বিন্তিপিসির মান্থলি টিকিট
অর্পিতা বন্দোপাধ্যায়

ভাইপোর মান্থলি টিকিট নিয়ে বিন্তি পিসি ট্রেনে ছেপেছেন। ট্রেন হৃদয়পুর ছাড়িয়ে মধ্যমগ্রামে ঢুকেছে। চেকার টিকিট চাইল। সত্তর বছরের পিসি মৌজ করে পান ছিবোচ্ছিলেন চোখ বুঁজে। চোখ খুলে টিকিটটা ঝোলার ভেতর থেকে বের করে চেকারের হাতে দিতেই চেকার ভ্রু কুঁচকে পিসির দিকে তাকালো। বলল-- আপনার নাম কী?
পিসি টিকিটের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বললেন-- উতি নেহা আছে।
চেকার-- ঠিকানা কী আপনার?
পিসি-- উতি নেহা আছে।
চেকার-- বয়স কতো আপনার?
পিসি-- উতি নেহা আছে।
চেকার-- লেখা থাক আর না থাক আপনার বলতে সমস্যা কী?
পিসি হঠাৎ থাবা মেরে চেকারের হাত থেকে মান্থলি টিকিটটা কেড়ে নিয়ে চিৎকার করে বললেন-- বারবার কচ্ছি সব উতি নেহা আছে তবু আমারে জ্বালায় খাচ্ছে! পড়ে নিতে পারছনা? এত মুখ্য হয়ে চাকরি পেলে কি করে বাপু কে জানে!
গজর গজর করতে করতে পিসি গন্তব্যে নেমে গেলেন। চেকার কী যেন একটা বলতে যাচ্ছিল, পিসি খেঁকিয়ে উঠলেন-- চোপ! জাল সার্টিফিকেট দেহায় চাকরি পাইছ? মুখ্য কোথাকার।
ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে চলে গেল।
পিসি ঝোলার ভেতর টিকিটটা পুরতে পুরতে বললেন-- হতভাগা! ন্যাহাপড়া জাননা কন্ডাক্টারি করতে আইছ!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন