রাজেশ্বর গোপাল
মাথার উপর একটা মস্তো বড়ো গাছ ছিল;
গাছটি বিশাল ছাতা হয়ে আটকে রেখেছিল
বৃষ্টির ঝাপটা
রোদের প্রখরতা
হিমের কুশলতা....
এতো বড়ো বড়ো হাত রেখে,ডানা মুড়িয়ে,পাখনা মেলে
উদারতা দিয়ে জাপটে ধরেছিল
ঝাউবোন
মায়ারোদ
স্নেহসিঞ্চন....
কিন্তু কখন যে গোপনে ঘুণে ধরেছিল গাছের শরীরে
বুঝিনি; এরকম ভাবিওনি
কেননা গাছই তো জীবন,জীবন বাতাস
তাই গাছের শরীরে বাঁধন! দেখা হয়নি
অথচ অদ্ভুত ভাবে আপন তেজে দাঁড়িয়েছিল;
নরম মাথা নাড়িয়েছিল আশ্চর্যজনক ভাবে।
আপন ঔরসে ঝলমল করে উঠেছিল মৃদু ঠোঁট
যেন কিছুই হয়নি, কিছুই জানে না ও ----
বর্ণময় হয়ে উঠেছিল চোখ মুখ
সূক্ষ্ম আঙুলের সূঁচাগ্রে এঁকে রেখেছিল জল,
পিপাসা বিদ্যা....
তারপর,
তারপর হঠাৎ একদিন
গাছটি নুইয়ে পড়লো, ভেঙে পড়লো, শুয়ে পড়লো
শূন্য মাথার উপর তাকিয়ে দেখলাম
খুলে গেছে আকাশের সাজ পোশাক
গাছ যেন আলো হয়ে গেছে......
সাদা হলুদ আলো প্রতিদিন সকালে জানালার সরলরেখা ধরে
মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে
খিলখিল করে ওঠে ঘরময়---
মধ্য রাত্রে স্নাত ঝর্ণাধারায় গুঁড়ো গুঁড়ো জ্যোৎস্না হয়ে
ঝড়ে পড়ে আমাদের বাড়ির উপর
আর আমরা আলো আলো খেলি,গায়ে মেখে নিই;
শিখে নিই আলোকবিদ্যা
কীভাবে দিতে হয়, কীভাবে নিতে হয়
আলোর সম্মোহনে আস্তে আস্তে ধাঁধিয়ে যায় চোখ!
আবছা পড়ে দৃষ্টি
শরীরে শিয়রে শিহরণে জেগে ওঠে মায়াতরু নিরলস
আহা! আমার গাছ যেন আজ আলো হয়ে গেছে;
আলো হয়ে গেছে আমার গাছ.......
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন