৌশলটাই পত্রিকাটিকে বিশেষ করে তুলেছিল। পূর্ববর্তী শিশু-কিশোর পত্রিকাগুলিতে যে উঁচু অবস্থান থেকে কথা 
বলার প্রবণতা, নির্দেশিকা, বড়োদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ছোটদের দেখা ছিল-- সখা কিন্তু সেসব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম 
করে ছোটদের ভাষাকেই আয়ত্ত করতে চেয়েছে। তাছাড়া এ পত্রিকা এক নতুন শিশু সাহিত্যিক বর্গ তৈরি করে 
ফেলেছে।প্রমদাচরণ নিজে, শিবনাথ শাস্ত্রী, ভুবনমোহন রায়, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী,মন্মথনাথ মুখোপাধ্যায়, বিপিনচন্দ্র পাল, পরের দিকে অন্নদাচরণ সেন, নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য -- কে না লিখেছেন! এবং যেসব লেখা ছাপা হতো 
সেগুলো সবসময় বিদ্যায়তনিক শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। শিশুসাহিত্যকে বাধ্যতামূলক পাঠক্রমের বাইরে নিয়ে 
আসার যে চেষ্টা সখায় ছিল তা-ই বিশ শতকের আদর্শ শিশু কিশোর পত্রিকার পটভূমি রচনা করেছে। পরবর্তী 
সময়ে সেই চেষ্টাই দেখা যায় 'সখা ও সাথী', 'মুকুল' প্রভৃতি পত্রিকায়।

অতঃপর শিশু-কিশোর পাঠ্য পত্রিকা গুলির মধ্যে ছিল--
বালিকা: যুগসাপেক্ষে নামটি কৌতুহলোদ্দীপক হলেও বিশদ জানা যায়নি। প্রকাশকাল ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ।
সুনীতি: উদ্দেশ্য ছিল 'বালক ও যুবকবৃন্দের হৃদয়ে আর্য্য রীতি নীতির প্রবর্তনা ও আর্য্যভাবের উদ্দীপনা'২। 
প্রকাশকাল ১৮৮৩।
বাল্যবন্ধু: প্রকাশকাল ১৮৮৩। উদ্দেশ্য ও কার্য ছিল ছোটদের মধ্যে খৃস্টতত্ত্ব প্রচার।

এরপর ১৮৮৫ সালে ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত হয় 'বালক'। এ পত্রিকার সম্পদনাকর্মে জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর 
সহকারী ছিলেন তরুণ রবীন্দ্রনাথ। বালক প্রসঙ্গে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ-- সম্পাদক ও সহকারীর মধ্যে 
বালক তথা সমগ্র শিশুতোষ সাহিত্য ও পত্রিকার চরিত্র সংক্রান্ত তর্ক যার সূত্রে শিশু বলতে কী বুঝবো সে অবস্থানকে 
খুব স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। জ্ঞানদানন্দিনী এক্ষেত্রে নিয়ম অনুশাসন ইত্যাদিতে জোর দিয়েছিলেন আর রবীন্দ্রনাথ প্রশ্রয় দিয়েছিলেন রোমান্টিক শিশুর প্রত্নরূপকে। রোমান্টিক দের হাতে উপনিবেশের অনুশাসন থেকে 
মুক্তির কথা বলেছিলেন তিনি। বালকে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের একটি গদ্যাংশ এ প্রসঙ্গে স্মরণযোগ্য --
"অর্থাৎ বাতিকের আবশ্যক। আমাদের শ্লেষ্মা প্রধান ধাত, আমাদের বাতিকটা আদপেই নাই। আমরা ভারি ভদ্র,
ভারি বুদ্ধিমান, কোনও বিষয়ে পাগলামি নাই। আমরা পাশ করিব, রোজকার করিব এবং আমরা খাইব।"৩

অর্থাৎ ভদ্র, বুদ্ধিমান, রোজগেরেদের উল্টোদিকে বাতিকগ্রস্ত পাগলরাই উপনিবেশের মুক্তিদূত। তারাই যে শিশু 
হিসেবে ভবিষ্যতে আত্মপ্রকাশ করবে এবং তাদের ঘিরেই যে নীতি শিক্ষা- বিদ্যালয় শিক্ষার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম 
করে শিশু-কিশোর সাহিত্যের পরের সম্ভার তৈরি হবে তার আভাস দিয়েছিল স্বল্পায়ু 'বালক'। বিমিশ্র পত্রিকা হয়েও
 তাই 'বালক' এক বিশেষ অধ্যায় শিশু-কিশোর পত্রিকার ইতিহাসে।

ঊনবিংশের শেষ দশকে বিশেষভাবে উল্লেখ্য শিশু ও কিশোর পাঠ্য পত্রিকার মধ্যে আছে 'সাথী' (১৮৯৩ সাল)। ভুবনমোহন রায়ের সম্পাদনায় এর সাথে ১৮৯৪ সালে মিলেমিশে যায় 'সখা'। 'সখা ও সাথী'তে লিখেছেন 
রবীন্দ্রনাথ, উপেন্দ্রকিশোর,যোগীন্দ্র সরকার, ত্রৈলোক্যনাথ, রাজনারায়ণ বসু,গিরীন্দ্রমোহিনী প্রমুখ। সখা যেমন 
একদিকে বালক বালিকার নৈতিক ও বিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষা এবং অপরদিকে তাদের আমোদ-- এই দুয়ের মধ্যে
একটা সামঞ্জস্য আনতে চেয়েছিল, সখা ও সাথী সে আদর্শকেই বহমানতা দিয়েছে।

১৮৯৫ সালে 'মুকুল' প্রকাশিত হয় নীতিবিদ্যালয়ের উদ্যোগে। সম্পাদক ছিলেন শিবনাথ শাস্ত্রী। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার 
সাথে সাথে এ পত্রিকার জন্ম হওয়ায় বিদ্যায়তনিক শিক্ষার প্রতি এর দৃষ্টি ছিল বলা চলে। এমনকি নৈতিকতার 
দিক দিয়ে এ পত্রিকার একটা ব্রাহ্ম-মূল্যবোধ-নির্ভর সংকীর্ণ অবস্থানও ছিল। তাছাড়া নতুন শিক্ষানীতি যে 
বয়ঃসীমার কথা বলে, শিশু ও কিশোরকে চিহ্নিতকরণে মুকুল সেই বয়ঃসীমাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিল--
" মুকুল সম্পূর্ণরূপে ছোট শিশুদের জন্য নহে। যাহাদের বয়স ৮|৯ হইতে ১৬|১৭র মধ্যে ইহা প্রধানতঃ তাহাদের 
জন্য।"৪
বয়ঃসীমা গুরুত্ব পেয়েছিল প্রমদাচরণের 'সখা'তেও। বস্তুত 'মুকুল' 'সখা'-ঘরানারই ফসল। উভয়েই উপনিবেশের শিক্ষা,উপযোগবাদী দর্শন এবং রোমান্টিক শিশুর প্রত্যাঘাত-- দুয়ের মধ্যে একটা ব্যালান্স করতে চেয়েছিল।
 'বালকদিগের রীতি নীতির উন্নতি'র পাশাপাশি তারা যাতে আমোদিত হয়,প্রাণ খুলে হাসে সেদিকেই মনযোগী
ছিলেন মুকুল কর্তৃপক্ষ। এ পত্রিকার জন্য কলম ধরেছেন শিবনাথ শাস্ত্রী নিজে, রবীন্দ্রনাথ, নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, 
জগদীশ চন্দ্র বসু,রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়,যোগীন্দ্রনাথ সরকার,দীনেন্দ্রকুমার রায়, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, 
কুসুমকুমারী দাশ, লাবণ্য প্রভা বসু,হেমলতা সরকার এবং আরও অনেকে। বিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষা,নীতি
শিক্ষাকে সম্পূর্ণ বর্জন না করেও 'মুকুল' 'সখা'রই মতন তৈরি করেছে শিশু-কিশোর সাহিত্যের একটা নতুন মডেল।

দীর্ঘ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একথা স্পষ্ট যে উনিশ শতকের শিশু-কিশোর পত্রিকাগুলি তাদের কালগত প্রবণতার 
দরুণ বিদ্যালয় শিক্ষার পরিপূরক হিসেবে নীতি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছে ঠিকই কিন্তু সেটুকুই সকলের মুখ্য বৈশিষ্ট্য 
নয়। সখা, বালক, মুকুলের মতো পত্রিকার গভীরেই ছিল আদর্শ, অবিমিশ্র, ভবিষ্যৎ শিশু-কিশোর পত্রিকা-ভাবনার 
জন্ম- ইঙ্গিত।

তথ্যপঞ্জী:
১. কথামুখ: বাংলা গদ্যে নীতিশিক্ষা: আশীষ খাস্তগীর
২. শতাব্দীর শিশুসাহিত্য: খগেন্দ্রনাথ মিত্র: পৃ: ২৪
৩. শতাব্দীর শিশুসাহিত্য: খগেন্দ্রনাথ মিত্র: পৃ: ২৬
৪. মুকুল: দ্বিতীয় সংখ্যা: শতাব্দীর শিশুসাহিত্য: খগেন্দ্রনাথ মিত্র :পৃ: ৩০

সহায়ক গ্রন্থ:
১. বাংলা গদ্যে নীতিশিক্ষা: আশীষ খাস্তগীর
২. শতাব্দীর শিশুসাহিত্য: খগেন্দ্রনাথ মিত্র
৩. শিশু সাহিত্যের ক্রমবিকাশ: আশা গঙ্গোপাধ্যায়
৪. শিশুসাহিত্য: বীরবলের হালখাতা: প্রমথ চৌধুরী

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন