একদিন টাকি ভ্রমণ

সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়


যেখানে যাই অন্তত একটা করে ছবি তুলি আজকাল

মুহূর্তদের গায়ে জাপটে থাকা বাতাস

ছবির ভেতর ছুটে আসে যেন...

আসলে এসবও এক ছুতো।

যে শূন্যতা গিলে খেতে চায়

ক্যামেরাবন্দী করে তাদের পাঠাব ভাবি কতবার 

তোমার ঠিকানায়…


তখন মাঝনদীতে,

ইছামতী কাঁসাই বিদ্যাধরী ঘিরে ছুটছে যেন

দামাল ছেলে আর চুলগুলো

এলোমেলো করে বলছে 'টুকি'।

মাছরাঙা দ্বীপ, বাংলাদেশ, কেয়ার জঙ্গল

কুয়াশামাখা আবছা দুখান নৌকা ভেসে উঠছে মাছের মতো।

চর পড়েছে আশেপাশে

কত ছবি ধরে রাখা যায় না আরো গভীর হতে গিয়ে।

জলের নীচে শব্দ ভেসে ওঠে ।

এক একটা মুখ, 

বোবা আয়নার মতো চিহ্নিত করে জীবনমৃত্যু।


হয়ত মা বাবা এলে ভালো লাগত আরো।

ভয়ে বন্ধ করা চোখ

অনাবিল চিৎকার

বাক্যহীন হতে হতে ক্রমশ ঢেউ ঢুকে 

পড়ছে যেন খালের ভেতর

শিরা উপশিরায় শিরশির করে শীতলতা।

ডুবতে ডুবতে গলা বুজে আসে।

শব্দেরা লাঙল চালায়

দুলে ওঠে সবুজ ফসল।


গোলপাতার জঙ্গল, ভেঙে পড়া রাজবাড়ি, ঠাকুরদালান

তবুও খুঁজে পাইনি নবছর আগের 

পুরোনো সেই গ্রাম।

খেজুরের তাজা রস

পাটালির গন্ধ আর কতবেলমাখা...

ফসল কাটার পর যে জমি দিয়ে হেঁটে গেছি তখন

এখন পাকা রাস্তায় হোঁচট খাই বড়ো।

এ মসৃনতা তছনছ করে দাবার সাজানো ছক।


নদীর কাছে আসি। চেয়ে থাকে বুনো পাখি

ঘোলা জলে ডুব দিয়ে যায় 

কত ফেরিয়ালা বাড়ি ফেরে

মাঝিদের কাজ ফুরোয় না যেন

ডিঙিগুলো জ্বলে ওঠে এক এক করে।

একটা ছবি ভেসে আসে।

ক্যামেরা তুলতে তুলতে দেখি

তুমিও কেমন চেয়ে আছো সূর্যাস্ত দেখবে বলে!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন